ঢাকা , বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo পঞ্চপল্লীতে দুই সহোদর হত্যার বিচারের দাবিতে মধুখালীতে বিক্ষোভ মিছিল, আহত-১৫ Logo জাতীয় অপরাজিতা পুরস্কার লাভ করেন নলছিটির নাজনীন আক্তার নিপা Logo তানোরে ময়নার স্মরণকালের সর্ববৃহত শোডাউন Logo নাটোরের সিংড়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলার চেয়ারম্যান হলেন দেলোয়ার হোসেন পাশা Logo চরভদ্রাশন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতিক বরাদ্দ Logo “আমরা আমতলীবাসী” সংগঠনের উদ্যোগে স্যালাইন, শরবত ও ঠান্ডা পানি বিতরণ Logo তীব্র তাপপ্রবাহে গোয়ালন্দে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট-ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা Logo বোয়ালমারীতে ৫ লাখ টাকার অবৈধ জাল পুড়িয়ে ধ্বংস Logo তীব্র তাপদাহে গোপালগঞ্জ পুলিশের মানবিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন Logo কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী বৃহৎ উপজেলা দৌলতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

অমর একুশ

ভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছর পার হলেও ১৩৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

-ছবি প্রতীকী।

মাতৃভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছর পার হলেও ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার ১৩৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তৈরি হয়নি শহীদ মিনার। এর ফলে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও ভাষা শহীদদের সম্পর্কে জানে না তরুন প্রজন্ম। আর যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে তা বছরের পর বছর পড়ে থাকে অযত্ন অবহেলায়।
আর যেসব প্রতিষ্ঠানে একবারেই নেই শহীদ মিনার সে সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থীর কথা নয় নাই বললাম। তাদের মনে পড়ে কি মাতৃভাষার ইতিহাসের কথা? তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এত বছরেও এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি বলে মনে করেন শুধিজনেরা।
জানা গেছে, বোয়ালমারী উপজেলায় ১০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৬টি, কলেজ ৬টি ও মাদরাসা ১৭ টিসহ মোট ১৫১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি কলেজ, ২৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৪টি মাদ্রাসা ও ৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার থাকলেও ৭১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। ফলে ৭১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করা হয় শুধুমাত্র জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে।
অপরদিকে আলফাডাঙ্গা উপজেলার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ২০টি, মাদরাসা ০৭টি, কলেজ ০৪টি ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৩টিসহ মোট ১০৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ০৪টি কলেজ, ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার থাকলেও ০৭টি মাদরাসার একটিতেও শহীদ মিনার নেই। মোট এ উপজেলায় ৬৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার।
এ কারণে এসব প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন থেকে বঞ্চিত থাকে। এনিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। আর যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে; তারমধ্যে কিছু শহীদ মিনার তা বছরের পর বছর পড়ে থাকে অরক্ষিত অবস্থায়। এসব শহীদ মিনারে কখনও গবাদি পশুর বিচরণ আবার কখনও বখাটেদের আড্ডাস্থলে পরিণত হতে দেখা যায়।
বোয়ালমারী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদ্য সাবেক কমান্ডার অধ্যাপক আব্দুর রশিদ বলেন, স্বাধীনতার ৫০বছরেও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকা সত্যিই দুঃখজনক। এ এলাকার কমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানতে এসব প্রতিষ্ঠানে সরকারিভাবে শহীদ মিনার নিমার্ণ করা জরুরি। উপজেলা পরিষদের আগামি মিটিংয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ সম্পর্কে আমি প্রস্তাব রাখবো।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রীতিকণা বিশ্বাস জানান, আমার উপজেলায় ৭৩টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। স্বাধীনতার পরেও এ পর্যন্তু সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় আমিও ব্যথিত। গত সপ্তাহে আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি শহীদ মিনার না থাকার বিষয়ে; জেলা শিক্ষা স্যার বলেছেন দ্রুত বাকি ৫৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে। আশা রাখছি এ বছরের মধ্যেই এ উপজেলার সবকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন হয়ে যাবে।
বোয়ালমারী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন,  কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক নিজ উদ্যোগে অনেকটা শহীদ মিনার করেছেন। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এখনো শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ চলছে। অবহেলিত এলাকায় যে প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম জাহিদুল হাসান বলেন, স্বাধীনতার এতো বছর পরেও যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার নাই সেটা খুবই দুঃখজনক। উপজেলা পরিষদের আগামী মিটিংয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে কথা বলে দ্রুত এ উপজেলার প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। আশা রাখছি চলতি বছরেরই বাকি শিক্ষ্ াপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ হয়ে যাবে।
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পঞ্চপল্লীতে দুই সহোদর হত্যার বিচারের দাবিতে মধুখালীতে বিক্ষোভ মিছিল, আহত-১৫

