ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo রাজশাহীতে আনসার ও ভিডিপি’র মতবিনিময় সভা Logo ফরিদপুরে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ৬ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত Logo শ্যামনগরে নারীদের এবং স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিয়ে সংবেদনশীল কর্মশালা Logo বাঘায় আনিসুরকে গলা কেটে হত্যার দায় স্বীকার রায়হানের Logo কালুখালীতে বিএনপি’র প্রতিবাদ সমাবেশ Logo জুলাই গণঅভুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে বাগাতিপাড়ায় স্মরণ সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত Logo গোয়ালন্দে মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে ফুটবল প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত Logo ফরিদপুরে কমিউনিস্ট পার্টির সমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo সদরপুরের নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করলেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল Logo ইংরেজি শিক্ষার ১৫ বছর
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কর্ণফুলী নদীতে ট্রলারডুবি মহম্মদপুরের ৩ জনের লাশ উদ্ধারঃ নিখোঁজ ৩

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে এফভি মাগফেরাত নামের ট্রলারডুবির ঘটনায় এখন প্রর্যন্তু মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ৬ জন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ ৬ জনের মধ্যে আজ শুক্রবার সকাল ৭ টার সময় কর্ণফুলী নদীর মাঝি পাড়া এলাকায় ভেঁসে আসা মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা ৩ জনের লাশ উদ্ধার করেছে নৌপুলিশ। আরও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।

উদ্ধার হওয়া এক জনের লাশ মো. নাজমুল হাসানের বলে দাবি করে শনাক্ত করেছেন তার পিতা আকরাম মোল্যা। নাজমুল হাসানের বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার দাতিয়াদাহ গ্রামে। অন্য দুইটি লাশ ফুলে বিকৃত হওয়ায় তার পরিচয় এখনও স্বজনরা শনাক্ত করতে পারেননি।

গত (১১ অক্টোবর) মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মেরামতের জন্য ডকইয়ার্ডে তোলার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বয়ার সঙ্গে ধাক্কা লেগে এফভি মাগফেরাত নামে ফিশিং ট্রলারটি কর্ণফুলী নদীতে ডুবে যায়। উপজেলার মন্ডলগাতী, খলিশাখালি ও বাবুখালী ইউনিয়নের দাতিয়াদাহ গ্রামের নিখোঁজ পরিবারগুলোতে চলছে শোকের মাতম।

জাহাজে কর্মরত মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার যশোবন্তপুর গ্রামের রুবেল এবং খলিশাখালী গ্রামের রবিউল ইসলাম সাঁতরে তীরে এসে প্রাঁণে বেঁচে যায়। এঘটনায় আরও ৬ জন নিখোঁজ থাকে। আজ শুক্রবার সকালে ৩ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছেন লাশ নাজমুল হাসানের স্বজন সাবেক মেম্বর কামরুল হাসান। ডুবে যাওয়া এফভি মাগফেরাত ট্রলার থেকে বেঁচে ফেরা রুবেল মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার যশোবন্তপুর গ্রামের মৃত লুলু মিয়ার ছেলে।

তিনি ফোনে প্রতিবেদককে বলেন, আমরা পাথর নিয়ে বড় ট্রলারে করে কর্ণফুলির দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পেছন থেকে অন্য একটি লাইটার আমাদের ট্রলারকে আঘাত করলে ট্রলারটি ডুবে যায়। সে সময় আমাদের ট্রলারের মধ্যে মহম্মদপুর উপজেলার মোট ৮ জন ছিল। আমার সঙ্গে রবিউল কুলে উঠলেও অন্য ৬ জনের খবর পাওয়া যাচ্ছে না। তারা নিখোঁজ রয়েছেন।

নিখোঁজ ওই ৬ জন মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার মন্ডলগাতি গ্রামের নূরুল হোসেন মোল্যার ছেলে শিমুল ও জাহিদ, মো. খসরু বিশ্বাসের ছেলে সুরুজ, গোলাম রসূল মোল্যার ছেলে নূর মোহাম্মদ এবং একই উপজেলার খলিশাখালি গ্রামের কামাল মোল্যার ছেলে মনির হোসেন এবং বাবুখালী ইউনিয়নের দাতিয়াদাহ গ্রামের রঘুনাথপুর পাড়ার আকরাম হোসেনের ছেলে নাজমুল হাসান। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। একজনকে সনাক্ত করা গেলেও বাকী দুইজনের লাখ এখনো প্রর্যন্তু নির্দিষ্ট করে সনাক্ত করা যায়নি তবে তাদের দুজনের বাড়ি মহম্মদপুর উপজেলায়।

শুক্রবার সকালে সরেজমিনে উপজেলার দাতিয়াদাহ গ্রামের নাজমুল হাসানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর পরিবারে চলছে শোকের মাতম। মাত্র ১০ দিন আগে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নাজমুল বাড়িতে এসেছিল। পরে চট্টগ্রামে জাহাজে কাজের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

মন্ডলগাতি গ্রামের নিখোঁজ শিমুল ও জাহিদের মা ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেরা বুধবার সকালে মোবাইল ফোনে কথা বলে কাজে গেছে। পরে কথা বলবে জানালেও আর কথা হয়নি। এখন শুনছি তাদের জাহাজ ডুবে গেছে। তাদের লাশও পাওয়া যাচ্ছে না। একইভাবে অন্যান্যদের পরিবারে গিয়েও দেখা যায় প্রতিটি পরিবারেই চলছে শোকের মাতম। তারা নিজ নিজ পরিবারের নিখোঁজ সন্তানদের সন্ধান চেয়েছেন।

এ বিষয়ে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পাল বলেন, পৃথক একটি ট্রলার ও জাহাজ ডুবির ঘটনা জানার পর আমরা কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করি। তাদের নিখোঁজ এবং উদ্ধারের তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করি। এ বিষয়ে আমরা খোঁজ খবর রাখছি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজশাহীতে আনসার ও ভিডিপি’র মতবিনিময় সভা

error: Content is protected !!

