ঢাকা , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo সোনামসজিদ স্থলবন্দরে হিট স্ট্রোকে ট্রাফিক পরিদর্শকের মৃত্যু Logo দৌলতপুরে নারী চিকিৎসককে হয়রানি করে কারাগারে যুবক Logo নাটোরের বাগাতিপাড়া বাউয়েট এর নতুন রেজিস্ট্রার শেখ সানি মোহাম্মদ তালহা Logo বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিক নিয়ে কার্গো জাহাজডুবি Logo দ্বীপ হাতিয়ায় সৈকতে ভেসে এসেছে বিরল প্রজাতির ‘ইয়েলো-বেলিড সি স্নেক’ Logo কালুখালীতে চেয়ারম্যান প্রার্থী এনায়েত হোসেনের উঠান বৈঠক Logo গোমস্তাপুরে বৃষ্টির আশায় ইসতিসকার নামাজ আদায় Logo লালপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দোয়া প্রার্থী মোঃ শামীম আহম্মেদ সাগর Logo ফরিদপুরে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় Logo বোয়ালমারীতে স্বস্তির বৃষ্টি প্রার্থনায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

রাজাকার পুত্রকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের সুপারিশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে দলীয় নেতা কর্মীদের মতামত উপেক্ষা করে উপজেলা আওয়ামী লীগ একজন রাজাকার পুত্রকে দলীয় প্রার্থী করার সুপারিশের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করেছে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন, চেয়ারম্যান হিসেবে ওই প্রার্থীর বাবার নাম পিচ কমিটিতে থাকলেও তিনি কখনোই রাজাকার ছিলেন না।
রবিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে আলফাডাঙ্গা বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়।
এসময় বক্তব্য দেন গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোনায়েম হোসেন খান, গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হাসান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নাজমুল ইসলাম প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এতে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেয়। মিছিলটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
মানববন্ধনে বক্তাগণ বলেন, ২৯ ডিসেম্বর গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য গত শুক্রবার উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ওই সভায় গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোনায়েম হোসেন খানের পক্ষে ১১ জন ভোট দেন। কিন্তু পরে অনিয়ম করে তার পক্ষে ৮ ভোট দেখিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের সন্তান রাজাকার পুত্র হারিচুর রহমান সোহানকে এক নম্বর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সুপারিশ করেছে।
তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা এবং মনোনয়ন বোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ট সদস্যদের মনোনীত প্রার্থীকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার জোর দাবি জানান।
গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোনায়েম হোসেন খান বলেন, মোট ১৯ জন ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে আমি ১১ ভোট পেয়েছি, কিন্তু আমাকে বলা হয়েছে আমি ৮ ভোট পেয়েছি। ভোট প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি।
তিনি আরো বলেন, উৎকোচের বিনিময়ে আমাকে ঠকানো হয়েছে। একজন রাজাকার পুত্রকে টাকার বিনিময়ে চেয়ারম্যান বানাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এসব কাজ করছেন। বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে লিখিতভাবে অবগত করা হয়েছে।
গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এনামুল হাসান বলেন, আলফাডাঙ্গা আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। ফরিদপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয় এখানকার ভোটে। এখানে একজন রাজাকার পুত্রকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে সুপারিশ করবেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে। টাকার বিনিময়ে এসব করছেন নেতারা, আমরা এটা কোনোভাবেই মেনে নিবো না।
এব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম সুজা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলাম। তখন আব্দুর রহমান সাহেব আলফাডাঙ্গায় ছিলেন না। তিনি তখন ঢাকায় তার ভগ্নিপতির বাসায় থাকতেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি এলাকায় স্বাধীনতাবিরোধী কোন কর্মকান্ডেও জড়িত ছিলেন না, তবে তার নাম পিস কমিটিতে ছিল।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন, হারিচুর রহমানের পিতা রাজাকার ছিলেন না। তবে তিনি তৎকালে ইউনিয়ন বোর্ডে ছিলেন। সেই হিসেবে তার নাম হয়তো পিচ কমিটিতে থাকতে পারে। আর মনোনয়ন সভায় উপস্থিত ভোটারেরা যেভাবে ভোট দিয়েছেন আমরা সেভাবেই সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছি। এখানে উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মোঃ ইশতিয়াক আরিফ বলেন, বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগকে জানিয়েছে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। আমরা গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
এদিকে হারিচুর রহমান সোহান বলেন, আমার পিতার নামে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা। আমি বর্তমানে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক।
তিনি আরো বলেন, মোট ভোটার ছিল ২০ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছে ১৯ জন। মোট প্রার্থী ছিল ৫ জন। আমি পেয়েছি ১১ ভোট আর মোনায়েম ভাই পেয়েছেন ৮ ভোট। অন্যরা কোন ভোট পায়নি।
আপনার বড় ভাই যুবদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বড় ভাই আগে যুবদল করতেন, এখন তিনি রাজনীতি করেন না।
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সোনামসজিদ স্থলবন্দরে হিট স্ট্রোকে ট্রাফিক পরিদর্শকের মৃত্যু

error: Content is protected !!

