ঢাকা , শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo সংস্কারের অভাবে ভাঙা সেতু দিয়ে চলছে যানবাহন Logo দৌলতপুরে অস্ত্র মামলার পলাতক আসামি গ্রেফতার Logo আগামীকালের পর থেকে যদি কারো ঘরে দেশীয় অস্ত্র পাওয়া যায়, তার অবস্থা হবে ভয়াবহঃ -সহকারী পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান শাকিল Logo ফরিদপুর সদর উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত, আহত ৫ Logo সমাজসেবার বিশেষ অবদানে সম্মাননা স্মারক পেলেন দৌলতদিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান রহমান মন্ডল Logo তানোরে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর সমাপনী Logo খোকসায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে এমপি আব্দুর রউফ Logo লালপুরে প্রেমিককে কুপিয়ে জখম, প্রেমিকা আটক Logo গোপালগঞ্জে যাত্রীবাহী মাহেন্দ্র ও ট্রলির সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ৪ Logo নগরকান্দায় প্রবীণ গ্রাম্য ডাক্তারকে পিটিয়ে আহত করলো কথিত সাংবাদিক
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

আলফাডাঙ্গায় সাংবাদিক পিটিয়ে জখম করলো পৌর মেয়রের ভাই

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় স্থানীয় সাংবাদিক মুজাহিদুল ইসলাম নাঈমকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছেন পৌর মেয়রের ভাই ও তার অনুসারীরা। সোমবার দুপুরে আলফাডাঙ্গার স্থানীয় পরিবহণ বাসস্টান্ডে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। মুজাহিদ ঢাকাটাইমস পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাংগাঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক মুজাহিদকে মারধরের ঘটনায় আলফাডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র সাইফুর রহমান সাইফারের ভাই জাপান মোল্লা ও তার পাঁচজন-ছয়জন সহযোগীরা জড়িত। ঘটনার সময় মুজাহিদকে লোহার রড, স্ট্যাম্প, দেশিয় অস্ত্র-সস্ত্র দিয়ে পেটানো হয়। এসময় স্থানীয়রা মুজাহিদকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাদের ওপর চড়াও হয় দুর্বৃত্তরা। এতে বেশ ক’জন আহত হন।

স্থানীয় থানা পুলিশ বলছে, এই ঘটনায় জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে; যিনি সাংবাদিক মুজাহিদকে মারধরে সহযোগীতা করেছিলেন। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আলফাডাঙ্গার রাজধানী পরিবহনের কাউন্টারে টিকেট কিনতে যান রমিজ নামের এক যুবক। তিনি ঢাকার একটি টিকেটের দাম পরিশোধ করে বাসে ওঠেন। বাস ছাড়ার আগ মূহুর্তে ‘ক্যাশ কাউন্টার’ থেকে বলা হয় রমিজ টিকিটের টাকা দেননি। তাই তাকে ঢাকায় যেতে দেয়া হবে না। বিষয়টি জানিয়ে নাঈমের সহযোগীতা চান রমিজ। ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টির মিমাংসা করার কথা বলতেই সাংবাদিক মুজাহিদের ওপর চড়াও হয় কাউন্টারের ম্যানেজার জাপান ও তার সহযোগীরা। জাপান স্থানীয় পৌর মেয়র সাইফারের ছোট ভাই। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে মুজাহিদকে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এসময় পাশে থাকা লোকজন এগিয়ে এলে তাদের উপরও চড়াও হন জাপান ও সহযোগিরা।

আরও পড়ুনঃ কুষ্টিয়ায় খুনের মামলার আসামিকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৪

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক মুজাহিদকে নির্যাতনকারী জাপান মোল্লা তার স্ত্রী সোহানা বেগমকে বেধড়ক মারপিট করে আহত করেন। পরে তাকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ৭ জুন উপজেলার কুসুমদি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় সোহানার মৃত্যু হয়। পরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে চালিয়ে দেওয়া হয়।

আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সেকেন্দার আলম বলেন, ‘আমি ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি মুজাহিদকে দুর্বৃত্তরা লোহার রড, কাঠের বাট্যাম দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার হাত ও পায়ে বেশ জখম হয়েছে। পরে এক্সরে করা হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকরা তাকে ফরিদপুরে মেডিকেলে রেফার্ড করছেন৷’

সাংবাদিক মুহাজিদকে হত্যার উদ্দেশ্যেই এমন মারপিট করা হয়েছে জানিয়েছে স্থানীয় এই সাংবাদিক নেতা বলেন, ‘তাকে মেরে ফেলার জন্য ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয়রা এগিয়ে আসায় তিনি প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অবহিত করা হয়েছে।’

আরও পড়ুনঃ নড়াইলের লোহাগড়ায় মোক্তার আলী নামে একজনকে পিটিয়ে হত্যা

এদিকে স্থানীয় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন সাংবাদিকরা। তারা বলছেন, এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। দ্রুত প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।

মধুখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কর বলেন, ‘ঘটনা জানার পর পরই আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এই ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। ভুক্তভোগী অভিযোগ দিলে মামলা হিসেবে নেওয়া হবে। সাংবাদিক নির্যাতনের সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

সাংবাদিকের উপর হামলার বিষয়ে ফরিদপুরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ( ডিসি) অতুল সরকার জানিয়েন, ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলফাডাঙ্গাকে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সংস্কারের অভাবে ভাঙা সেতু দিয়ে চলছে যানবাহন

error: Content is protected !!

