ঢাকা , শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

শস্য চুক্তির মেয়াদ আর বাড়াবে না রাশিয়া

রুশ বাহিনী ইউক্রেনে বিশেষ অভিযান শুরুর পর থেকে কৃষ্ণ সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে ইউক্রেনের গুদামগুলোতে আটকা পড়েছিল লাখ লাখ টন গম, ভুট্টা ও তেলবীজ।

আটকে পড়া এই গম-ভুট্টা ছাড়ের জন্য জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় গত বছর আগস্টে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় সমঝোতা চুক্তি করেছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন। তারপর এ পর্যন্ত কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে সেই চুক্তির মেয়াদ। আগামী ১৭ জুলাই মেয়াদ শেষ হবে এই চুক্তির।

কিন্তু মস্কো আর সেই মেয়াদ বাড়াতে রাজি নয় বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের মুখপাত্র ও প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভ। রুশ দৈনিক ইজভেস্তিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পেসকভ বলেন, ‘এই চুক্তির পেছনে আমাদের কিছু শর্ত ছিল। দুঃখজনক হলেও সত্য— সে সবের কোনোটিই মানা হয়নি। ভবিষ্যতে কী হবে— তা এখন বলা খুবই কঠিন; তবে আমরা বলতে পারি— মস্কো আর এই চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে আগ্রহী নয়। আমরা অনেক ভদ্রতা দেখিয়েছি, অনেক ছাড় দিয়েছি…কিন্তু আর নয়।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনের বন্দর ও জাহাজ চলাচলের পথে মাইন পেতে রাখা হয়েছিল। মস্কো কিংবা কিয়েভ—কোন পক্ষ এই কাজটি করেছিল— তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়, কারণ উভয়পক্ষই এই ইস্যুতে পরস্পরের ওপর দোষ চাপিয়েছে।

যুদ্ধের কারণে একদিকে ইউক্রেনের গুদামগুলোতে আটকা পড়ে লাখ লাখ টন গম, ভুট্টা, ও সূর্যমুখীর বীজ—অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে হু হু করে বাড়তে থাকে খাদ্যশস্য ও ভোজ্য তেলের দাম। এই পরিস্থিতিতে ২০২২ সালের আগস্টে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে ইউক্রেনের শর্ত ছিল— কৃষ্ণ সাগরের জাহাজ চলাচলের পথ থেকে সব মাইন অপসারণ করতে হবে এবং শস্যবাহী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে নিরাপত্তা দিতে হবে।

অন্যদিকে রাশিয়ার শর্ত ছিল, ইউরোপের ধনী দেশগুলোর পাশাপাশি এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দরিদ্র দেশগুলোকেও সরবরাহ করতে হবে খাদ্যশস্য।

কিন্তু চুক্তি সম্পাদনের পর দেখা যায়, ইউক্রেনের মোট গমের আশি শতাংশেরও বেশি নিয়ে গেছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। এশিয়া ও আফ্রিকার অধিকাংশ দেশ এই সরবরাহ থেকে কোনো খাদ্যশস্য পায়নি।

এই ব্যাপারটিতে যে রাশিয়া খুবই ক্ষুব্ধ— তা গত কয়েক মাস ধরেই জানান দিচ্ছে মস্কো। সম্প্রতি আফ্রিকান নেতাদের সঙ্গেও এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘ইউক্রেনের শস্য বিশ্ববাজারে পৌঁছেছে ঠিকই, কিন্তু আফ্রিকার দরিদ্র অনাহারী লোকজনের তাতে কোনো উপকার হয়নি।’

সূত্র : আরটি


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই-আগস্টে শহীদদের স্মরণে মহম্মদপুরে বিএনপির মৌন মিছিল

error: Content is protected !!

শস্য চুক্তির মেয়াদ আর বাড়াবে না রাশিয়া

আপডেট টাইম : ১১:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ জুন ২০২৩
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

রুশ বাহিনী ইউক্রেনে বিশেষ অভিযান শুরুর পর থেকে কৃষ্ণ সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে ইউক্রেনের গুদামগুলোতে আটকা পড়েছিল লাখ লাখ টন গম, ভুট্টা ও তেলবীজ।

আটকে পড়া এই গম-ভুট্টা ছাড়ের জন্য জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় গত বছর আগস্টে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় সমঝোতা চুক্তি করেছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন। তারপর এ পর্যন্ত কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে সেই চুক্তির মেয়াদ। আগামী ১৭ জুলাই মেয়াদ শেষ হবে এই চুক্তির।

কিন্তু মস্কো আর সেই মেয়াদ বাড়াতে রাজি নয় বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের মুখপাত্র ও প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভ। রুশ দৈনিক ইজভেস্তিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পেসকভ বলেন, ‘এই চুক্তির পেছনে আমাদের কিছু শর্ত ছিল। দুঃখজনক হলেও সত্য— সে সবের কোনোটিই মানা হয়নি। ভবিষ্যতে কী হবে— তা এখন বলা খুবই কঠিন; তবে আমরা বলতে পারি— মস্কো আর এই চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে আগ্রহী নয়। আমরা অনেক ভদ্রতা দেখিয়েছি, অনেক ছাড় দিয়েছি…কিন্তু আর নয়।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনের বন্দর ও জাহাজ চলাচলের পথে মাইন পেতে রাখা হয়েছিল। মস্কো কিংবা কিয়েভ—কোন পক্ষ এই কাজটি করেছিল— তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়, কারণ উভয়পক্ষই এই ইস্যুতে পরস্পরের ওপর দোষ চাপিয়েছে।

যুদ্ধের কারণে একদিকে ইউক্রেনের গুদামগুলোতে আটকা পড়ে লাখ লাখ টন গম, ভুট্টা, ও সূর্যমুখীর বীজ—অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে হু হু করে বাড়তে থাকে খাদ্যশস্য ও ভোজ্য তেলের দাম। এই পরিস্থিতিতে ২০২২ সালের আগস্টে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে ইউক্রেনের শর্ত ছিল— কৃষ্ণ সাগরের জাহাজ চলাচলের পথ থেকে সব মাইন অপসারণ করতে হবে এবং শস্যবাহী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে নিরাপত্তা দিতে হবে।

অন্যদিকে রাশিয়ার শর্ত ছিল, ইউরোপের ধনী দেশগুলোর পাশাপাশি এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দরিদ্র দেশগুলোকেও সরবরাহ করতে হবে খাদ্যশস্য।

কিন্তু চুক্তি সম্পাদনের পর দেখা যায়, ইউক্রেনের মোট গমের আশি শতাংশেরও বেশি নিয়ে গেছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। এশিয়া ও আফ্রিকার অধিকাংশ দেশ এই সরবরাহ থেকে কোনো খাদ্যশস্য পায়নি।

এই ব্যাপারটিতে যে রাশিয়া খুবই ক্ষুব্ধ— তা গত কয়েক মাস ধরেই জানান দিচ্ছে মস্কো। সম্প্রতি আফ্রিকান নেতাদের সঙ্গেও এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘ইউক্রেনের শস্য বিশ্ববাজারে পৌঁছেছে ঠিকই, কিন্তু আফ্রিকার দরিদ্র অনাহারী লোকজনের তাতে কোনো উপকার হয়নি।’

সূত্র : আরটি


প্রিন্ট