ঢাকা , বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo তানোর বিএনপির নেতৃত্বে হযরতকে দেখতে চাই তৃণমুল Logo মোহনপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা Logo ফরিদপুরে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত Logo রূপগঞ্জে দুই সাংবাদিকের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ Logo আজ খোকসা হানাদার মুক্ত দিবসঃ পালিত হবে যথাযজ্ঞ মর্যাদা Logo দৌলতপুরে জাল নোট প্রচলন প্রতিরোধে ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত Logo মধুখালীতে নবাগত ইউএনও’র যোগদান Logo বহুলীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বন্যা পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে করনীয় শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo শালিখায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র‍্যালি অনুষ্ঠিত Logo প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ৬ দিনব্যাপী বিষয়ভিত্তিক বাংলা প্রশিক্ষণ সম্পন্ন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

নিজের ফাঁসি চাইলেন আওয়ামী লীগ নেত্রী

জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষোভ, হতাশা ও কষ্ট নিয়ে ময়মনসিংহের এক আওয়ামী লীগ নেত্রী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ‘আমার ফাঁসি চাই’।

এমন ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে আলোচনার ঝড় তোলা নেত্রী হলেন- ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নাজনীন আলম।

জানা যায়, উপ-নির্বাচন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হন তিনি। পরবর্তীতে সংরক্ষিত আসনে এমপির মনোনয়নপত্র জমা দেন। এবারও ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি তার। আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনে মনোনীত ৪১ জনের তালিকায় নেই তার নাম।

এ বিষয়ে জানতে নাজনীন আলমের মোবাইলে কল দিলে তার স্বামী ফেরদৌস আলম ফোন রিসিভ করে বলেন, নাজনীন আলম হাসপাতালে গেছে। মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় হাজারো নেতাকর্মী-সমর্থকদের বারবার আশাহতের বিষয়টি তুলে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

najnin-alom

‘আমার ফাঁসি চাই’ মর্মে ফেসবুক স্ট্যাটাস নাজনীন আলম দিয়েছেন জানিয়ে ফেরদৌস আলম বলেন, আপনারা জানেন আমার স্ত্রী ও আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মানুষ। সাধারণ মানুষের সুখে-দুঃখে মিশে আছি। দলের জন্য জীবনের যা অর্জন ছিল সব দিয়ে দিয়েছি। এরপরও আমরা কী পেলাম আপনারাই বলেন।

বারবার মনোনয়ন না পাওয়ায় নাজনীন শনিবার রাত ৭টা ১১ মিনিটের দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেন ‘আমার ফাঁসি চাই’। ফাঁসির কারণ হিসেবে ভুল ও অপরাধের আট শর্তের বর্ণনাও দেন তিনি। নাজনীন আলমের ফেসবুকের মন্তব্য পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।

‘আমার ফাঁসি চাই’

১) কেন হাইকমান্ডের আশ্বাসকে সরল মনে বিশ্বাস করেছিলাম।

২) এলাকাবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে থাকার প্রয়োজন কেন অনুভব করেছিলাম!

৩) এমপি-সিনিয়র কোনো নেতার পরিবারের সদস্য কেন আমি হলাম না।

৪) কেন দলের নাম ভাঙিয়ে একটি পয়সা রোজগারের ধান্ধা করিনি।

৫) কেন দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে দিনে দিনে নিঃস্ব হতে গেলাম!

৬) কেন জনসমর্থন অর্জনের চেষ্টা করেছিলাম।

৭) কেন তদবির-তেলবাজি ঠিকমতো করতে পারলাম না।

৮) কেন সমর্থকদের বারবার কাঁদাচ্ছি। সম্ভবত, এ সবই আমার ভুল-অপরাধ। এর জন্য আমার শাস্তি হওয়া উচিত।

najnin-alom

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম। ওই নির্বাচনে তিনি মনোনয়নবঞ্চিত হন। তখন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পান সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির। স্বামী মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী হন তার স্ত্রী নাজনীন আলম। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক। সেই থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় হন নাজনীন আলম। ছুটে চলেন তৃণমূল মানুষের দ্বারপ্রান্তে। সেই নির্বাচনে নাজনীন আলমের হরিণ মার্কা পরাজিত হলেও নির্যাতন-নিপীড়নেও মাঠ ছাড়েননি তিনি। ‘হরিণ’ আখ্যায় নাজনীন সমর্থকদের অনেকে হামলা-মামলার শিকার হন।

তাঁতী লীগ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনসহ নানা সংগঠনের ব্যানারে রাজনীতির মাঠে সেই সময় থেকে সরব ছিলেন নাজনীন আলম। সমর্থক ও দলীয় অসচ্ছল, ত্যাগী নেতাকর্মীদের দুঃসময়ে পাশেও দাঁড়ান তিনি। ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির প্রয়াত হওয়ার পর উপ-নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন চান তিনি। সেবারও মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। কিন্তু দলীয় নেতাকর্মী ও হাইকমান্ডের চাপের মুখে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন নাজনীন আলম।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

তানোর বিএনপির নেতৃত্বে হযরতকে দেখতে চাই তৃণমুল

error: Content is protected !!

