ঘুনেধরা এ সমাজে হরহামেশা ঘটে চলা বিবাহ বিচ্ছেদ, স্ত্রী বা স্বামীর পরকিয়া, অথবা পারিবারিক ঠুনকো ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংসার ভাঙ্গা এখন তুচ্ছতাচ্ছিল্য একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ধরণের ঘটনা এখন এ সমাজের গা সয়া হয়ে উঠেছে, কিছু কিছু ঘটনা মনে দাগ কেটে যায়, যখন একজন অসহায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সহায় সম্বলহীন হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে থানা কোর্টকাচারী দারস্থ হয়ে ঘুরছে।
স্থানীয় থানা গুলোতে আসলে এ সকল বিষয়ে বিশেষ কিছু করার থাকেনা, বড় জোর গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বাদি বিবাদের অবিভাবকদের সমন্বয়ে মিলমিশ করিয়ে দেওয়া, নতুবা মামলা রুজু করে আসামি গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করা, বিচারের দায় দায়িত্ব বিচারকের, তাও বেশ দীর্ঘ মেয়াদী প্রক্রিয়ার হয়ে থাকে, তাতে বাদি বিবাদী উভয়েরই দফারফা সারা।
আজ এমন একজনের কথা লিখতে হচ্ছে যে একসময়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছিলো না, ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আজ অন্ধত্বে পরিনত হয়েছে। নগরকান্দা উপজেলার শহীদনগর ইউনিয়নে ছাগলদী মধ্যে পাড়ার শহিদুজ্জামান(সুজাত) দৃষ্টি ভালো থাকার সময়ে বিবাহ করে মাদারীপুর জেলার অন্তগত শিবচরের থানার হাওলাদার কান্দি গ্রামের আঃ করিম হাওলাদার এর মেয়ে সাফিয়া আক্তার (৩৫) কে।
বিয়ের তিন বছর পর থেকেই স্বামী সুজাতের দৃষ্টি শক্তি হারাতে থাকে ইতিমধ্যে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয় তাদের ঘরে, দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেতে জায়গাজমি সহ নিজের প্রায় সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়ে, তার মধ্যেও কখনও স্ত্রী সন্তানকে অর্থিক অভাব অনটন ছায়া পড়তে দেয় নাই। অথচ ১৬ বছর পরে তাকে ফেলে রক্ষিত টাকা পয়সা ও অলংকার নিয়ে প্রায় ৯ মাস যাবত বাবার বাড়িতে চলে যায়। ছেলের পরিবারের মুরব্বি পর্যায়ের ব্যাক্তিরা একধিকবার সালিশ দরবারেও বিহিত না হওয়ার থানা কোর্ট কাচারিতে মামলা করতে হয়েছে প্রতিবন্ধী সুজাতকে। স্ত্রী কন্যাকে ফিরে পাওয়ার আশা নিয়ে এখন কোর্টকাচারীতে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে বেচে আছে। জানিনা বিচারে কি হবে! একেই বলে বুঝি বিচারের বানী নাকি নিভৃতে কাঁদে।
প্রিন্ট