ঢাকা , শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo আগামীকালের পর থেকে যদি কারো ঘরে দেশীয় অস্ত্র পাওয়া যায়, তার অবস্থা হবে ভয়াবহঃ -সহকারী পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান শাকিল Logo ফরিদপুর সদর উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত, আহত ৫ Logo সমাজসেবার বিশেষ অবদানে সম্মাননা স্মারক পেলেন দৌলতদিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান রহমান মন্ডল Logo তানোরে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর সমাপনী Logo খোকসায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে এমপি আব্দুর রউফ Logo লালপুরে প্রেমিককে কুপিয়ে জখম, প্রেমিকা আটক Logo গোপালগঞ্জে যাত্রীবাহী মাহেন্দ্র ও ট্রলির সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ৪ Logo নগরকান্দায় প্রবীণ গ্রাম্য ডাক্তারকে পিটিয়ে আহত করলো কথিত সাংবাদিক Logo চরভদ্রাসনে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী মেলা Logo তানোরে সার্বজনীন পেনশন স্কিম গ্রহণে ব্যাপক সাড়া
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ফরিদপুরের ঐতিহ্য সংরক্ষণের দাবিতে সড়কে তরুণ সমাজ

বাইশ রশি জমিদার বাড়ি সংরক্ষণসহ পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণার দাবি

  • ফরিদপুর অফিসঃ
  • আপডেট টাইম : ০৮:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মার্চ ২০২১
  • ২৭০ বার পঠিত

ফরিদপুরের সদরপুরে অবস্থিত বাইশরশি জমিদার বাড়ী প্রত্মতত্ত¡ অধিদপ্তরের অধিনে নিয়ে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং বাইশরশি জমিদার বড়িটিকে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করার দাবিতে রাস্তায় নেমেছে ফরিদপুরের তরুণ সমাজ।

মঙ্গলবার এ দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করা হয় সদরপুর ও ফরিদপুরে। ৩৪টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে ‘বাইশরশি জমিদার বাড়ি রক্ষা ও সংরক্ষণ আন্দোলন’-এর অংশ হিসেবে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

‘ফরিদপুরের সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যপ্রেমি সংগঠন’-এর ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
‘বাইশ রশি জমিদার বাড়ি, সবাই মিলে রক্ষা করি’- শত শত কন্ঠে এ শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত পরিবেশে মঙ্গলবার প্রায় দিনব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করে ফরিদপুরের তরুণ সমাজ। এতে কয়েক শত তরুণ অংশ নেয়।

মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে সদরপুরে পুখরিয়া-সদরপুর সড়কের বাইশরশিতে জমিদার বাড়ির সামনের সড়কে প্রথমে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

এরপর আন্দোলনকারীরা জমিদার বাড়ির চত্ত¡রে ঢুকে মানব বলয় রচনা করে দীপ্ত কণ্ঠে শপথ নেয়, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে। আন্দোলন যতদিন চলবে, ততদিন রাস্তায় থাকবো। আন্দোলনের বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।’

বাইশরশি জমিদার বাড়ির সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে এ আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন সদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বাইশরশি জমিদার বাড়ী শুধু সদরপুরের নয় সারা দেশের একটি ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্য রক্ষা করতে যা যা প্রয়োজন তা আমরা করব।

তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং এ এলাকার সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সনের কাছে অনুরোধ জানাই আমাদের প্রাণের দাবির প্রতিসম্মান দেখিয়ে এ জমিদার বাড়ী রক্ষা করাসহ এ এলাকায় একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হোক।

সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ভাঙ্গা কে এম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোশায়েদ হোসেন ঢালী, বাইশ রশি উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এনামুল হক ফকির, কাশিয়ানীর ইয়ার আলী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম, ভাঙ্গা সিপিবির সদস্য প্রভাষ মালো, সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর সাবেক ব্যাক্তিগত সহকারি তৌহিদুর রহমান, কৃষক গোলাম হুসাইন প্রমুখ।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাইশরশি জমিদার বাড়ি সংরক্ষণপূর্বক পর্যটর কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান আন্দোলনের মুখপত্র সেপটোস ফোর এর সভাপতি হাওলাদার শামীম আহমেদ।

