ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

সালথা দাখিল মাদ্রাসা এমপিও হতে না হতেই নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সালথা দাখিল মাদ্রাসা চলতি বছরের ৬ জুলাই এমপিও ঘোষনা হয়। এমপিও ভুক্তী হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে। মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির ক্ষমতাবলে সম্পর্তি তিনটি পদের নিয়োগের বিপরিতে হাতানো হয়েছে মোটা অংকের টাকা।

মাদ্রাসার সুপারের নিয়োগের বৈধতা না থাকায় তাকে বাদ রেখে সুবিদেমত সহকারী মৌলভী হুমাযুন কবীর কে সুপারের দায়িত্বে বসিয়ে এই তিনটি নিয়োগ দেখানো হয়েছে। নিয়োগ সম্পন্ন হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই হুমায়ুন কবির কে সরানো হয় দায়িত্বে থেকে। ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয় সহকারী শিক্ষক কামরুল ইসলাম কে।

নিয়োগকৃত তিনটি পদের মধ্যে সহকারী সুপার, আয়া ও নিরাপত্তাকর্মী যা অত্র মাদ্রাসার অনেক শিক্ষকই জানেন না। যদিও এইসব পদ পূর্ন দেখিয়ে এমপিওর জন্য আবেদন করা করা হয়, কিন্তু তা ছিলো ভূয়া নাম। সেই ভূয়া নামের বিপরিতে কমিটির সভাপতি এই নিয়োগ বানিজ্য করছে। একই উপজেলার ঠেনঠেনিয়া আলিম মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক আবুল খায়ের মোল্লা অত্র মাদ্রাসার সভাপতিপদে আসিন হয় আরো কয়েক বছর আগে। তিনি এমপিওর জন্য দৌড়ঝাপও করেছেন বেশ।

এর আগে কয়েক ধাপে মোটা অংকের টাকাও উত্তোলন করেছেন শিক্ষকদের কাছ থেকে এমপিও করণ করতে বোর্ডেও নাম করে। জানা গেছে সে টাকা তিনি নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। নামসর্বস্ব পত্রিকায় এই তিনটি পদের নিয়োগে সার্কুলার দিয়েছেন তা কবে কোন পত্রিকায় ছাপা হয়েছে জানেন না অনেক চাকুরী প্রার্থী। গত ১২ নভেম্বর শনিবার মাদ্রাসার কোন এক কক্ষে হয় এই নামে মাত্র সাজানো পরীক্ষা। পরীক্ষার বিপরীতে সহকারী সুপার পদে প্রার্থী হয় ৩জন, আয়া পদে ৪জন নিরাপত্তা কর্মীপদে ৩জন। পরীক্ষার আগেই এইসব নিয়োগের প্রার্থী বাছাই করে প্রশ্ন আউট করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নেয় সভাপতি ও তার সহযোগি আরও এক মাদ্রাসার প্রিন্সিপল আবু ছায়েম মোল্লা।

আবু ছায়েম ইউসুফদিয়া আলিম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল, তিনি তার এক ছেলেকে সালথা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী দেখিয়ে হন অভিভাবক সদস্য। সব মিলিয়ে মাদ্রাসার সভাপতি এই নিয়োগের জন্য একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেন। এই কঠিন সিন্ডিকেটের মধ্যে এই সব নিয়োগ দিয়ে তিনটি পদের বিপরিতে হাতানো হয়েছে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। যা স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে মাদ্রাসার সাবেক সুপার কে নিয়োগ ও এমপিও ভুক্তি করতে গড়িমিশি করছে সভাপতি। অভিযোগ উঠেছে চাহিদামতো টাকা যোগান দিতে না পারায় তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে। উপজেলায় চাউর রয়েছে দাখিল ও আলিম মাদ্রাসার যে কোন শূন্য পদের নিয়োগের ক্ষেত্রে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিনয় চাকীর সাথে কঠিন একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন ইউসুফদিয়া আলিম মাদ্রসার প্রিন্সিপাল আবু ছায়েম মোল্লা। ঘুপচি সার্কুলার, পেছনের তারিখে বিজ্ঞপ্তি, অন্য উপজেলায় নিয়োগ পরীক্ষা, চাকুরী প্রার্থী ম্যানেজ, লবিং , ডিজির প্রতিনিধিকে ম্যানেজসহ সকল সমন্বয় তার দ্বারাই হয়ে থাকে। দীর্ঘদিনের এই সিন্ডিকেটে বনেছেন কয়েক কোটি টাকার মালিক। প্রতিবছর হয়ে যান বোর্ড পরীক্ষার হল সুপার এখানেও মোটা কামাই।

