ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

খোকসায় সরিষার চাষ লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে দ্বিগুণ, বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকগণ

কুষ্টিয়ার খোকসায় সরিষার চাষ লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে দ্বিগুণ, বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকগন। সরজমিনের গিয়ে দেখা যায় মাঠের পর মাঠ সরিষার ফুল যেন সাজিয়ে রেখেছে হলুদের গালিচা। যেসব জমি এতদিন পড়ে থাকতো অলস পতিত সেই সব জমিতে এবার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার উদ্যোগে যেন এক হলুদের সমাহার। এবছরের সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৫০ সেক্টর, সেখানে এবারে আবাদ হয়েছে প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমি। গত বছরের চাষ হয়েছিল ৫৫০ সেক্টর জমিতে। এবারে চাষ হয়েছে গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ জমিতে। এ বছর উৎপাদন লক্ষ্য ধরা হয়েছিল হেক্টর প্রতি ৩ থেকে ৫ টন।
সেখানে উৎপাদন হবে ৬ থেকে ৮ টন বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবুজ কুমার সাহা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ উৎপাদনের এমন দৃশ্যের অবতরণ ঘটেছে খোকসা উপজেলার ব-মির্জাপুর গ্রামে। ৪ জানুয়ারি বুধবার এ  দৃশ্য দেখতে সরজমিনে গিয়েছিলেন ব-মির্জাপুর গ্রামের মাঠে উপজেলা নির্বাহী অফিসার  রিপন বিশ্বাস, কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সবুজ কুমার সাহা ও উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার শাহিনা বেগম।কৃষি নির্ভর এই এলাকার বেশিরভাগ জমিই দুই-ফসলি ধানের আবাদ হতো মাঝে প্রায় ২-৩ মাস অনাবাদি পড়ে থাকতো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবুজ কুমার সাহা’র পরামর্শে উপজেলার ১৬শ কৃষকের সরিষার বীজ ও সার বিনামূল্যে প্রদান করায় কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহ দেখায়, উপজেলায় প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবং সময়মতো বীজ ও সার প্রদান করায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে চাষিরা আশা করছেন। চাষীরা উচ্চফলনশীল বারি-১৪,বারি ১৬, বারি১৭, বারি-১৮ ও বিনা-৪,বিনা-৯ জাতের সরিষার আবাদ করেছেন। সরজমিনের মির্জাপুর গ্রামের সরিষা চাষী সুবাহান শেখে, আতিক, আমানত এর সাথে কথা বলা হলে তারা জানান আমাদের এই সকল জমি দুই ফসল ধান আবাদ হতো, মাঝে দুই থেকে তিন মাস পড়ে থাকত তাই উপজেলা কৃষি  অফিসারের পরামর্শে আমরা এখানে অল্প সময়ের ফসল সরিষার চাষ করেছি,আশা করি আমাদের সরিষার বাম্পার ফলন হবে। তিনি বলেন এক বিঘা জমিতে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা খরচ হবে কিন্তু ৪ থেকে ৫ মন সরিষা ফলন হবে বলে আশা করছি।
এভাবে খোকসা উপজেলার শোমসপুর ইউনিয়ন, গোপগ্রাম ইউনিয়ন, জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরিষার চাষ হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে সারা দেশে ৫৬ লাখ হেক্টর জমিতে আমন ও বোরো চাষ করেন কৃষকগন। এই দুই ধানের চাষের মাঝখানে সময়ে প্রায় ২০ লাখ হেক্টর জমি পতিত পড়ে থাকে। এসব পতিত জমিতেই স্বল্পমেয়াদের সরিষা আবাদের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে খোকসা উপজেলায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবুজ কুমার সাহা বলেন খোকসা উপজেলার অনেক গ্রামে বোরো ও আমন ধানের মাঝখানে যেসব জমি পতিত পরে থাকত সে সকল জমিতে এ বছর থেকে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে কৃষকদের উচ্চফলনশীল সরিষার বীজ ও সার দিয়েছি। এ ছাড়া তাদের নানাভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন সরকারের ২০২৫ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ ভোজ্যতেল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও খোকসাতে চলতি মৌসুমে প্রায় ৩২ ভাগ সরিষা আবাদ হয়েছে। তিনি আরো বলেন আগামী ২০২৫ সালের আগেই খোকসা লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আমরা আশা করি।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

খোকসায় সরিষার চাষ লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে দ্বিগুণ, বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকগণ

আপডেট টাইম : ১১:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৩
শেখ সাইদুল ইসলাম প্রবীন, খোকসা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধিঃ :
কুষ্টিয়ার খোকসায় সরিষার চাষ লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে দ্বিগুণ, বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকগন। সরজমিনের গিয়ে দেখা যায় মাঠের পর মাঠ সরিষার ফুল যেন সাজিয়ে রেখেছে হলুদের গালিচা। যেসব জমি এতদিন পড়ে থাকতো অলস পতিত সেই সব জমিতে এবার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার উদ্যোগে যেন এক হলুদের সমাহার। এবছরের সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৫০ সেক্টর, সেখানে এবারে আবাদ হয়েছে প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমি। গত বছরের চাষ হয়েছিল ৫৫০ সেক্টর জমিতে। এবারে চাষ হয়েছে গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ জমিতে। এ বছর উৎপাদন লক্ষ্য ধরা হয়েছিল হেক্টর প্রতি ৩ থেকে ৫ টন।
সেখানে উৎপাদন হবে ৬ থেকে ৮ টন বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবুজ কুমার সাহা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ উৎপাদনের এমন দৃশ্যের অবতরণ ঘটেছে খোকসা উপজেলার ব-মির্জাপুর গ্রামে। ৪ জানুয়ারি বুধবার এ  দৃশ্য দেখতে সরজমিনে গিয়েছিলেন ব-মির্জাপুর গ্রামের মাঠে উপজেলা নির্বাহী অফিসার  রিপন বিশ্বাস, কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সবুজ কুমার সাহা ও উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার শাহিনা বেগম।কৃষি নির্ভর এই এলাকার বেশিরভাগ জমিই দুই-ফসলি ধানের আবাদ হতো মাঝে প্রায় ২-৩ মাস অনাবাদি পড়ে থাকতো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবুজ কুমার সাহা’র পরামর্শে উপজেলার ১৬শ কৃষকের সরিষার বীজ ও সার বিনামূল্যে প্রদান করায় কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহ দেখায়, উপজেলায় প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবং সময়মতো বীজ ও সার প্রদান করায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে চাষিরা আশা করছেন। চাষীরা উচ্চফলনশীল বারি-১৪,বারি ১৬, বারি১৭, বারি-১৮ ও বিনা-৪,বিনা-৯ জাতের সরিষার আবাদ করেছেন। সরজমিনের মির্জাপুর গ্রামের সরিষা চাষী সুবাহান শেখে, আতিক, আমানত এর সাথে কথা বলা হলে তারা জানান আমাদের এই সকল জমি দুই ফসল ধান আবাদ হতো, মাঝে দুই থেকে তিন মাস পড়ে থাকত তাই উপজেলা কৃষি  অফিসারের পরামর্শে আমরা এখানে অল্প সময়ের ফসল সরিষার চাষ করেছি,আশা করি আমাদের সরিষার বাম্পার ফলন হবে। তিনি বলেন এক বিঘা জমিতে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা খরচ হবে কিন্তু ৪ থেকে ৫ মন সরিষা ফলন হবে বলে আশা করছি।
এভাবে খোকসা উপজেলার শোমসপুর ইউনিয়ন, গোপগ্রাম ইউনিয়ন, জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরিষার চাষ হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে সারা দেশে ৫৬ লাখ হেক্টর জমিতে আমন ও বোরো চাষ করেন কৃষকগন। এই দুই ধানের চাষের মাঝখানে সময়ে প্রায় ২০ লাখ হেক্টর জমি পতিত পড়ে থাকে। এসব পতিত জমিতেই স্বল্পমেয়াদের সরিষা আবাদের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে খোকসা উপজেলায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবুজ কুমার সাহা বলেন খোকসা উপজেলার অনেক গ্রামে বোরো ও আমন ধানের মাঝখানে যেসব জমি পতিত পরে থাকত সে সকল জমিতে এ বছর থেকে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে কৃষকদের উচ্চফলনশীল সরিষার বীজ ও সার দিয়েছি। এ ছাড়া তাদের নানাভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন সরকারের ২০২৫ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ ভোজ্যতেল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও খোকসাতে চলতি মৌসুমে প্রায় ৩২ ভাগ সরিষা আবাদ হয়েছে। তিনি আরো বলেন আগামী ২০২৫ সালের আগেই খোকসা লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আমরা আশা করি।

প্রিন্ট