ঢাকা , শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ফুটপাতে- শপিং মলে বেড়েছে কেনা কাটা

ঈদের কেনা কাটায় গ্রামীণ অর্থনীতি এখন অনেকটায় চাঙ্গা ভাব।  দেশের বাইরে থাকা প্রবাসীর পাঠানো টাকা আর সরকারী কর্মকর্তাদের বেতন বোনাস পাওয়ায় ঈদের কেনা কাটায় গ্রামীণ অর্থনীতি এখন অনেকটায় চাঙ্গা ভাব। এছাড়াও  চাকুরিজীবিরা ছুটিতে গ্রামে এসে কেনা কাটা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ইদ্রিশ আলী ২লক্ষ টাকা পাঠিয়েছেন আত্নীয় স্বজন ও প্রতিবেশিদের ঈদের কেনা কাটার জন্য । তার (ইদ্রিশ আলী) ভাইরা ভাই আমানুল হক আমান জানান, গত কয়েক দিন আগে টাকা পাঠিয়েছেন। সেই টাকা ইতিমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। যা দিয়ে তারা কেনা কাটা করেছেন।
৪২ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন সিঙ্গাপুর প্রবাসি বাকিউল মিঞা। তার (বাকিউল মিঞা) পিতা রেজাউল করিম মিঞা জানান, এই টাকা দিয়ে পরিবারের সবার জন্য পোষাক,জুতা সেন্ডেলসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনেছেন। দুবাই প্রবাসী শাহিনুর রহমান নিজ গ্রাম বাজুবাঘায় এসেছেন সপ্তাহখানেক আগে।
তিনি জানান,পরিবার-আত্নীয় স্বজনদের টাকা দিয়েছেন ঈদের কেনা কাটা করার জন্য। প্রভাষক সানোয়ার হোসেন বলেন, ঈদের আগে বেতন পেয়েছেন বলেই আরাম আয়েশে ভাল মন্দ দেখে শুনে কেনা-কাটা করতে পেরেছেন। প্রজাপতি ফ্যাশনে কেনা কাটা করছিলেন শাহদৌলা সরকারি কলেজের প্রভাষক আব্দুল হানিফ।  শপিংমলে কেনা কাটা করছিলেন তিনি।
সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে দুই মেয়ের জন্য সালোয়ার (ফ্রক), পাজামা ও  ওড়না দেখছিলেন ভ্যান চালক আব্দুল মজিদ। তিনি বলেন, চাল-তেল-ডাল সব কিছুর দাম বেশি। প্রতিদিনের আয়ে  সংসার খরচের হিসাব মেলাতে পারিনি।  তাই সস্তা দামের পোষাক ছাড়া উপায় কি?  নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে আসা নাঈম পর্দান, বাঘা বাজার এলাকায় ফুটপাতে সস্তা দামের পোষাক সালোয়ার (ফ্রক),পাজামা ও  ওড়না বিক্রি করছিলেন। দাম-১টা  নিলে ৫০ টাকা আর ৩টা নিলে ১০০ টাকা। তার হাক ডাকে পছন্দের পোষাক দেখতে শুরু করেন স্বল্প আয়ের মানুষ। কিনলেন অনেকেই।  দামে সস্তা হলেও কম পূঁজির মানুষ একটার বেশি নিতে পারেননি। একসাথে ৩টা কিনেছেন কম সংখ্যক মানুষ।
 তাদের একজন জহুরা খাতুন। ১০০ টাকায়  ৩টা কিনেছেন তিনি। জহুরা বলেন, বেসরকারি একটা অফিসে চাকুরি করি। আমার হিসাবের টাকা। যে বেতন পাই, তা দিয়ে সংসারের খরচ, ধার শোধ করতেই প্রায় শেষ। গত  বছর ঈদে আমি কিছু কিনি নাই। এইবার মেয়ের জন্য  কিনলাম।
  বৃহস্পতিবার (২০-০৪-২০২৩)  কথা হলে ফুটপাতে বিক্রেতা নাঈম পর্দান জানান, বিক্রি ভালো হচ্ছে। গত ৩দিন আগে দেড় হাজার পোষাক নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্রি করছেন। আর আড়াই শত পোষাক বিক্রি করলেই শেষ হয়ে যাবে। গড়ে প্রতিদিন  ২০০ থেকে ৩০০টি বিক্রি করেছেন।