error: Content is protected !!

অমর একুশ

ভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছর পার হলেও ১৩৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

আপডেট টাইম : ১১:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১
মাতৃভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছর পার হলেও ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার ১৩৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তৈরি হয়নি শহীদ মিনার। এর ফলে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও ভাষা শহীদদের সম্পর্কে জানে না তরুন প্রজন্ম। আর যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে তা বছরের পর বছর পড়ে থাকে অযত্ন অবহেলায়।
আর যেসব প্রতিষ্ঠানে একবারেই নেই শহীদ মিনার সে সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থীর কথা নয় নাই বললাম। তাদের মনে পড়ে কি মাতৃভাষার ইতিহাসের কথা? তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এত বছরেও এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি বলে মনে করেন শুধিজনেরা।
জানা গেছে, বোয়ালমারী উপজেলায় ১০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৬টি, কলেজ ৬টি ও মাদরাসা ১৭ টিসহ মোট ১৫১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি কলেজ, ২৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৪টি মাদ্রাসা ও ৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার থাকলেও ৭১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। ফলে ৭১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করা হয় শুধুমাত্র জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে।
অপরদিকে আলফাডাঙ্গা উপজেলার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ২০টি, মাদরাসা ০৭টি, কলেজ ০৪টি ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৩টিসহ মোট ১০৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ০৪টি কলেজ, ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার থাকলেও ০৭টি মাদরাসার একটিতেও শহীদ মিনার নেই। মোট এ উপজেলায় ৬৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার।
এ কারণে এসব প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন থেকে বঞ্চিত থাকে। এনিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। আর যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে; তারমধ্যে কিছু শহীদ মিনার তা বছরের পর বছর পড়ে থাকে অরক্ষিত অবস্থায়। এসব শহীদ মিনারে কখনও গবাদি পশুর বিচরণ আবার কখনও বখাটেদের আড্ডাস্থলে পরিণত হতে দেখা যায়।
বোয়ালমারী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদ্য সাবেক কমান্ডার অধ্যাপক আব্দুর রশিদ বলেন, স্বাধীনতার ৫০বছরেও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকা সত্যিই দুঃখজনক। এ এলাকার কমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানতে এসব প্রতিষ্ঠানে সরকারিভাবে শহীদ মিনার নিমার্ণ করা জরুরি। উপজেলা পরিষদের আগামি মিটিংয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ সম্পর্কে আমি প্রস্তাব রাখবো।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রীতিকণা বিশ্বাস জানান, আমার উপজেলায় ৭৩টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। স্বাধীনতার পরেও এ পর্যন্তু সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় আমিও ব্যথিত। গত সপ্তাহে আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি শহীদ মিনার না থাকার বিষয়ে; জেলা শিক্ষা স্যার বলেছেন দ্রুত বাকি ৫৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে। আশা রাখছি এ বছরের মধ্যেই এ উপজেলার সবকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন হয়ে যাবে।
বোয়ালমারী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন,  কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক নিজ উদ্যোগে অনেকটা শহীদ মিনার করেছেন। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এখনো শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ চলছে। অবহেলিত এলাকায় যে প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম জাহিদুল হাসান বলেন, স্বাধীনতার এতো বছর পরেও যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার নাই সেটা খুবই দুঃখজনক। উপজেলা পরিষদের আগামী মিটিংয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে কথা বলে দ্রুত এ উপজেলার প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। আশা রাখছি চলতি বছরেরই বাকি শিক্ষ্ াপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ হয়ে যাবে।