ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মাগুরায় মামলার ভয় দেখিয়ে প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে ঘুষ গ্রহনের দায়ে এসআই অভিজিত রাজিব ক্লোজড

মাগুরা শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালের মালিককে মামলার ভয় দেখিয়ে ৭০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগে সদর থানার এসআই অভিজিত রাজিব কে থানা থেকে প্রত্যাহার করে মাগুরা পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মাগুরা জেলার পুলিশ সুপার মো: মসিউদ্দৌলা।
সদর থানার ওসিও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।জানাগেছে, গত ১০ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ মাগুরা জাহান প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক ডা: মাসুদুল হক একজন গর্ভবতীর সিজার অপারেশন করেন । পরবর্তীতে এই প্রসুতীর সদ্য ভুমিষ্ট শিশুর শাররীক অবস্থার অবনিতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফার্ট করা হয়। ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে পাঠানো হয়।কিন্তু ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি করার পরপরই শিশুটির মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনা জানতে পেরে মাগুরা সদর থানার এসআই অভিজিত রাজিব গত ১১ এপ্রিল গভীর রাতে জাহান প্রাইভেট ক্লিনিক হাসপাতালে এসে স্টাফদের গালাগালি দিয়ে হাসপাতাল মালিক ডা: মাসুদুল হককে খুঁজতে থাকেন। তাকে না পেয়ে তার ড্রাইভারকে কোন প্রকার লিখিত অভিযোগ বা গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যান।পরবর্তীতে তিনি মোবাইল ফোনে হাসপাতালের মালিক ড: মাসুদুল হককে বলেন, আপনার ভুল অপারেশনে বাচ্চাটি মারা গেছে। তারা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এখন মামলা হবে। তবে আপনি যদি ৫ লাখ টাকা দেন তো আমরা মামলা না নিয়ে অভিযোগকারীদের বাড়ী পাঠিয়ে দিতে পারি।
ডা: মাসুদুল হক এসআই অভিজিত রাজিব এর কথায় ৫ লাখ টাকা ঘুস দিতে রাজী না হলে তিনি নানান প্রকার ভয়ভীতি দেখান। একপর্যায়ে দামদর করে ৭০ হাজার টাকায় দফারফা করেন। পরবর্তীতে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে ডা: মাসুদুল হকের ড্রাইভারকে ছেড়ে দেন।ডা: মাসুদুল হক এ ঘটনাটি পুলিশের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তিনি বিষয়টি মাগুরার পুলিশ সুপার মশিউদ্দৌলাকে জানান।ইতিমধ্যে বিষয়টি সারা শহরে প্রচার হয়ে যায়।
মাগুরা জেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত এনএসআই কর্মকর্তা ও সাংবাদিক মহলেও ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে অভিযুক্ত এসআই অভিজিত রাজিবকে মাগুরা সদর থানা থেকে মাগুরা পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনেরও প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।এ প্রসংগে ডঃ মাসুদুল হক বলেন, পুলিশ জনগনের বন্ধু। তারা জনগনের নিরাপত্তা বিধান করবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্ত এসআই অভিজিত রাজিব সেই দায়িত্ব পালন না করে নিজেই জনগনের জন্য আতংক হয়ে উঠেছেন। যা গোটা পুলিশ বাহিনীর ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করেছে। এই এসআই গভীর রাতে ফোন করে মামলার ভয় দেখিয়ে আমার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা ঘুস নিয়েছেন।
আমার ড্রাইভারকে কোন প্রকার অভিযোগ বা গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করেছেন। এমন কি আমার ভবনের চাইনিজ রেস্তুরার নারী কর্মকর্তাকেও মোবাইল ফোনে উত্তাক্ত করেছেন। আমি বাধ্য হয়ে বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন মহলকে জানিয়েছি। আমি এই এসআই এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।এ বিষয়ে মাগুরা জেলার পুলিশ সুপার মো: মশিউদ্দৌলা জানান, অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই এসআ্ই অভিজিত রাজিবের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে বাকি ব্যবস্থা নেওয়া হবে

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

মাগুরায় মামলার ভয় দেখিয়ে প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে ঘুষ গ্রহনের দায়ে এসআই অভিজিত রাজিব ক্লোজড