তিনি বলেন, এ ঐতিহ্য আজ একটি হিং¯্র থাবার মুখে পড়েছে। মাটি খুঁড়ে ৫০, ১০০ বছরের একটি পুতুল পাওয়া গেলে তা নিয়ে গবেষণা করেন প্রত্মতত্ত¡ বিভাগ। অথচ দুইশ বছরের পুরনো এই বাড়িটি রক্ষা না করে আজ বিক্রি করে দেওয়ার পায়তারা চলছে।

বাইশরশি জমিদার বাড়ির সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে আন্দোলনকারীরা সদরপুর উপজেরা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে ইউএনও পূরবী গোলদারের হাতে দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি তুলে দেন।

এরপর আন্দোলকারীরা দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে মুজিব সড়কে কিছু সময়ের জন্য মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন।
যে ৩৪টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে এ আন্দোলন পরিচালিত হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সেপটোস ফোর, ঘুরি-ফিরি ফরিদপুর, উৎস ফরিদপুর, বাংলা থিযেটার, উৎসর্গ পরিবার, ইউ কেয়ার, মানব কল্যাণ সমিতি, ফরিদপুর ফটোগ্রাফিক সোসাইটি প্রভৃতি ।

এদিকে গত সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে এ আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাতে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাভেলগ্রাম বাংলাদেশ, হিমাদ্রী ট্রাভেল, কানামাছি ভোঁ ভোঁ ও জাহাজী নামের চারটি ভ্রমণ ও পরিবেশবাদী সংগঠনের ১৬জন সদস্য বাইশরশি জমিদার বাড়িতে আসেন। তারা জমিদার বাড়ির বিভিন্ন ঘর পরিস্কার করেন এবং বাড়ির চত্ত¡রে মশাল প্রজ্জ্বলন করেন।

সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূরবী গোলদার বলেন, ওই সম্পত্তি ‘ক’ তালিকাভুক্ত অর্পিত সম্পত্তি। এটি এ অঞ্চলের জমিদারদের সর্বশেষ নিদর্শন। এটি বেহাত হয়ে গেলে এ এলাকায় বাইশরশি জমিদারদের কোন অস্তিত্ব থাকবে না।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আগামীকালের পর থেকে যদি কারো ঘরে দেশীয় অস্ত্র পাওয়া যায়, তার অবস্থা হবে ভয়াবহঃ -সহকারী পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান শাকিল

error: Content is protected !!

ফরিদপুরের ঐতিহ্য সংরক্ষণের দাবিতে সড়কে তরুণ সমাজ

বাইশ রশি জমিদার বাড়ি সংরক্ষণসহ পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণার দাবি

আপডেট টাইম : ০৮:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মার্চ ২০২১

ফরিদপুরের সদরপুরে অবস্থিত বাইশরশি জমিদার বাড়ী প্রত্মতত্ত¡ অধিদপ্তরের অধিনে নিয়ে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং বাইশরশি জমিদার বড়িটিকে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করার দাবিতে রাস্তায় নেমেছে ফরিদপুরের তরুণ সমাজ।

মঙ্গলবার এ দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করা হয় সদরপুর ও ফরিদপুরে। ৩৪টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে ‘বাইশরশি জমিদার বাড়ি রক্ষা ও সংরক্ষণ আন্দোলন’-এর অংশ হিসেবে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

‘ফরিদপুরের সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যপ্রেমি সংগঠন’-এর ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
‘বাইশ রশি জমিদার বাড়ি, সবাই মিলে রক্ষা করি’- শত শত কন্ঠে এ শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত পরিবেশে মঙ্গলবার প্রায় দিনব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করে ফরিদপুরের তরুণ সমাজ। এতে কয়েক শত তরুণ অংশ নেয়।

মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে সদরপুরে পুখরিয়া-সদরপুর সড়কের বাইশরশিতে জমিদার বাড়ির সামনের সড়কে প্রথমে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

এরপর আন্দোলনকারীরা জমিদার বাড়ির চত্ত¡রে ঢুকে মানব বলয় রচনা করে দীপ্ত কণ্ঠে শপথ নেয়, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে। আন্দোলন যতদিন চলবে, ততদিন রাস্তায় থাকবো। আন্দোলনের বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।’

বাইশরশি জমিদার বাড়ির সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে এ আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন সদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বাইশরশি জমিদার বাড়ী শুধু সদরপুরের নয় সারা দেশের একটি ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্য রক্ষা করতে যা যা প্রয়োজন তা আমরা করব।

তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং এ এলাকার সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সনের কাছে অনুরোধ জানাই আমাদের প্রাণের দাবির প্রতিসম্মান দেখিয়ে এ জমিদার বাড়ী রক্ষা করাসহ এ এলাকায় একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হোক।

সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ভাঙ্গা কে এম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোশায়েদ হোসেন ঢালী, বাইশ রশি উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এনামুল হক ফকির, কাশিয়ানীর ইয়ার আলী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম, ভাঙ্গা সিপিবির সদস্য প্রভাষ মালো, সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর সাবেক ব্যাক্তিগত সহকারি তৌহিদুর রহমান, কৃষক গোলাম হুসাইন প্রমুখ।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাইশরশি জমিদার বাড়ি সংরক্ষণপূর্বক পর্যটর কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান আন্দোলনের মুখপত্র সেপটোস ফোর এর সভাপতি হাওলাদার শামীম আহমেদ।

তিনি বলেন, এ ঐতিহ্য আজ একটি হিং¯্র থাবার মুখে পড়েছে। মাটি খুঁড়ে ৫০, ১০০ বছরের একটি পুতুল পাওয়া গেলে তা নিয়ে গবেষণা করেন প্রত্মতত্ত¡ বিভাগ। অথচ দুইশ বছরের পুরনো এই বাড়িটি রক্ষা না করে আজ বিক্রি করে দেওয়ার পায়তারা চলছে।

বাইশরশি জমিদার বাড়ির সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে আন্দোলনকারীরা সদরপুর উপজেরা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে ইউএনও পূরবী গোলদারের হাতে দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি তুলে দেন।

এরপর আন্দোলকারীরা দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে মুজিব সড়কে কিছু সময়ের জন্য মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন।
যে ৩৪টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে এ আন্দোলন পরিচালিত হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সেপটোস ফোর, ঘুরি-ফিরি ফরিদপুর, উৎস ফরিদপুর, বাংলা থিযেটার, উৎসর্গ পরিবার, ইউ কেয়ার, মানব কল্যাণ সমিতি, ফরিদপুর ফটোগ্রাফিক সোসাইটি প্রভৃতি ।

এদিকে গত সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে এ আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাতে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাভেলগ্রাম বাংলাদেশ, হিমাদ্রী ট্রাভেল, কানামাছি ভোঁ ভোঁ ও জাহাজী নামের চারটি ভ্রমণ ও পরিবেশবাদী সংগঠনের ১৬জন সদস্য বাইশরশি জমিদার বাড়িতে আসেন। তারা জমিদার বাড়ির বিভিন্ন ঘর পরিস্কার করেন এবং বাড়ির চত্ত¡রে মশাল প্রজ্জ্বলন করেন।

সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূরবী গোলদার বলেন, ওই সম্পত্তি ‘ক’ তালিকাভুক্ত অর্পিত সম্পত্তি। এটি এ অঞ্চলের জমিদারদের সর্বশেষ নিদর্শন। এটি বেহাত হয়ে গেলে এ এলাকায় বাইশরশি জমিদারদের কোন অস্তিত্ব থাকবে না।