ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন Logo দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের ফুলবাড়ী উপজেলায় মতবিনিময় সভা Logo তানোরে যাতায়াতের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ Logo মাগুরাতে এসএমসি’র পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo রূপগঞ্জে সাংবাদিকের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন Logo অর্থনৈতিক শুমারি উপলক্ষে স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত Logo প্রত্যন্ত গ্রামে নারী ফুটবল প্রীতি ম্যাচ উপভোগ করলেন হাজারো দর্শক Logo বাঘায় উপজেলা শুমারি স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত Logo কুষ্টিয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা Logo ফরিদপুরে দুই দিনব্যাপী তথ্য মেলা অনুষ্ঠিত
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

পাংশা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা পরস্পর বিরোধী অবস্থানেঃ প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা

পাংশা সরকারি কলেজ, রাজবাড়ী

রাজবাড়ী জেলার পাংশা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরীর সাথে কলেজ শিক্ষকদের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। শিক্ষক কর্মচারীদের এসিআর প্রদান ও কলেজ তহবিলে রক্ষিত দুই কোটি চব্বিশ লাখ টাকা ফেরতের দাবীতে অধ্যক্ষ ও শিক্ষকবৃন্দ পরস্পর বিরোধী অবস্থানে রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক—কর্মচারীরা আন্দোলনে নামার পাশাপাশি অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন। গত দু’দিন ধরে শিক্ষকরা কলেজ মিলনায়তনে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। বৈঠকে অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরীর বিরুদ্ধে ঐক্যমত পোষণ করে বক্তব্য দেন শিক্ষকরা।
পাংশা সরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম শরিফুল মোরশেদ রনজু বলেন— অধ্যক্ষের দুর্নীতি, আর্থিক অব্যবস্থাপনা, শিক্ষকদের সঙ্গে অ—সৌজন্যমূলক আচরণসহ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে নানা কর্মসূচি নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরী বলেন, শিক্ষক—কর্মচারীরা তার কাছে কোনো এসিআর ফাইল জমা দেন নাই। ২৩ নভেম্বর সকালে শিক্ষক পরিষদ কর্তৃক সকল শিক্ষকের সভা আহবান করা হয়। সভায় শিক্ষকদের দাবী ছিল— বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন—এসিআর সকলের সামনে নম্বর দিতে হবে। সেই সাথে পাংশা সরকারি কলেজ জাতীয়করণ (০৮/১০/২০১৫) এরপর গৃহীত বেতন ভাতাদি কলেজ তহবিলে রক্ষিত দুই কোটি চব্বিশ লাখ টাকা শিক্ষক—কর্মচারীদের ফেরত দেওয়ার দাবী করে। অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরী বলেন, এসিআর প্রতিবেদন স্ব—স্ব ব্যক্তির সন্মুখে নম্বর দেওয়ার সরকারি বিধান নেই। ২০১৮ সালে পাংশা সরকারি কলেজের শিক্ষক—কর্মচারীদের সরকারি বেতন ভাতাদি বকেয়া হিসেবে ৮/১০/২০১৫ থেকে অর্থ বরাদ্দ হয়। যাহা কলেজ থেকে গৃহীত বেতন ভাতাদি ফেরত দিয়ে বকেয়া গ্রহন করেন শিক্ষক—কর্মচারীরা। একই ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান থেকে এবং সরকারি বেতনভাতাদির অর্থ দুইবার বেতনভাতাদি উত্তোলন করার সুযোগ নাই।
অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরী বলেন, ২৩ নভেম্বর দুপুরে পাংশার ইউএনও অফিসে অনলাইন ক্লাস সংক্রান্ত সভায় অংশগ্রহণ শেষে কলেজ অফিস কক্ষে ফিরলে তার নিকট থেকে দুই কোটি ২৪ লাখ টাকার চেক দাবী করেন শিক্ষকরা। সরকারি অর্থ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে চেক দিতে অসম্মতি জানালে কলেজের কয়েকজন শিক্ষকমিলে অধ্যক্ষের উপর মারমুখী হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। এ সময় বাক—বিতন্ডায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক চৌধুরী পাংশা মডেল থানার ওসিকে মোবাইল ফোনে অবহিত করলে ওসি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের একটি টিম কলেজ ক্যাম্পাসে পাঠান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয়।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে কলেজের সকল বিভাগের শিক্ষকরা উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষক মিলনায়তনে বৈঠকে মিলিত হন। অপরদিকে অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরী নিজ অফিস কক্ষে প্রশাসনিক কার্যক্রম দেখভাল করেন।
এছাড়া, কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকবৃন্দ জানান, নিয়োগ শর্ত মোতাবেক পিএফ’র কর্তিত ১০% টাকা তারা পেয়েছেন। কিন্তু কলেজ কর্তৃক দেয় বাকি ১০% টাকা তারা অদ্যবধি পাননি। ইতোমধ্যে অবসরপ্রাপ্ত ২৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৬জন ইন্তেকাল করেছেন। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকরা গত ১১ নভেম্বর তাদের প্রাপ্য টাকা প্রাপ্তির জন্য অধ্যক্ষের নিকট লিখিতভাবে আবেদন করেছেন।
পাংশা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরীর সাথে শিক্ষকদের উদ্ভূত পরিস্থিতির সুরাহা না হলে যে কোনো মুহুর্তে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি কলেজের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ ১৯৬৯ সালের জুলাই মাসে পাংশা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর রাজবাড়ী—২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল হাকিমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর কলেজটি সরকারিকরণ হয়।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

error: Content is protected !!