এত কম দামে পোষাক বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে নাঈম পর্দান বলেন ঢাকার পুরাণ বাজার থেকে কম দামে কিনে কম দামেই বিক্রি করেন। তারা কিভাবে দেন জানিনা।
ঈদ সামনে রেখে ভ্যানে করে পাড়া গাঁয়ে ছোট- বড় সকলের ঈদের নতুন পোশাক বিক্রি আলাল উদ্দীন। স্বল্প আয়ের মানুষগুলো কিনছেন তার পোষাক।  ফুটপাতের বিক্রেতারা  বলছেন,শেষ সময়ে এসে বিক্রি বেড়েছে।
উপজেলার প্রধান প্রধান বস্ত্রবিতান, কসমেটিকস ও জুতা-সেন্ডেলের মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, শেষ মুহুর্তের কেনাকাটা এখন চাঙাভাব। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের নারি-পুরুষের কেনা বেড়েছে। ক্রেতারা জানান, গত বছরের তুলনায়  সব জিনিসের দাম এবার বেশি। সাধ্যের মধ্যে কেনা কাটা করেছেন।
 ব্যবসায়লা বলছেন  গত বছরের তুলনায় এবছর বেচা কেনা বাড়েনি। মাজেদা প্লাজার লেডিস কর্নার এন্ড ফ্যাশন গ্যালারীর স্বত্তাধিকারি আজমুল কামাল বলেন, ১৫ রমজানের পর থেকে এবার ক্রেতারা মার্কেটে আসতে শুরু করেছেন। ‘গ্যালারী এন্ড বেবী ক্লাব’এর-আসলাম হোসেন জানান, শেষের দিকে বিক্রি বাড়লেও এবার লাভের অংশ থেকে কর্মচারির বেতন দেওয়া মুশকিল হবে।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

ফুটপাতে- শপিং মলে বেড়েছে কেনা কাটা

আপডেট টাইম : ১২:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৩
আব্দুল হামিদ মিঞা, বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি :
ঈদের কেনা কাটায় গ্রামীণ অর্থনীতি এখন অনেকটায় চাঙ্গা ভাব।  দেশের বাইরে থাকা প্রবাসীর পাঠানো টাকা আর সরকারী কর্মকর্তাদের বেতন বোনাস পাওয়ায় ঈদের কেনা কাটায় গ্রামীণ অর্থনীতি এখন অনেকটায় চাঙ্গা ভাব। এছাড়াও  চাকুরিজীবিরা ছুটিতে গ্রামে এসে কেনা কাটা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ইদ্রিশ আলী ২লক্ষ টাকা পাঠিয়েছেন আত্নীয় স্বজন ও প্রতিবেশিদের ঈদের কেনা কাটার জন্য । তার (ইদ্রিশ আলী) ভাইরা ভাই আমানুল হক আমান জানান, গত কয়েক দিন আগে টাকা পাঠিয়েছেন। সেই টাকা ইতিমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। যা দিয়ে তারা কেনা কাটা করেছেন।
৪২ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন সিঙ্গাপুর প্রবাসি বাকিউল মিঞা। তার (বাকিউল মিঞা) পিতা রেজাউল করিম মিঞা জানান, এই টাকা দিয়ে পরিবারের সবার জন্য পোষাক,জুতা সেন্ডেলসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনেছেন। দুবাই প্রবাসী শাহিনুর রহমান নিজ গ্রাম বাজুবাঘায় এসেছেন সপ্তাহখানেক আগে।