নিজের ফাঁসি চাইলেন আওয়ামী লীগ নেত্রী

আপডেট টাইম : ১২:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক : :

জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষোভ, হতাশা ও কষ্ট নিয়ে ময়মনসিংহের এক আওয়ামী লীগ নেত্রী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ‘আমার ফাঁসি চাই’।

এমন ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে আলোচনার ঝড় তোলা নেত্রী হলেন- ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নাজনীন আলম।

জানা যায়, উপ-নির্বাচন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হন তিনি। পরবর্তীতে সংরক্ষিত আসনে এমপির মনোনয়নপত্র জমা দেন। এবারও ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি তার। আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনে মনোনীত ৪১ জনের তালিকায় নেই তার নাম।

এ বিষয়ে জানতে নাজনীন আলমের মোবাইলে কল দিলে তার স্বামী ফেরদৌস আলম ফোন রিসিভ করে বলেন, নাজনীন আলম হাসপাতালে গেছে। মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় হাজারো নেতাকর্মী-সমর্থকদের বারবার আশাহতের বিষয়টি তুলে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

najnin-alom

‘আমার ফাঁসি চাই’ মর্মে ফেসবুক স্ট্যাটাস নাজনীন আলম দিয়েছেন জানিয়ে ফেরদৌস আলম বলেন, আপনারা জানেন আমার স্ত্রী ও আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মানুষ। সাধারণ মানুষের সুখে-দুঃখে মিশে আছি। দলের জন্য জীবনের যা অর্জন ছিল সব দিয়ে দিয়েছি। এরপরও আমরা কী পেলাম আপনারাই বলেন।

বারবার মনোনয়ন না পাওয়ায় নাজনীন শনিবার রাত ৭টা ১১ মিনিটের দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেন ‘আমার ফাঁসি চাই’। ফাঁসির কারণ হিসেবে ভুল ও অপরাধের আট শর্তের বর্ণনাও দেন তিনি। নাজনীন আলমের ফেসবুকের মন্তব্য পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।

‘আমার ফাঁসি চাই’

১) কেন হাইকমান্ডের আশ্বাসকে সরল মনে বিশ্বাস করেছিলাম।

২) এলাকাবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে থাকার প্রয়োজন কেন অনুভব করেছিলাম!

৩) এমপি-সিনিয়র কোনো নেতার পরিবারের সদস্য কেন আমি হলাম না।

৪) কেন দলের নাম ভাঙিয়ে একটি পয়সা রোজগারের ধান্ধা করিনি।

৫) কেন দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে দিনে দিনে নিঃস্ব হতে গেলাম!

৬) কেন জনসমর্থন অর্জনের চেষ্টা করেছিলাম।

৭) কেন তদবির-তেলবাজি ঠিকমতো করতে পারলাম না।

৮) কেন সমর্থকদের বারবার কাঁদাচ্ছি। সম্ভবত, এ সবই আমার ভুল-অপরাধ। এর জন্য আমার শাস্তি হওয়া উচিত।

najnin-alom

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম। ওই নির্বাচনে তিনি মনোনয়নবঞ্চিত হন। তখন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পান সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির। স্বামী মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী হন তার স্ত্রী নাজনীন আলম। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক। সেই থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় হন নাজনীন আলম। ছুটে চলেন তৃণমূল মানুষের দ্বারপ্রান্তে। সেই নির্বাচনে নাজনীন আলমের হরিণ মার্কা পরাজিত হলেও নির্যাতন-নিপীড়নেও মাঠ ছাড়েননি তিনি। ‘হরিণ’ আখ্যায় নাজনীন সমর্থকদের অনেকে হামলা-মামলার শিকার হন।

তাঁতী লীগ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনসহ নানা সংগঠনের ব্যানারে রাজনীতির মাঠে সেই সময় থেকে সরব ছিলেন নাজনীন আলম। সমর্থক ও দলীয় অসচ্ছল, ত্যাগী নেতাকর্মীদের দুঃসময়ে পাশেও দাঁড়ান তিনি। ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির প্রয়াত হওয়ার পর উপ-নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন চান তিনি। সেবারও মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। কিন্তু দলীয় নেতাকর্মী ও হাইকমান্ডের চাপের মুখে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন নাজনীন আলম।


প্রিন্ট