ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নে গোহাইলবাড়িতে জোড়া খুনের ঘটনায় আসামী পক্ষে মানববন্ধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩.০৬.২২) সকালে উপজেলার সাতৈর বাজারে ঘোষপুর সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভাড়াকরা লোক দিয়ে এ মানববন্ধন করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
হত্যা মামলার এক নং আসামী ঘোষপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক পূবিলা গ্রামের এস এম ফারুক হোসেন এবং ৪ নং আসামী আলফাডাঙ্গা উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোহাইলবাড়ি গ্রামের মৃত বজলুর রহমানের ছেলে মো. আরিফুর রহমানে উদ্যোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করান বলে জানা গেছে। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জোড়া খুনের ঘটনার ১নম্বর আসামী সাবেক চেয়ারম্যান এস এম ফারুক হোসেন, ঘোষপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রাজু আহমেদ রাজা, ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. ইজাজুল করিম মিন্টু, ঘোষপুরের বাসিন্দা মো. ছিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।
জানা যায়, জোড়া খুনের মামলার আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে সাময়িক জামিন এনে হত্যা মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এবং দোষীদের রক্ষা করতে এ মানববন্ধন করা হয়েছে। মানববন্ধনে মামলার আসামী ও তাদের সঙ্গীরা মামলার বাদি সম্পর্কে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন।
উল্লেখ্য উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের স্থানীয় গোহাইলবাড়ি ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আহমেদের (৯৪) সাথে গোহাইলবাড়ি গ্রামের সাবেক কৃষি কর্মকর্তা মৃত বজলুর রহমান ওরফে বজলু খালাসির এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিলো।
গত ১৬ এপ্রিল স্থানীয় গোহাইলবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে আলাউদ্দিন আহমেদের বড় ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা জামান সিদ্দিকী ও মৃত বজলুর রহমান ওরফে বজলু খালাসির ছেলে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমানের মধ্যে দুই প্যানেলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোস্তাফার প্যানেল বিজয়ী হয়ে পুনরায় তিনি সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে। গত ঈদুল ফিতরের দিন (৩ মে) দুপুরের দিকে মোস্তফা জামানসহ নিহত-আহতরা গোহাইলবাড়ি বাজারের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে চা খাচ্ছিলো।
আরও পড়ুনঃ নওগাঁর আত্রাইয়ে মাছ ধরার উপকরন বিক্রির ধুম
এ সময় আসামিরা হতাহতদের উপর রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে মোস্তফার চাচাতো ভাই আকিদুল মোল্যা (৪৫) ও কৃষকলীগ নেতা খায়রুল শেখকে (৪৭) দিবালোকে হত্যা করে। এ ঘটনায় মোস্তফার আপন দুইভাই শারিরীক প্রতিবন্ধী মাসুদ আহমেদ (৪৭) ও আলমগীর আহমেদসহ (৫০) সহ ৮জন আহত হয়।
হত্যাকান্ড ঘটনার পাঁচদিন পর থানায় নিহতদের চাচাতো ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা জামান সিদ্দিকী বাদি হয়ে ৮১ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক আরো ৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
প্রিন্ট