তিনি জানান,পরিবার-আত্নীয় স্বজনদের টাকা দিয়েছেন ঈদের কেনা কাটা করার জন্য। প্রভাষক সানোয়ার হোসেন বলেন, ঈদের আগে বেতন পেয়েছেন বলেই আরাম আয়েশে ভাল মন্দ দেখে শুনে কেনা-কাটা করতে পেরেছেন। প্রজাপতি ফ্যাশনে কেনা কাটা করছিলেন শাহদৌলা সরকারি কলেজের প্রভাষক আব্দুল হানিফ।  শপিংমলে কেনা কাটা করছিলেন তিনি।
সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে দুই মেয়ের জন্য সালোয়ার (ফ্রক), পাজামা ও  ওড়না দেখছিলেন ভ্যান চালক আব্দুল মজিদ। তিনি বলেন, চাল-তেল-ডাল সব কিছুর দাম বেশি। প্রতিদিনের আয়ে  সংসার খরচের হিসাব মেলাতে পারিনি।  তাই সস্তা দামের পোষাক ছাড়া উপায় কি?  নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে আসা নাঈম পর্দান, বাঘা বাজার এলাকায় ফুটপাতে সস্তা দামের পোষাক সালোয়ার (ফ্রক),পাজামা ও  ওড়না বিক্রি করছিলেন। দাম-১টা  নিলে ৫০ টাকা আর ৩টা নিলে ১০০ টাকা। তার হাক ডাকে পছন্দের পোষাক দেখতে শুরু করেন স্বল্প আয়ের মানুষ। কিনলেন অনেকেই।  দামে সস্তা হলেও কম পূঁজির মানুষ একটার বেশি নিতে পারেননি। একসাথে ৩টা কিনেছেন কম সংখ্যক মানুষ।
 তাদের একজন জহুরা খাতুন। ১০০ টাকায়  ৩টা কিনেছেন তিনি। জহুরা বলেন, বেসরকারি একটা অফিসে চাকুরি করি। আমার হিসাবের টাকা। যে বেতন পাই, তা দিয়ে সংসারের খরচ, ধার শোধ করতেই প্রায় শেষ। গত  বছর ঈদে আমি কিছু কিনি নাই। এইবার মেয়ের জন্য  কিনলাম।
  বৃহস্পতিবার (২০-০৪-২০২৩)  কথা হলে ফুটপাতে বিক্রেতা নাঈম পর্দান জানান, বিক্রি ভালো হচ্ছে। গত ৩দিন আগে দেড় হাজার পোষাক নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্রি করছেন। আর আড়াই শত পোষাক বিক্রি করলেই শেষ হয়ে যাবে। গড়ে প্রতিদিন  ২০০ থেকে ৩০০টি বিক্রি করেছেন।
এত কম দামে পোষাক বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে নাঈম পর্দান বলেন ঢাকার পুরাণ বাজার থেকে কম দামে কিনে কম দামেই বিক্রি করেন। তারা কিভাবে দেন জানিনা।
ঈদ সামনে রেখে ভ্যানে করে পাড়া গাঁয়ে ছোট- বড় সকলের ঈদের নতুন পোশাক বিক্রি আলাল উদ্দীন। স্বল্প আয়ের মানুষগুলো কিনছেন তার পোষাক।  ফুটপাতের বিক্রেতারা  বলছেন,শেষ সময়ে এসে বিক্রি বেড়েছে।
উপজেলার প্রধান প্রধান বস্ত্রবিতান, কসমেটিকস ও জুতা-সেন্ডেলের মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, শেষ মুহুর্তের কেনাকাটা এখন চাঙাভাব। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের নারি-পুরুষের কেনা বেড়েছে। ক্রেতারা জানান, গত বছরের তুলনায়  সব জিনিসের দাম এবার বেশি। সাধ্যের মধ্যে কেনা কাটা করেছেন।
 ব্যবসায়লা বলছেন  গত বছরের তুলনায় এবছর বেচা কেনা বাড়েনি। মাজেদা প্লাজার লেডিস কর্নার এন্ড ফ্যাশন গ্যালারীর স্বত্তাধিকারি আজমুল কামাল বলেন, ১৫ রমজানের পর থেকে এবার ক্রেতারা মার্কেটে আসতে শুরু করেছেন। ‘গ্যালারী এন্ড বেবী ক্লাব’এর-আসলাম হোসেন জানান, শেষের দিকে বিক্রি বাড়লেও এবার লাভের অংশ থেকে কর্মচারির বেতন দেওয়া মুশকিল হবে।

প্রিন্ট