আপডেট টাইম : ১২:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ এপ্রিল ২০২৩
মোঃ রনি আহমেদ রাজু, মাগুরা জেলা প্রতিনিধিঃ :
মাগুরা শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালের মালিককে মামলার ভয় দেখিয়ে ৭০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগে সদর থানার এসআই অভিজিত রাজিব কে থানা থেকে প্রত্যাহার করে মাগুরা পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মাগুরা জেলার পুলিশ সুপার মো: মসিউদ্দৌলা।
সদর থানার ওসিও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।জানাগেছে, গত ১০ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ মাগুরা জাহান প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক ডা: মাসুদুল হক একজন গর্ভবতীর সিজার অপারেশন করেন । পরবর্তীতে এই প্রসুতীর সদ্য ভুমিষ্ট শিশুর শাররীক অবস্থার অবনিতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফার্ট করা হয়। ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে পাঠানো হয়।কিন্তু ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি করার পরপরই শিশুটির মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনা জানতে পেরে মাগুরা সদর থানার এসআই অভিজিত রাজিব গত ১১ এপ্রিল গভীর রাতে জাহান প্রাইভেট ক্লিনিক হাসপাতালে এসে স্টাফদের গালাগালি দিয়ে হাসপাতাল মালিক ডা: মাসুদুল হককে খুঁজতে থাকেন। তাকে না পেয়ে তার ড্রাইভারকে কোন প্রকার লিখিত অভিযোগ বা গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যান।পরবর্তীতে তিনি মোবাইল ফোনে হাসপাতালের মালিক ড: মাসুদুল হককে বলেন, আপনার ভুল অপারেশনে বাচ্চাটি মারা গেছে। তারা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এখন মামলা হবে। তবে আপনি যদি ৫ লাখ টাকা দেন তো আমরা মামলা না নিয়ে অভিযোগকারীদের বাড়ী পাঠিয়ে দিতে পারি।
ডা: মাসুদুল হক এসআই অভিজিত রাজিব এর কথায় ৫ লাখ টাকা ঘুস দিতে রাজী না হলে তিনি নানান প্রকার ভয়ভীতি দেখান। একপর্যায়ে দামদর করে ৭০ হাজার টাকায় দফারফা করেন। পরবর্তীতে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে ডা: মাসুদুল হকের ড্রাইভারকে ছেড়ে দেন।ডা: মাসুদুল হক এ ঘটনাটি পুলিশের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তিনি বিষয়টি মাগুরার পুলিশ সুপার মশিউদ্দৌলাকে জানান।ইতিমধ্যে বিষয়টি সারা শহরে প্রচার হয়ে যায়।
মাগুরা জেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত এনএসআই কর্মকর্তা ও সাংবাদিক মহলেও ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে অভিযুক্ত এসআই অভিজিত রাজিবকে মাগুরা সদর থানা থেকে মাগুরা পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনেরও প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।এ প্রসংগে ডঃ মাসুদুল হক বলেন, পুলিশ জনগনের বন্ধু। তারা জনগনের নিরাপত্তা বিধান করবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্ত এসআই অভিজিত রাজিব সেই দায়িত্ব পালন না করে নিজেই জনগনের জন্য আতংক হয়ে উঠেছেন। যা গোটা পুলিশ বাহিনীর ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করেছে। এই এসআই গভীর রাতে ফোন করে মামলার ভয় দেখিয়ে আমার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা ঘুস নিয়েছেন।
আমার ড্রাইভারকে কোন প্রকার অভিযোগ বা গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করেছেন। এমন কি আমার ভবনের চাইনিজ রেস্তুরার নারী কর্মকর্তাকেও মোবাইল ফোনে উত্তাক্ত করেছেন। আমি বাধ্য হয়ে বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন মহলকে জানিয়েছি। আমি এই এসআই এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।এ বিষয়ে মাগুরা জেলার পুলিশ সুপার মো: মশিউদ্দৌলা জানান, অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই এসআ্ই অভিজিত রাজিবের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে বাকি ব্যবস্থা নেওয়া হবে

প্রিন্ট