ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বর্তমান সরকার ব্যর্থ হলে ছাত্র জনতার বিপ্লব ব্যর্থ হয়ে যাবেঃ -মাহবুবুল হাসান ভূঁইয়া পিংকু Logo লালপুরে বিএনপির মতবিনিময় ও কর্মীসভা অনুষ্ঠিত Logo ফরিদপুরে ৭ই ডিসেম্বর কর্মশালা সফল করার লক্ষ্যে ফরিদপুর বিভাগীয় বিএনপির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত Logo তানোরে সার পচার, বিতরণে অনিয়ম, হট্টগোল ও মারপিট Logo ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় কওমী মাদরাসা ঐক্য পরিষদের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত Logo বাংলাদেশের নৃত্য দল ভারতে সাংস্কৃতিক উৎসবে অংশগ্রহণ করে Logo সুন্দরবন প্রেসক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন Logo বাগাতিপাড়ায় স্ত্রীর পরকীয়ার অভিযোগে স্বামীর আত্মহত্যা ! Logo কালুখালীতে জামায়াতের কর্মী সমাবেশ Logo বাগাতিপাড়ায় জাটকা মাছ জব্দ করে দন্ড
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ভারতীয় আরো ২০ ইঞ্জিন পাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে

বাংলাদেশ রেলওয়েকে অনুদান হিসেবে আরো ২০টি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) দিচ্ছে ভারত। আজ বিকালে বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে ব্রড গেজ ইঞ্জিনগুলো হস্তান্তর করবে ভারত। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিকাল ৪টায় লোকোমোটিভ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি দুই দেশের রেলমন্ত্রী যোগ দেবেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশের দর্শনা এবং ভারতের গেদে অংশে হস্তান্তর অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ ও ভারতের দুই রেলমন্ত্রীর মধ্যে গত বছরের ১ জুলাই অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ রেলওয়েকে ২০টি ব্রড গেজ লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। একই বছরের ২৯ থেকে ৩১ আগস্ট ভারতের নয়াদিল্লির রেলভবনে অনুষ্ঠিত ইন্টার গভর্নমেন্ট রেলওয়ে মিটিংয়ে (আইজিআরএম) বাংলাদেশ রেলওয়েকে ২০টি ব্রড গেজ লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে দেয়ার বিষয়ে সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এর আগে ২০২০ সালেও ভারত থেকে ১০টি ব্রড গেজ লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে পেয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আগেরবার পাওয়া লোকোমোটিভগুলো পশ্চিমাঞ্চলের রুটে চলাচল করছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্য বলছে, বর্তমানে সংস্থাটির বহরে থাকা মোট ইঞ্জিনের সংখ্যা ৩০৭। এর মধ্যে ১৯৭টি ইঞ্জিন মিটার গেজ, যার সিংহভাগই চলাচল করছে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে। অন্যদিকে পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করছে ১১০টি ব্রড গেজ ইঞ্জিন। বর্তমানে প্রায় ৪০০ ট্রেন পরিচালনা করছে রেলওয়ে। এসব ট্রেনের বিপরীতে সচল ইঞ্জিনের সংখ্যা মাত্র ২৭১। স্বভাবতই ইঞ্জিনস্বল্পতায় ভুগছে সংস্থাটি, যার কারণে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক পরিচালনা কার্যক্রম।

অন্যদিকে বহরে থাকা ইঞ্জিনগুলোর মধ্যে সিংহভাগেরই শেষ হয়েছে অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল। রেল ইঞ্জিনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ২০ বছর নির্ধারিত থাকলেও অধিকাংশ ইঞ্জিনের বয়স পেরিয়ে গেছে ৪০ বছর। পুরনো এসব ইঞ্জিনে কাঙ্ক্ষিত গতিতে চলতে পারছে না সিংহভাগ ট্রেন, কমেছে ইঞ্জিনের কর্মঘণ্টা।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পুরনো ইঞ্জিনগুলো ঘন ঘন মেরামতের জন্য কারখানায় নিতে হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকৌশল (লোকোমোটিভ) শাখার তথ্য বলছে, মেরামতের জন্য ইঞ্জিন কারখানায় নেয়া স্বাভাবিক কার্যক্রমেরই অংশ। তবে এর একটা নির্ধারিত মাত্রা রয়েছে। রেলওয়ের নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী, প্রতিদিন মোট ইঞ্জিনের ৮০ শতাংশ ব্যবহারের জন্য রাখতে হবে। বাকি ২০ শতাংশ থাকবে সার্ভিসিংয়ে। বর্তমানে মেরামত ও ব্যবহার উপযোগী ইঞ্জিনের অনুপাত নির্ধারিত মানদণ্ডের চেয়ে বেশি থাকছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় ব্রড গেজ ইঞ্জিনগুলো রেলের পরিচালন ব্যবস্থায় গতি আনবে বলে মনে করছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