পাংশা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা পরস্পর বিরোধী অবস্থানেঃ প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা

আপডেট টাইম : ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ নভেম্বর ২০২০
মোক্তার হোসেন, পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধিঃ :

রাজবাড়ী জেলার পাংশা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরীর সাথে কলেজ শিক্ষকদের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। শিক্ষক কর্মচারীদের এসিআর প্রদান ও কলেজ তহবিলে রক্ষিত দুই কোটি চব্বিশ লাখ টাকা ফেরতের দাবীতে অধ্যক্ষ ও শিক্ষকবৃন্দ পরস্পর বিরোধী অবস্থানে রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক—কর্মচারীরা আন্দোলনে নামার পাশাপাশি অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন। গত দু’দিন ধরে শিক্ষকরা কলেজ মিলনায়তনে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। বৈঠকে অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরীর বিরুদ্ধে ঐক্যমত পোষণ করে বক্তব্য দেন শিক্ষকরা।
পাংশা সরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম শরিফুল মোরশেদ রনজু বলেন— অধ্যক্ষের দুর্নীতি, আর্থিক অব্যবস্থাপনা, শিক্ষকদের সঙ্গে অ—সৌজন্যমূলক আচরণসহ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে নানা কর্মসূচি নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরী বলেন, শিক্ষক—কর্মচারীরা তার কাছে কোনো এসিআর ফাইল জমা দেন নাই। ২৩ নভেম্বর সকালে শিক্ষক পরিষদ কর্তৃক সকল শিক্ষকের সভা আহবান করা হয়। সভায় শিক্ষকদের দাবী ছিল— বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন—এসিআর সকলের সামনে নম্বর দিতে হবে। সেই সাথে পাংশা সরকারি কলেজ জাতীয়করণ (০৮/১০/২০১৫) এরপর গৃহীত বেতন ভাতাদি কলেজ তহবিলে রক্ষিত দুই কোটি চব্বিশ লাখ টাকা শিক্ষক—কর্মচারীদের ফেরত দেওয়ার দাবী করে। অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরী বলেন, এসিআর প্রতিবেদন স্ব—স্ব ব্যক্তির সন্মুখে নম্বর দেওয়ার সরকারি বিধান নেই। ২০১৮ সালে পাংশা সরকারি কলেজের শিক্ষক—কর্মচারীদের সরকারি বেতন ভাতাদি বকেয়া হিসেবে ৮/১০/২০১৫ থেকে অর্থ বরাদ্দ হয়। যাহা কলেজ থেকে গৃহীত বেতন ভাতাদি ফেরত দিয়ে বকেয়া গ্রহন করেন শিক্ষক—কর্মচারীরা। একই ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান থেকে এবং সরকারি বেতনভাতাদির অর্থ দুইবার বেতনভাতাদি উত্তোলন করার সুযোগ নাই।
অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরী বলেন, ২৩ নভেম্বর দুপুরে পাংশার ইউএনও অফিসে অনলাইন ক্লাস সংক্রান্ত সভায় অংশগ্রহণ শেষে কলেজ অফিস কক্ষে ফিরলে তার নিকট থেকে দুই কোটি ২৪ লাখ টাকার চেক দাবী করেন শিক্ষকরা। সরকারি অর্থ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে চেক দিতে অসম্মতি জানালে কলেজের কয়েকজন শিক্ষকমিলে অধ্যক্ষের উপর মারমুখী হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। এ সময় বাক—বিতন্ডায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক চৌধুরী পাংশা মডেল থানার ওসিকে মোবাইল ফোনে অবহিত করলে ওসি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের একটি টিম কলেজ ক্যাম্পাসে পাঠান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয়।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে কলেজের সকল বিভাগের শিক্ষকরা উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষক মিলনায়তনে বৈঠকে মিলিত হন। অপরদিকে অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরী নিজ অফিস কক্ষে প্রশাসনিক কার্যক্রম দেখভাল করেন।
এছাড়া, কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকবৃন্দ জানান, নিয়োগ শর্ত মোতাবেক পিএফ’র কর্তিত ১০% টাকা তারা পেয়েছেন। কিন্তু কলেজ কর্তৃক দেয় বাকি ১০% টাকা তারা অদ্যবধি পাননি। ইতোমধ্যে অবসরপ্রাপ্ত ২৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৬জন ইন্তেকাল করেছেন। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকরা গত ১১ নভেম্বর তাদের প্রাপ্য টাকা প্রাপ্তির জন্য অধ্যক্ষের নিকট লিখিতভাবে আবেদন করেছেন।
পাংশা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরীর সাথে শিক্ষকদের উদ্ভূত পরিস্থিতির সুরাহা না হলে যে কোনো মুহুর্তে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি কলেজের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ ১৯৬৯ সালের জুলাই মাসে পাংশা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর রাজবাড়ী—২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল হাকিমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর কলেজটি সরকারিকরণ হয়।


প্রিন্ট