তুচ্ছ ঘটনায় মাগুরার মহম্মদপুরের বিনোদপুর বাজারে গত মঙ্গলবার রাতে ২৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে গত চারদিন ধরে বন্ধ বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে বললেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর। আজ রবিবার বিকেলে তিনি বিনোদপুর বাজারে এসে শত শত জনতার উপস্থিতিতে এই নির্দেশনা প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহম্মদপুর থানার ওসি অসিত কুমার রায়, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা এবং এবং স্থানীয় শত শত জনতা।
গত ৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে শুরু করে ভোররাত প্রর্যন্তু বিনোদপুর বাজারে প্রতিপক্ষ ঘুল্লিয়া গ্রামের ব্যবসায়ীদের দোকান বেছে বেছে লুটপাট ও ভাংচুর করে। বিনোদপুর এলকার সংঘবদ্ধ লোকেররা ওই লুটতরাজ ভাংচুর করে। এ ঘটনার পর নানা আশঙ্কায় বুধবার সকাল থেকে আজ রবিবার সন্ধা প্রর্যন্তু বিনোদপুর বাজারের সব দোকান-পাট বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। মফস্বল শহরের বাণিজ্যিক এলাকা নামে খ্যাঁত এই বাজারে অঘোষিত হরতাল চলতে থাকে। এ ঘটনার ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের খোজ-খবর নিতে আসেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর। এ সময় তিনি প্রশাসন এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের সমন্বয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার অনুরোধ করেন।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার বিনোদপুর হাইস্কুল মাঠে গ্রীস্মকালীন স্কুল ও মাদ্রাসা ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ গ্রহণ করে রাড়িখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ঘুল্লিয়া দাখিল মাদ্রাসা। টাইব্রেকারে ঘুল্লিয়া দাখিল মাদ্রাসা পরাজিত হয়। এরপর ঘুল্লিয়া দাখিল মাদ্রাসা একাদশের খেলোয়াড়রা প্রতিপক্ষ রাড়িখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় একাদশের খেলোয়াড়দের উপর চড়াও হয়ে মারধোর করে। পরে এ বিষয়টি ঘুল্লিয়া ও বিনোদপুর গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘাতের রুপ নেয়। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তার পরও উভয় গ্রামের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে। উভয় গ্রামের লোকজন মিটিং ডেকে সংঘর্ষের প্রস্ততি নিতে শুরু করেন। প্রশাসন বিষয়টি আচ করতে পেরে সমাধানের জন্য মঙ্গলবার রাতে থানায় ডাকেন উভয় পক্ষকে। আর কোনো বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবেনা মর্মে দুই পক্ষই অঙ্গিকার করে যার যার মত থানা থেকে বের হয়ে যান। রাতে বাড়ি যাবার পথে যশপুর পৌছলে ঘুল্লিয়া গ্রামের লোকজন বিনোদপুর গ্রামের রাজিব (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে মারাত্বক আহত করে। তাকে প্রথমে মাগুরা পরে ঢাকার কমফোর্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাজিব বিনোদপুর গ্রামের ওয়াজেদ আলী বিSসের ছেলে।
গত মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজিবের উপর হামলার পর তার মৃত্যুর গুজবে ফুসে মধ্যরাত থকে ভোররাত প্রর্যন্তু বিনোদপুর বাজারেঘুল্লিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী এমন ২৫টি দোকান ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট তান্ডব চালানো হয়।
আরও পড়ুনঃ মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে তিন যুবককে গ্রেপ্তার
এ বিষয়ে মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অসিত কুমার রায় বলেন, ‘ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলার বিষয়টি শুধুমাত্র ইস্যু, মূলত: দুই গ্রামবাসীর মধ্যকার পূর্ববিরোধের জেরে এসব অপ্রতাশিত ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন রাখা আছে।’
প্রিন্ট