ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ওয়ারিশ সনদ আনতে গিয়ে চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের হামলার শিকার হয়েছেন এক বৃদ্ধ। ভোট না দেওয়ার অপরাধে রবিবার (১১ জুন) উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সোনা মিয়ার হাতে এ সহিংসতার শিকার হন কলিমাঝি গ্রামের মোঃ ওবায়দুর রহমান (৬০)। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বোয়ালমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যাক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীর অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, দুপুর একটার দিকে বৃদ্ধ ওবায়দুর রহমান নিজের ওয়ারিশ সনদ আনার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যান। এ সময় চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সোনা মিয়া তার পরিচয় জানতে চান। ওবায়দুর রহমান তার গ্রাম কলিমাঝি বলতেই চেয়ারম্যান তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেন এবং ওবায়দুর রহমান সহ গ্রামটি সম্বন্ধে অশ্লীল গালিগালাজ করতে থাকেন।
ওবায়দুরকে উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ঐ গ্রামের কোন লোক আমাকে ভোট দেয়নি। তোরাও আমাকে ভোট দিসনি। এখন কেন কাজের জন্য আমার কাছে এসেছিস। বৃদ্ধ ওবায়দুর রহমানের এ কথার প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান সোনা মিয়া তাকে চর-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার ৫/৬ জন সহযোগী লোহার রড, বাটাম দিয়ে ওবায়দুর রহমানকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন।
এসময় বৃদ্ধ ওবায়দুর রহমানের আর্তচিৎকারে আশপাশের অনেক লোকজন জড়ো হয়ে গেলে চেয়ারম্যান ঘটনা স্থল ত্যাগ করে চলে যান।
পরে খবর পেয়ে ভুক্তভোগীর আত্মীয়-স্বজন তাকে মারাত্মক আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ অমানবিক ঘটনায় কলিমাঝি গ্রাম সহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানাগেছে।
মোঃ আলিনুর শেখ নামে একজন প্রত্যাক্ষদর্শী বলেন, চেয়ারম্যান সোনা মিয়া পূর্ব আক্রোশ বশত বৃদ্ধ ওবায়দুর রহমানকে নির্মমভাবে মারধর করেছে। পরিষদ কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা কোন নাগরিকের সঙ্গে তিনি এমন আচরণ করতে পারেননা। এ অন্যায়ের বিচার হওয়া উচিৎ।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সোনা মিয়ার মুঠো ফোনে (০১৭১৫৯১০১৪৫) কল করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আঃওহাব ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যান প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র ছাড়া সনদ দিতে না চাইলে ওবায়দুর রহমান তার সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এ সময় চেয়ারম্যানের লোকজনের সঙ্গে ওবায়দুরের ধাক্কা-ধাক্কী হলে তিনি আহত হন। পরে ওবায়দুর রহমান ফোন করে কলিমাঝি এলাকার বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরিষদ চত্বরে জড়ো করলে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ প্রেক্ষিতে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দায়ে তিনজনকে আটক করে। এ ঘটনায় যে কোন পক্ষ লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ওসি আঃ ওহাব।
- আরও দেখুন ভিডিওতেঃ
প্রিন্ট