বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে বিদ্যালযয়ের খেলার মাঠে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধনে সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল হক, আসাব উদ্দিন, আকমল হোসেন, শবনম মোস্তারী সহ অন্য শিক্ষকরা বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি ইতোমধ্যেই গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। প্রধান শিক্ষক ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। এছাড়াও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনও হয় না।
তারা আরও বলেন, বিদ্যালয়ের মালিকানাধীন দুটি দোকান বিক্রি করে ৯ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রধান শিক্ষক, যা প্রমাণিত। কিন্তু তার এমন সব দুর্নীতি প্রতিবাদ করায় শিক্ষকদেরকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। সেই হয়রানির অংশ হিসেবে সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল হক স্যারের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, যা সম্পূর্ণ প্রতিহিংসামূলক।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের নিয়মিত ক্লাস হয় না। আশপাশের স্কুলে বছরের শুরু থেকেই ক্লাস শুরু হলেও আমাদের এখানে হয়নি। আমাদের কথা শিক্ষকরা কর্ণপাত করেন না। আমরা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ চাই। এভাবে চলতে থাকলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান তলানিতে ঠেকে যাবে।
এসময় পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন শিক্ষকরা। দাবিগুলো হলো, সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল হকের বিরুদ্ধে দেওয়া অবৈধ কারণ দর্শানোর নোটিশ বাতিল করতে হবে। তদন্ত কমিটি কর্তৃক প্রধান শিক্ষকের বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রদানের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে। শিক্ষক-কর্মচারীর বাড়ি ভাড়া, উৎসব ভাতা ও চিকিৎসা ভাতার রেজুলেশনসহ নিয়মিত ভাতা প্রদানের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সরকার কর্তৃক শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টিউশন ফি এর হিসাব দিতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার সুষ্ঠু পরিবেশ দিতে হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল হক, আসাব উদ্দিন, আকমল হোসেন, বাবুল কুমার কর্মকার, শবনম মোস্তারী, গোলাপী রানি সরকার, শহিদুর রহমান, জিলাল উদ্দিন, আব্দুস শুকুর, কামাল হোসেন, সুজন আলী খান, ছাবিনা ইয়াসমিন ও জামাল হোসেনসহ বিদ্যালয়ের কর্মচারী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন অভিযোগগুলো সত্য নয় দাবি করে বলেন, তার বিরুদ্ধে এই মানববন্ধন সম্পূর্ণ প্রতিহিংসামূলক ও তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা। সমস্যা থাকলে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমাধান করা সম্ভব। কিন্তু শিক্ষার্থীদের উস্কানি দিয়ে, শিক্ষকদের জোর করে এবং ক্লাস ফাঁকি দিয়ে এভাবে মানববন্ধন করা সম্পূর্ণ বেআইনি ও সরকারবিরোধী। তিনি বিষয়টি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও ইউএনওসহ সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছেন বলে জানান।
প্রিন্ট