কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ‘তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি’ প্রকল্পের জাতীয় কর্মশালায় উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে জনপ্রতি তেল ব্যবহারের পরিমাণ বেড়েছে। গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালে মাথাপিছু ভোজ্য তেল ব্যবহারের পরিমাণ ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার ৯০ শতাংশ ভোজ্য তেলই আমদানি করতে হয়। তবে সরকার চাইছে আমদানি-নির্ভরতা কিছুটা কমিয়ে দেশেই উৎপাদন বৃদ্ধি করতে। এ জন্য বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা ও প্রকল্প হাতে নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ২০২২-২৩ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে ‘ভোজ্য তেলে আমদানি-নির্ভরতা হ্রাসে তিন বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা’ শীর্ষক পরিকল্পনা তৈরি করেছে তারা।
দেশের ভোজ্য তেলের সংকট নিরসনে তিন বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে সরকার। দেশে ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে ২৪ লাখ টন অথচ উৎপাদন হয় মাত্র ৩ লাখ টন। বাকি ২১ লাখ টনই ঘাটতি, যা আমদানির মাধ্যমে সামাল দেওয়া হয়। ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে, আমদানি-নির্ভরতা কমাতে ও তিন বছরে ৪০ শতাংশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে এ কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এটি বাস্তবায়ন হলে সরকারের তিন বছরে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে ১৯ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা।
এতে সরকারের ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে এ খাতে ব্যয় হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। দেশে সরিষা, তিল ও সূর্যমুখী থেকে প্রাপ্ত ভোজ্য তেলের পরিমাণ প্রায় ৩ লাখ টন। আর দেশে বার্ষিক ভোজ্য তেলের চাহিদা ২৪ লাখ টন। রবি মৌসুমে সরিষা, সয়াবিন, বাদাম, সূর্যমুখী, তিল ও চিনাবাদাম চাষ করার পাশাপাশি খরিফ মৌসুমেও তিল ও চিনাবাদাম উৎপাদন করা যায়।
এ ছাড়া তেলজাতীয় ফসলের আবাদি জমি বৃদ্ধি ও মানসম্মত বীজ উৎপাদন এবং সরবরাহসহ নানা উপায়ে বেশি তেল উৎপাদন সম্ভব। কর্মপরিকল্পনার উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে বলা হয়, তিন বছরের মধ্যে ভোজ্য তেল আমদানি কমিয়ে এনে ৪০ শতাংশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে হবে। লক্ষ্য থাকবে, আমদানির ওপর ভরসা কমিয়ে কৃষকদের সক্ষমতা ও সচেতনতা বাড়ানো এবং অন্যান্য তেল ব্যবহারে আগ্রহী করে তোলা।
প্রিন্ট