রেলওয়েতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনুদান হিসেবে বাংলাদেশকে ২০টি ডিজেলচালিত ব্রড গেজ ইঞ্জিন গত বছরের ডিসেম্বরেই বুঝে নেয়ার অনুরোধ জানায় ভারত। কিন্তু প্রক্রিয়াগত কিছু জটিলতায় এতদিন সেগুলো দেশে আসেনি। অবশেষে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ২০টি লোকোমোটিভ বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করছে ভারত।

ভারত যে ২০টি ইঞ্জিন অনুদান হিসেবে দিচ্ছে, এর আগে সেগুলো ভারতে গিয়ে দেখে এসেছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা। রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে সাত সদস্যের একটি পরিদর্শক দলকে গত বছরের ৩০ নভেম্বর অনুদানের লোকোমোটিভগুলো দেখতে ভারতে পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। পরিদর্শক দলটি সেসব দেখে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল। তাদের সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, তারা ভারতে ৩৪টি লোকোমোটিভ দেখে এসেছেন। তার মধ্য থেকে কারিগরি বিষয়গুলো মূল্যায়ন করে ২০টি লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে নেয়ার জন্য নির্বাচন করে এসেছেন।

রেলের একজন কর্মকর্তা জানান, ভারত বাংলাদেশকে যে ২০টি ইঞ্জিন দিচ্ছে, সেগুলো ২০১৭-১৮ সালের দিকে তৈরি করা। ইঞ্জিনগুলো নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রেলপথ, স্টেশন, সিগন্যাল ব্যবস্থাসহ সামগ্রিক রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হবে কিনা তা বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সম্পাদনের পর ব্রড গেজ ইঞ্জিনগুলোর সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের বিস্তারিত (স্পেসিফিকেশন) যাচাই, আমদানি ছাড়পত্র গ্রহণ, কাস্টমস ডিউটি, ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দেশে আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বর্তমান সরকার ব্যর্থ হলে ছাত্র জনতার বিপ্লব ব্যর্থ হয়ে যাবেঃ -মাহবুবুল হাসান ভূঁইয়া পিংকু

error: Content is protected !!

ভারতীয় আরো ২০ ইঞ্জিন পাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে

আপডেট টাইম : ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক :

বাংলাদেশ রেলওয়েকে অনুদান হিসেবে আরো ২০টি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) দিচ্ছে ভারত। আজ বিকালে বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে ব্রড গেজ ইঞ্জিনগুলো হস্তান্তর করবে ভারত। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিকাল ৪টায় লোকোমোটিভ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি দুই দেশের রেলমন্ত্রী যোগ দেবেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশের দর্শনা এবং ভারতের গেদে অংশে হস্তান্তর অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ ও ভারতের দুই রেলমন্ত্রীর মধ্যে গত বছরের ১ জুলাই অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ রেলওয়েকে ২০টি ব্রড গেজ লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। একই বছরের ২৯ থেকে ৩১ আগস্ট ভারতের নয়াদিল্লির রেলভবনে অনুষ্ঠিত ইন্টার গভর্নমেন্ট রেলওয়ে মিটিংয়ে (আইজিআরএম) বাংলাদেশ রেলওয়েকে ২০টি ব্রড গেজ লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে দেয়ার বিষয়ে সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এর আগে ২০২০ সালেও ভারত থেকে ১০টি ব্রড গেজ লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে পেয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আগেরবার পাওয়া লোকোমোটিভগুলো পশ্চিমাঞ্চলের রুটে চলাচল করছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্য বলছে, বর্তমানে সংস্থাটির বহরে থাকা মোট ইঞ্জিনের সংখ্যা ৩০৭। এর মধ্যে ১৯৭টি ইঞ্জিন মিটার গেজ, যার সিংহভাগই চলাচল করছে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে। অন্যদিকে পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করছে ১১০টি ব্রড গেজ ইঞ্জিন। বর্তমানে প্রায় ৪০০ ট্রেন পরিচালনা করছে রেলওয়ে। এসব ট্রেনের বিপরীতে সচল ইঞ্জিনের সংখ্যা মাত্র ২৭১। স্বভাবতই ইঞ্জিনস্বল্পতায় ভুগছে সংস্থাটি, যার কারণে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক পরিচালনা কার্যক্রম।

