সন্ত্রাসীদের হাতুড়িপেটায় কলেজ শিক্ষার্থী সাজেদুর রহমান সিফাত (১৮) হত্যাকান্ডে ক্ষোভে ফুসছে পাংশার হাবাসপুর ইউপির কাচারীপাড়া গ্রামবাসী। বুধবার ১৩ জানুয়ারী রাত ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত সিফাত কাচারীপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম প্রামানিকের ছেলে। সে এ বছর পাংশা সরকারি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করেছে। ভারতে ফটোগ্রাফির উপর লেখাপড়া করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল সিফাত। এ লক্ষ্যে দক্ষতা অর্জনে ঢাকায় একটি ইংলিশ মিডিয়াম কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয় সে এবং কয়েকদিন আগে বাড়িতে আসে।
মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে চরঝিকড়ী গালর্স স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত ব্যাডমিন্টন খেলা দেখে বন্ধু একই গ্রামের স্বপন মন্ডলের সাথে মোটরসাইকেল যোগে কাচারীপাড়া গ্রামের বাড়ীতে ফেরার পথে বাড়ীর অদূরে মধ্য কাচারীপাড়া দোতলা মসজিদের সামনে পাকা রাস্তার উপর গাছের গুঁড়ি ফেলে সন্ত্রাসীরা মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে তাদের লক্ষ্য করে ইট ছুড়ে মারে। বেগতিক দেখে স্বপন দ্রুত মোটরসাইকেল থেকে নেমে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা সিফাতকে হাতুড়ি ও বাটাম দিয়ে মারপিট এবং কিল-ঘুষিসহ লাথি দিতে থাকলে সিফাত চিৎকার করতে থাকেন।
চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এলাপাতাড়ি মারপিটের ফলে সিফাতের মাথা, চোখ-মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা-ফাটা, রক্তাক্ত জখম হয়। ঘটনার রাতেই মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে প্রথমে পাংশা হাসপাতালে এবং পরবর্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে বুধবার দুপুরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে রাত ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এলাকায় সিফাতের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে। শোকে কাতর হয় নিহতের পরিবার ও স্বজনেরা।
এদিকে, পাংশা থানা পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। পাংশা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মাদ শাহাদাত হোসেন বলেন, সামাজিক পূর্ব দ্ব›েদ্বর জের ধরে ঘটনাচক্রে সিফাত মারা যায়। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে এবং এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখতে পুলিশের টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
প্রিন্ট