ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

প্রধান আসামি প্রেমিকার বাবা গ্রেপ্তার

নড়াইলে পুলিশের তৎপরতায় ১৫ ঘন্টার মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার্থী সিরাজ হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন

নড়াইল লোহাগড়া উপজেলার চর দৌলতপুর গ্রামের সিরাজ শেখ (১৬) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। নিহত সিরাজ শেখ চর দৌলতপুর গ্রামের কৃষক ইকরাম শেখের ছোট ছেলে। সে চর দৌলতপুর সরস্বতী একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।

শনিবার (৬ মে) রাতে সিরাজের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার কল আসে। সে ফোনের অপর প্রান্তের কারও সঙ্গে কথা বলে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। পরের দিন পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও সে আর বাড়িতে ফেরেনি। ইংরেজি ২য় পত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় সিরাজের সহপাঠীরা তার বাড়িতে খোঁজ নেয়। পরিবারের লোকজনসহ প্রতিবেশীরা নিখোঁজের দিন থেকে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও কোনো খোঁজ পায়নি।

৯ মে পরীক্ষার্থীর বাবা লোহাগড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সাধারণ ডায়েরী রুজুর পর পুলিশসহ জেলার গোয়েন্দা টিম আন্তরিকভাবে চেষ্টা করতে থাকে। নিখোঁজের পর বুধবার (১০ মে) দুপুরে লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের দক্ষিণ লংকারচর গ্রামের শওকত হোসেন মিরুর আমবাগান থেকে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় একটি অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে নিখোঁজ সিরাজের মৃতদেহ সনাক্ত করে তার পিতা ইকরাম শেখ। মৃতদেহ উদ্ধারের সংবাদ প্রাপ্তির সাথে সাথে নড়াইল জেলার পুলিশ সুপার মোসাঃ সাদিরা খাতুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেপ্তার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধারের জন্য জেলা পুলিশের একাধিক টিমকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন।

এ ঘটনায় আজ ১২ মে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। মামলা রুজুর মাত্র ১৫ ঘণ্টার মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ দোলন মিয়ার নেতৃত্বে লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাসির উদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) আব্দুল্লাহ আল মামুন, তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নি:) মো: মিজানুর রহমান শেখসহ অন্যান্য পুলিশ এর সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উন্মোচনসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রধান আসামি ও তার ০৩ (তিন) জন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় । এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি রক্তমাখা ছোরা, রক্তমাখা একটি কোদালের আছাড়ি, একটি রক্তমাখা পলিথিন ও হত্যাকাণ্ডের সময় আসামির পরিহিত একটি টি-শার্ট উদ্ধার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন- সবুর শেখ (৫২), পিতা-মৃত ইস্রাফিল শেখ, শাহিনা বেগম (৪৭), স্বামী-সবুর শেখ, জাহিদুল শেখ (২০), পিতা- সবুর শেখ, ইয়াসমিন খানম (১৬), পিতা- সবুর শেখ। সকলেই লোহাগড়া উপজেলার চরদৌলতপুর গ্রামের একই পরিবারের সদস্য।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল আসামি সবুর শেখ ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

এবার ২১ দিনের মধ্যে জবাব দিতে আদানিকে সমন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

error: Content is protected !!

প্রধান আসামি প্রেমিকার বাবা গ্রেপ্তার

নড়াইলে পুলিশের তৎপরতায় ১৫ ঘন্টার মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার্থী সিরাজ হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন

আপডেট টাইম : ০৮:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩
খন্দকার সাইফুল্লা আল মাহমুদ, নড়াইল প্রতিনিধি :

নড়াইল লোহাগড়া উপজেলার চর দৌলতপুর গ্রামের সিরাজ শেখ (১৬) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। নিহত সিরাজ শেখ চর দৌলতপুর গ্রামের কৃষক ইকরাম শেখের ছোট ছেলে। সে চর দৌলতপুর সরস্বতী একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।

শনিবার (৬ মে) রাতে সিরাজের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার কল আসে। সে ফোনের অপর প্রান্তের কারও সঙ্গে কথা বলে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। পরের দিন পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও সে আর বাড়িতে ফেরেনি। ইংরেজি ২য় পত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় সিরাজের সহপাঠীরা তার বাড়িতে খোঁজ নেয়। পরিবারের লোকজনসহ প্রতিবেশীরা নিখোঁজের দিন থেকে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও কোনো খোঁজ পায়নি।

৯ মে পরীক্ষার্থীর বাবা লোহাগড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সাধারণ ডায়েরী রুজুর পর পুলিশসহ জেলার গোয়েন্দা টিম আন্তরিকভাবে চেষ্টা করতে থাকে। নিখোঁজের পর বুধবার (১০ মে) দুপুরে লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের দক্ষিণ লংকারচর গ্রামের শওকত হোসেন মিরুর আমবাগান থেকে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় একটি অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে নিখোঁজ সিরাজের মৃতদেহ সনাক্ত করে তার পিতা ইকরাম শেখ। মৃতদেহ উদ্ধারের সংবাদ প্রাপ্তির সাথে সাথে নড়াইল জেলার পুলিশ সুপার মোসাঃ সাদিরা খাতুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেপ্তার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধারের জন্য জেলা পুলিশের একাধিক টিমকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন।

এ ঘটনায় আজ ১২ মে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। মামলা রুজুর মাত্র ১৫ ঘণ্টার মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ দোলন মিয়ার নেতৃত্বে লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাসির উদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) আব্দুল্লাহ আল মামুন, তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নি:) মো: মিজানুর রহমান শেখসহ অন্যান্য পুলিশ এর সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উন্মোচনসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রধান আসামি ও তার ০৩ (তিন) জন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় । এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি রক্তমাখা ছোরা, রক্তমাখা একটি কোদালের আছাড়ি, একটি রক্তমাখা পলিথিন ও হত্যাকাণ্ডের সময় আসামির পরিহিত একটি টি-শার্ট উদ্ধার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন- সবুর শেখ (৫২), পিতা-মৃত ইস্রাফিল শেখ, শাহিনা বেগম (৪৭), স্বামী-সবুর শেখ, জাহিদুল শেখ (২০), পিতা- সবুর শেখ, ইয়াসমিন খানম (১৬), পিতা- সবুর শেখ। সকলেই লোহাগড়া উপজেলার চরদৌলতপুর গ্রামের একই পরিবারের সদস্য।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল আসামি সবুর শেখ ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।


প্রিন্ট