অন্যদিকে বহরে থাকা ইঞ্জিনগুলোর মধ্যে সিংহভাগেরই শেষ হয়েছে অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল। রেল ইঞ্জিনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ২০ বছর নির্ধারিত থাকলেও অধিকাংশ ইঞ্জিনের বয়স পেরিয়ে গেছে ৪০ বছর। পুরনো এসব ইঞ্জিনে কাঙ্ক্ষিত গতিতে চলতে পারছে না সিংহভাগ ট্রেন, কমেছে ইঞ্জিনের কর্মঘণ্টা।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পুরনো ইঞ্জিনগুলো ঘন ঘন মেরামতের জন্য কারখানায় নিতে হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকৌশল (লোকোমোটিভ) শাখার তথ্য বলছে, মেরামতের জন্য ইঞ্জিন কারখানায় নেয়া স্বাভাবিক কার্যক্রমেরই অংশ। তবে এর একটা নির্ধারিত মাত্রা রয়েছে। রেলওয়ের নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী, প্রতিদিন মোট ইঞ্জিনের ৮০ শতাংশ ব্যবহারের জন্য রাখতে হবে। বাকি ২০ শতাংশ থাকবে সার্ভিসিংয়ে। বর্তমানে মেরামত ও ব্যবহার উপযোগী ইঞ্জিনের অনুপাত নির্ধারিত মানদণ্ডের চেয়ে বেশি থাকছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় ব্রড গেজ ইঞ্জিনগুলো রেলের পরিচালন ব্যবস্থায় গতি আনবে বলে মনে করছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

রেলওয়েতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনুদান হিসেবে বাংলাদেশকে ২০টি ডিজেলচালিত ব্রড গেজ ইঞ্জিন গত বছরের ডিসেম্বরেই বুঝে নেয়ার অনুরোধ জানায় ভারত। কিন্তু প্রক্রিয়াগত কিছু জটিলতায় এতদিন সেগুলো দেশে আসেনি। অবশেষে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ২০টি লোকোমোটিভ বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করছে ভারত।

ভারত যে ২০টি ইঞ্জিন অনুদান হিসেবে দিচ্ছে, এর আগে সেগুলো ভারতে গিয়ে দেখে এসেছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা। রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে সাত সদস্যের একটি পরিদর্শক দলকে গত বছরের ৩০ নভেম্বর অনুদানের লোকোমোটিভগুলো দেখতে ভারতে পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। পরিদর্শক দলটি সেসব দেখে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল। তাদের সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, তারা ভারতে ৩৪টি লোকোমোটিভ দেখে এসেছেন। তার মধ্য থেকে কারিগরি বিষয়গুলো মূল্যায়ন করে ২০টি লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে নেয়ার জন্য নির্বাচন করে এসেছেন।

রেলের একজন কর্মকর্তা জানান, ভারত বাংলাদেশকে যে ২০টি ইঞ্জিন দিচ্ছে, সেগুলো ২০১৭-১৮ সালের দিকে তৈরি করা। ইঞ্জিনগুলো নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রেলপথ, স্টেশন, সিগন্যাল ব্যবস্থাসহ সামগ্রিক রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হবে কিনা তা বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সম্পাদনের পর ব্রড গেজ ইঞ্জিনগুলোর সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের বিস্তারিত (স্পেসিফিকেশন) যাচাই, আমদানি ছাড়পত্র গ্রহণ, কাস্টমস ডিউটি, ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দেশে আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা।


প্রিন্ট