আলফাডাঙ্গায় সাংবাদিক পিটিয়ে জখম করলো পৌর মেয়রের ভাই

আপডেট টাইম : ০৪:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ অগাস্ট ২০২২

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় স্থানীয় সাংবাদিক মুজাহিদুল ইসলাম নাঈমকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছেন পৌর মেয়রের ভাই ও তার অনুসারীরা। সোমবার দুপুরে আলফাডাঙ্গার স্থানীয় পরিবহণ বাসস্টান্ডে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। মুজাহিদ ঢাকাটাইমস পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাংগাঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক মুজাহিদকে মারধরের ঘটনায় আলফাডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র সাইফুর রহমান সাইফারের ভাই জাপান মোল্লা ও তার পাঁচজন-ছয়জন সহযোগীরা জড়িত। ঘটনার সময় মুজাহিদকে লোহার রড, স্ট্যাম্প, দেশিয় অস্ত্র-সস্ত্র দিয়ে পেটানো হয়। এসময় স্থানীয়রা মুজাহিদকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাদের ওপর চড়াও হয় দুর্বৃত্তরা। এতে বেশ ক’জন আহত হন।

স্থানীয় থানা পুলিশ বলছে, এই ঘটনায় জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে; যিনি সাংবাদিক মুজাহিদকে মারধরে সহযোগীতা করেছিলেন। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আলফাডাঙ্গার রাজধানী পরিবহনের কাউন্টারে টিকেট কিনতে যান রমিজ নামের এক যুবক। তিনি ঢাকার একটি টিকেটের দাম পরিশোধ করে বাসে ওঠেন। বাস ছাড়ার আগ মূহুর্তে ‘ক্যাশ কাউন্টার’ থেকে বলা হয় রমিজ টিকিটের টাকা দেননি। তাই তাকে ঢাকায় যেতে দেয়া হবে না। বিষয়টি জানিয়ে নাঈমের সহযোগীতা চান রমিজ। ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টির মিমাংসা করার কথা বলতেই সাংবাদিক মুজাহিদের ওপর চড়াও হয় কাউন্টারের ম্যানেজার জাপান ও তার সহযোগীরা। জাপান স্থানীয় পৌর মেয়র সাইফারের ছোট ভাই। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে মুজাহিদকে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এসময় পাশে থাকা লোকজন এগিয়ে এলে তাদের উপরও চড়াও হন জাপান ও সহযোগিরা।

আরও পড়ুনঃ কুষ্টিয়ায় খুনের মামলার আসামিকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৪

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক মুজাহিদকে নির্যাতনকারী জাপান মোল্লা তার স্ত্রী সোহানা বেগমকে বেধড়ক মারপিট করে আহত করেন। পরে তাকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ৭ জুন উপজেলার কুসুমদি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় সোহানার মৃত্যু হয়। পরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে চালিয়ে দেওয়া হয়।

আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সেকেন্দার আলম বলেন, ‘আমি ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি মুজাহিদকে দুর্বৃত্তরা লোহার রড, কাঠের বাট্যাম দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার হাত ও পায়ে বেশ জখম হয়েছে। পরে এক্সরে করা হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকরা তাকে ফরিদপুরে মেডিকেলে রেফার্ড করছেন৷’

সাংবাদিক মুহাজিদকে হত্যার উদ্দেশ্যেই এমন মারপিট করা হয়েছে জানিয়েছে স্থানীয় এই সাংবাদিক নেতা বলেন, ‘তাকে মেরে ফেলার জন্য ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয়রা এগিয়ে আসায় তিনি প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অবহিত করা হয়েছে।’

আরও পড়ুনঃ নড়াইলের লোহাগড়ায় মোক্তার আলী নামে একজনকে পিটিয়ে হত্যা

এদিকে স্থানীয় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন সাংবাদিকরা। তারা বলছেন, এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। দ্রুত প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।

মধুখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কর বলেন, ‘ঘটনা জানার পর পরই আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এই ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। ভুক্তভোগী অভিযোগ দিলে মামলা হিসেবে নেওয়া হবে। সাংবাদিক নির্যাতনের সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

সাংবাদিকের উপর হামলার বিষয়ে ফরিদপুরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ( ডিসি) অতুল সরকার জানিয়েন, ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলফাডাঙ্গাকে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।