কর্ণফুলী নদীতে ট্রলারডুবি মহম্মদপুরের ৩ জনের লাশ উদ্ধারঃ নিখোঁজ ৩

আপডেট টাইম : ১২:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর ২০২২
মো. কামরুল হাসান, বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরা :

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে এফভি মাগফেরাত নামের ট্রলারডুবির ঘটনায় এখন প্রর্যন্তু মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ৬ জন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ ৬ জনের মধ্যে আজ শুক্রবার সকাল ৭ টার সময় কর্ণফুলী নদীর মাঝি পাড়া এলাকায় ভেঁসে আসা মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা ৩ জনের লাশ উদ্ধার করেছে নৌপুলিশ। আরও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।

উদ্ধার হওয়া এক জনের লাশ মো. নাজমুল হাসানের বলে দাবি করে শনাক্ত করেছেন তার পিতা আকরাম মোল্যা। নাজমুল হাসানের বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার দাতিয়াদাহ গ্রামে। অন্য দুইটি লাশ ফুলে বিকৃত হওয়ায় তার পরিচয় এখনও স্বজনরা শনাক্ত করতে পারেননি।

গত (১১ অক্টোবর) মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মেরামতের জন্য ডকইয়ার্ডে তোলার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বয়ার সঙ্গে ধাক্কা লেগে এফভি মাগফেরাত নামে ফিশিং ট্রলারটি কর্ণফুলী নদীতে ডুবে যায়। উপজেলার মন্ডলগাতী, খলিশাখালি ও বাবুখালী ইউনিয়নের দাতিয়াদাহ গ্রামের নিখোঁজ পরিবারগুলোতে চলছে শোকের মাতম।

জাহাজে কর্মরত মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার যশোবন্তপুর গ্রামের রুবেল এবং খলিশাখালী গ্রামের রবিউল ইসলাম সাঁতরে তীরে এসে প্রাঁণে বেঁচে যায়। এঘটনায় আরও ৬ জন নিখোঁজ থাকে। আজ শুক্রবার সকালে ৩ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছেন লাশ নাজমুল হাসানের স্বজন সাবেক মেম্বর কামরুল হাসান। ডুবে যাওয়া এফভি মাগফেরাত ট্রলার থেকে বেঁচে ফেরা রুবেল মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার যশোবন্তপুর গ্রামের মৃত লুলু মিয়ার ছেলে।

তিনি ফোনে প্রতিবেদককে বলেন, আমরা পাথর নিয়ে বড় ট্রলারে করে কর্ণফুলির দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পেছন থেকে অন্য একটি লাইটার আমাদের ট্রলারকে আঘাত করলে ট্রলারটি ডুবে যায়। সে সময় আমাদের ট্রলারের মধ্যে মহম্মদপুর উপজেলার মোট ৮ জন ছিল। আমার সঙ্গে রবিউল কুলে উঠলেও অন্য ৬ জনের খবর পাওয়া যাচ্ছে না। তারা নিখোঁজ রয়েছেন।

নিখোঁজ ওই ৬ জন মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার মন্ডলগাতি গ্রামের নূরুল হোসেন মোল্যার ছেলে শিমুল ও জাহিদ, মো. খসরু বিশ্বাসের ছেলে সুরুজ, গোলাম রসূল মোল্যার ছেলে নূর মোহাম্মদ এবং একই উপজেলার খলিশাখালি গ্রামের কামাল মোল্যার ছেলে মনির হোসেন এবং বাবুখালী ইউনিয়নের দাতিয়াদাহ গ্রামের রঘুনাথপুর পাড়ার আকরাম হোসেনের ছেলে নাজমুল হাসান। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। একজনকে সনাক্ত করা গেলেও বাকী দুইজনের লাখ এখনো প্রর্যন্তু নির্দিষ্ট করে সনাক্ত করা যায়নি তবে তাদের দুজনের বাড়ি মহম্মদপুর উপজেলায়।

শুক্রবার সকালে সরেজমিনে উপজেলার দাতিয়াদাহ গ্রামের নাজমুল হাসানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর পরিবারে চলছে শোকের মাতম। মাত্র ১০ দিন আগে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নাজমুল বাড়িতে এসেছিল। পরে চট্টগ্রামে জাহাজে কাজের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

মন্ডলগাতি গ্রামের নিখোঁজ শিমুল ও জাহিদের মা ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেরা বুধবার সকালে মোবাইল ফোনে কথা বলে কাজে গেছে। পরে কথা বলবে জানালেও আর কথা হয়নি। এখন শুনছি তাদের জাহাজ ডুবে গেছে। তাদের লাশও পাওয়া যাচ্ছে না। একইভাবে অন্যান্যদের পরিবারে গিয়েও দেখা যায় প্রতিটি পরিবারেই চলছে শোকের মাতম। তারা নিজ নিজ পরিবারের নিখোঁজ সন্তানদের সন্ধান চেয়েছেন।

এ বিষয়ে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পাল বলেন, পৃথক একটি ট্রলার ও জাহাজ ডুবির ঘটনা জানার পর আমরা কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করি। তাদের নিখোঁজ এবং উদ্ধারের তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করি। এ বিষয়ে আমরা খোঁজ খবর রাখছি।


প্রিন্ট