সেই লক্ষ্যে প্রকল্পের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইন বসানোর কাজ বাকি আছে মাত্র আট কিলোমিটার।
গতকাল কেরানীগঞ্জ থেকে যশোরের নড়াইল পর্যন্ত প্রকল্পের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আগামী বছরের জুনের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এখনো প্রকল্পের সময় বাকি আছে। তবু ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত অংশটি আগামী সেপ্টেম্বরেই চালু করে দেওয়া হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘প্রথমে হয়তো একসঙ্গে সব স্টেশন চালু হবে না। আমরা মেট্রো রেলের মতো প্রথমে শুধু দুই প্রান্তে ট্রেন চালাতে পারি। এর আগে এই লাইনে ট্রেনের একটা ট্রায়াল হবে। আমরা আশা করছি, আগামী আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে ভাঙ্গা থেকে ঢাকা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হবে।’
পদ্মা সেতু রেল সংযোগের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ আছে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। সব শেষ ১ মে প্রকাশিত প্রকল্পের অগ্রগতির প্রতিবেদনে তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পুরো প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৮০.৬২ শতাংশ। এর মধ্যে মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের অগ্রগতি ৯৪ শতাংশ। এই অংশে ৪২ কিলোমিটার রেললাইন আছে, যা বসানো হয়ে গেছে। চারটি নতুন রেলস্টেশনের ৭৫ শতাংশ কাজ হয়েছে। ঢাকা-মাওয়া অংশের অগ্রগতি হয়েছে ৭৫.৫০ শতাংশ। এই অংশে ৩৯.৬৩ কিলোমিটার রেললাইন বসবে। এর মধ্যে মাত্র ২৫ কিলোমিটার রেললাইনের কাজ শেষ হয়েছে। চারটি স্টেশনের নির্মাণকাজের ৩৮ শতাংশ শেষ হয়েছে।
ভাঙ্গা-যশোর অংশের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭০ শতাংশ। এই অংশে মাটির বাঁধ (এমব্যাংকমেন্ট) নির্মাণ হবে ৮৩.১৬ কিলোমিটার। এর অগ্রগতি হয়েছে ৯৬.১২ শতাংশ। নতুন রেলস্টেশন হবে ৯টি। এর মধ্যে সাতটির নির্মাণকাজ চলছে। এই কাজের অগ্রগতি ১৯ শতাংশ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নড়াইলের মধুমতী নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে এই রেলপথের সবচেয়ে বড় সেতুটি। এটির দৈর্ঘ্য ১.২ কিলোমিটার। নদীটির জনবসতি ঘিরে নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বড় বাঁধ।
প্রকল্পের নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার মেইন লাইন নির্মাণ করা হবে। সঙ্গে লুপ ও সাইডিং লাইন মিলিয়ে মোট ২১৫ কিলোমিটার রেলওয়ে ট্র্যাক নির্মাণ করা হবে। ২৩.৩৭ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ১.৯৮ র্যাম্প, ৫৯টি বড় সেতু, ২৭২টি কালভার্ট আন্ডারপাস, ২৯টি লেভেলক্রসিং নির্মাণ করা হয়েছে।
এদিকে ১৪টি নতুন স্টেশন নির্মাণ এবং ছয়টি বিদ্যমান স্টেশনের উন্নয়ন ও অন্যান্য অবকাঠামোর নির্মাণকাজ চলছে। ২০টি স্টেশনে টেলিযোগাযোগসহ সিস্টেম সিগন্যালিং ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে।
প্রিন্ট