এলাকায় চাউর থাকে যে মাদ্রাসার জমি দাতা সেকেন মোল্লার পুত্র বধুকে আয়া পদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, অপর দিকে সহকারী সুপার পদে আগে থেকে ৬ লক্ষ টাকা নিয়ে ফেরদৌস হাসান কে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিরাপত্তাকর্মীর হিসাবে ৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয় রুনু সালথা গ্রামের রুনু মল্লিকের ছেলে আসলাম মল্লিককে । নিয়োগ বানিজ্যের বিষয়ে মাদ্রাসার সভাপতি মাওলানা আবুল খায়ের বলেন, নিয়োগ হয়েছে আরো আগে এখন এ বিষয় নিয়ে কথা বলার দরকার নেই। তিনি বলেন নিয়োগ স্বচ্ছ হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিনয় চাকী বলেন, নিয়োগে কোন কারচুপি হয়নি ডিজির প্রতিনিধিসহ নিয়োগ বোর্ডের সংস্লিস্ট সবাই ছিলো তারা প্রশ্ন করেছে প্রার্থীদের , সর্বোচ্চ নাম্বার প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

সালথা দাখিল মাদ্রাসা এমপিও হতে না হতেই নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ

আপডেট টাইম : ০৪:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২২
এফ.ম আজিজুর রহমান :

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সালথা দাখিল মাদ্রাসা চলতি বছরের ৬ জুলাই এমপিও ঘোষনা হয়। এমপিও ভুক্তী হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে। মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির ক্ষমতাবলে সম্পর্তি তিনটি পদের নিয়োগের বিপরিতে হাতানো হয়েছে মোটা অংকের টাকা।

মাদ্রাসার সুপারের নিয়োগের বৈধতা না থাকায় তাকে বাদ রেখে সুবিদেমত সহকারী মৌলভী হুমাযুন কবীর কে সুপারের দায়িত্বে বসিয়ে এই তিনটি নিয়োগ দেখানো হয়েছে। নিয়োগ সম্পন্ন হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই হুমায়ুন কবির কে সরানো হয় দায়িত্বে থেকে। ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয় সহকারী শিক্ষক কামরুল ইসলাম কে।

নিয়োগকৃত তিনটি পদের মধ্যে সহকারী সুপার, আয়া ও নিরাপত্তাকর্মী যা অত্র মাদ্রাসার অনেক শিক্ষকই জানেন না। যদিও এইসব পদ পূর্ন দেখিয়ে এমপিওর জন্য আবেদন করা করা হয়, কিন্তু তা ছিলো ভূয়া নাম। সেই ভূয়া নামের বিপরিতে কমিটির সভাপতি এই নিয়োগ বানিজ্য করছে। একই উপজেলার ঠেনঠেনিয়া আলিম মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক আবুল খায়ের মোল্লা অত্র মাদ্রাসার সভাপতিপদে আসিন হয় আরো কয়েক বছর আগে। তিনি এমপিওর জন্য দৌড়ঝাপও করেছেন বেশ।