রাজাকার পুত্রকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের সুপারিশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

আপডেট টাইম : ০৭:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে দলীয় নেতা কর্মীদের মতামত উপেক্ষা করে উপজেলা আওয়ামী লীগ একজন রাজাকার পুত্রকে দলীয় প্রার্থী করার সুপারিশের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করেছে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন, চেয়ারম্যান হিসেবে ওই প্রার্থীর বাবার নাম পিচ কমিটিতে থাকলেও তিনি কখনোই রাজাকার ছিলেন না।
রবিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে আলফাডাঙ্গা বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়।
এসময় বক্তব্য দেন গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোনায়েম হোসেন খান, গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হাসান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নাজমুল ইসলাম প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এতে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেয়। মিছিলটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
মানববন্ধনে বক্তাগণ বলেন, ২৯ ডিসেম্বর গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য গত শুক্রবার উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ওই সভায় গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোনায়েম হোসেন খানের পক্ষে ১১ জন ভোট দেন। কিন্তু পরে অনিয়ম করে তার পক্ষে ৮ ভোট দেখিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের সন্তান রাজাকার পুত্র হারিচুর রহমান সোহানকে এক নম্বর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সুপারিশ করেছে।
তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা এবং মনোনয়ন বোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ট সদস্যদের মনোনীত প্রার্থীকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার জোর দাবি জানান।
গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোনায়েম হোসেন খান বলেন, মোট ১৯ জন ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে আমি ১১ ভোট পেয়েছি, কিন্তু আমাকে বলা হয়েছে আমি ৮ ভোট পেয়েছি। ভোট প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি।
তিনি আরো বলেন, উৎকোচের বিনিময়ে আমাকে ঠকানো হয়েছে। একজন রাজাকার পুত্রকে টাকার বিনিময়ে চেয়ারম্যান বানাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এসব কাজ করছেন। বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে লিখিতভাবে অবগত করা হয়েছে।
গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এনামুল হাসান বলেন, আলফাডাঙ্গা আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। ফরিদপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয় এখানকার ভোটে। এখানে একজন রাজাকার পুত্রকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে সুপারিশ করবেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে। টাকার বিনিময়ে এসব করছেন নেতারা, আমরা এটা কোনোভাবেই মেনে নিবো না।
এব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম সুজা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলাম। তখন আব্দুর রহমান সাহেব আলফাডাঙ্গায় ছিলেন না। তিনি তখন ঢাকায় তার ভগ্নিপতির বাসায় থাকতেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি এলাকায় স্বাধীনতাবিরোধী কোন কর্মকান্ডেও জড়িত ছিলেন না, তবে তার নাম পিস কমিটিতে ছিল।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন, হারিচুর রহমানের পিতা রাজাকার ছিলেন না। তবে তিনি তৎকালে ইউনিয়ন বোর্ডে ছিলেন। সেই হিসেবে তার নাম হয়তো পিচ কমিটিতে থাকতে পারে। আর মনোনয়ন সভায় উপস্থিত ভোটারেরা যেভাবে ভোট দিয়েছেন আমরা সেভাবেই সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছি। এখানে উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মোঃ ইশতিয়াক আরিফ বলেন, বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগকে জানিয়েছে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। আমরা গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
এদিকে হারিচুর রহমান সোহান বলেন, আমার পিতার নামে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা। আমি বর্তমানে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক।
তিনি আরো বলেন, মোট ভোটার ছিল ২০ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছে ১৯ জন। মোট প্রার্থী ছিল ৫ জন। আমি পেয়েছি ১১ ভোট আর মোনায়েম ভাই পেয়েছেন ৮ ভোট। অন্যরা কোন ভোট পায়নি।
আপনার বড় ভাই যুবদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বড় ভাই আগে যুবদল করতেন, এখন তিনি রাজনীতি করেন না।