এর আগে কয়েক ধাপে মোটা অংকের টাকাও উত্তোলন করেছেন শিক্ষকদের কাছ থেকে এমপিও করণ করতে বোর্ডেও নাম করে। জানা গেছে সে টাকা তিনি নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। নামসর্বস্ব পত্রিকায় এই তিনটি পদের নিয়োগে সার্কুলার দিয়েছেন তা কবে কোন পত্রিকায় ছাপা হয়েছে জানেন না অনেক চাকুরী প্রার্থী। গত ১২ নভেম্বর শনিবার মাদ্রাসার কোন এক কক্ষে হয় এই নামে মাত্র সাজানো পরীক্ষা। পরীক্ষার বিপরীতে সহকারী সুপার পদে প্রার্থী হয় ৩জন, আয়া পদে ৪জন নিরাপত্তা কর্মীপদে ৩জন। পরীক্ষার আগেই এইসব নিয়োগের প্রার্থী বাছাই করে প্রশ্ন আউট করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নেয় সভাপতি ও তার সহযোগি আরও এক মাদ্রাসার প্রিন্সিপল আবু ছায়েম মোল্লা।

আবু ছায়েম ইউসুফদিয়া আলিম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল, তিনি তার এক ছেলেকে সালথা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী দেখিয়ে হন অভিভাবক সদস্য। সব মিলিয়ে মাদ্রাসার সভাপতি এই নিয়োগের জন্য একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেন। এই কঠিন সিন্ডিকেটের মধ্যে এই সব নিয়োগ দিয়ে তিনটি পদের বিপরিতে হাতানো হয়েছে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। যা স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে মাদ্রাসার সাবেক সুপার কে নিয়োগ ও এমপিও ভুক্তি করতে গড়িমিশি করছে সভাপতি। অভিযোগ উঠেছে চাহিদামতো টাকা যোগান দিতে না পারায় তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে। উপজেলায় চাউর রয়েছে দাখিল ও আলিম মাদ্রাসার যে কোন শূন্য পদের নিয়োগের ক্ষেত্রে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিনয় চাকীর সাথে কঠিন একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন ইউসুফদিয়া আলিম মাদ্রসার প্রিন্সিপাল আবু ছায়েম মোল্লা। ঘুপচি সার্কুলার, পেছনের তারিখে বিজ্ঞপ্তি, অন্য উপজেলায় নিয়োগ পরীক্ষা, চাকুরী প্রার্থী ম্যানেজ, লবিং , ডিজির প্রতিনিধিকে ম্যানেজসহ সকল সমন্বয় তার দ্বারাই হয়ে থাকে। দীর্ঘদিনের এই সিন্ডিকেটে বনেছেন কয়েক কোটি টাকার মালিক। প্রতিবছর হয়ে যান বোর্ড পরীক্ষার হল সুপার এখানেও মোটা কামাই।

এলাকায় চাউর থাকে যে মাদ্রাসার জমি দাতা সেকেন মোল্লার পুত্র বধুকে আয়া পদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, অপর দিকে সহকারী সুপার পদে আগে থেকে ৬ লক্ষ টাকা নিয়ে ফেরদৌস হাসান কে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিরাপত্তাকর্মীর হিসাবে ৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয় রুনু সালথা গ্রামের রুনু মল্লিকের ছেলে আসলাম মল্লিককে । নিয়োগ বানিজ্যের বিষয়ে মাদ্রাসার সভাপতি মাওলানা আবুল খায়ের বলেন, নিয়োগ হয়েছে আরো আগে এখন এ বিষয় নিয়ে কথা বলার দরকার নেই। তিনি বলেন নিয়োগ স্বচ্ছ হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিনয় চাকী বলেন, নিয়োগে কোন কারচুপি হয়নি ডিজির প্রতিনিধিসহ নিয়োগ বোর্ডের সংস্লিস্ট সবাই ছিলো তারা প্রশ্ন করেছে প্রার্থীদের , সর্বোচ্চ নাম্বার প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।


প্রিন্ট