উত্তরাঞ্চলের মৎস্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার গুলোতে মাছ ধরার চাঁই, চারু , খোলসানি, চৌকা ও ভাঁইর বিক্রির ধুম পরেছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার আত্রাই ছোট যমুনা ও নাগর নদীতে পানি বারতে শুরু করেছে। সেই সাথে খাল ও বিলে পানি বারছে।
ফলে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে দেশি প্রজাতির ছোট জাতের মাছ ধরার সহজলভ্য প্রচিনতম উপকরন বাঁশের তৈরী চাঁই, চারু , খোলসানি, চৌকা ও ভাঁইর বিক্রির ধুম পরেছে। উপজেলার হাট বাজারগুলোতে প্রতিদিন শতশত চাঁই, চারু , খোলসানি, চৌকা ও ভাঁইর বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার ঐতিয্যবাহি সাপ্তাহিক আহসানগঞ্জ হাট প্রতি বৃহস্পতিবার বসে।এই হাটে চাঁই, চারু , খোলসানি, চৌকা ও ভাঁইর পট্টিতে বেচা কেনার জন্য মানুষের উপস্থিতি চোখে পরার মত।
জানা গেছে উপজেলার সুবর্ণকুন্ডু, মিরাপুর, ডাঙ্গাপাড়া, সিংসারা সহ পাসের রাণীনগর উপজেলার ঝিনা, খট্টেস্বর, কৃষ্ণপুর বিভিন্ন গ্রামের ঋষি সপ্রদায়ের লোকেরা তাদের স্ত্রী পুত্র কন্যা সহ পরিবারের সকল সদস্য মিলে এই মৌসুমে তাদের নিপুণ হাতে মাছ ধরার উপকরন গুলি তৈরী করে বাড়ি থেকে নিয়ে এসে উপজেলার আহসানগঞ্জ, কাসিয়াবাড়ী, সুটকিগাছা , পাইকরা, বান্দাইখারা, মির্জাপুর সহ বিভিন্ন হাটে বিক্রির জন্য উপকরনাদী সাজিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
বাঁশ কটের সুতা ও তাল গাছের আঁশ দিয়ে তৈরী এসব মাছ ধরার উপকরন মানের দিক দিয়ে ভাল হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অঞ্চল ভেদে বিশেষ করে হাওর বাওর অঞ্চলে মাছ শিকারিরা এখান থেকে পাইকারী মুল্যে নিয়ে যায়। ফলে এ পেশায় জরিত পরিবারগুলো বর্ষা মৌসুমে এর কদর বেশি ও যথাযত মুল্য পাওয়ায় মাত্র ২/৩ মাসেই মাছ ধরার উক্ত উপকরনগুলো বিক্রয় করে তারা প্রায় বছরের খোরাক ঘড়ে তুলে নেয়।
আরও পড়ুনঃ মাগুরার ভিটাশাইর এলাকায় শালিস বৈঠকে রাজন লস্কারের উপর অর্তকিত হামলা
খোলসানির কারীগরেরা এসব খোলসানি তৈরীতে প্রকার ভেদে খরচ হয় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। বিক্রি হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। এতে খুব বেশি লাভ না হলেও পৈত্রিক এ পেশা ছারতে তারা নারাজ। আধুনিকতার উৎকষ্যে তৈরী ছোট জাতের মাছ ধরার সুতি, ভাদায় ও কারেন্ট জালের দাপটের কারনে দেশি প্রযুক্তির বাঁশের তৈরী খোলসানি সামগ্রি এমনীতেই টিকে থাকতে পারছেনা। কিন্তু জীবন বাচানোর তাগিদে তারা একেবারে কর্মহীন থাকতেও চায়না।
তবে সরকারী বেসরকারী পৃষ্ঠপষকতা ও সহযোগিতা পেলে মৌসুমের আগে বেশি পরিমান খোলসানি ও মাছ ধরার অন্যান্য উপকরনাদি মজুত করতে পারলে ভরা মৌসুমে বেশি দামে বিক্রি হলে লাভ ভাল হয়। এ ব্যাপারে উপজেলার একাধিক চাঁই, চারু , খোলসানি, চৌকা ও ভাঁইর বিক্রেতা জানান এসব উপকরন তৈরীর সামগ্রির দাম আগের চেয়ে অনেক বেশি। তাই আগেরমত আর বেশি লাভ হয়না। দীর্ঘ দিন থেকে বাপদাদার সাথে এ ব্যবসায় জরিত তাই ছাড়তেও পারছেনা। তারা আরো জানান বর্ষা এবার ধীর গতিতে শুরু হওয়ায় চাঁই, চারু , খোলসানি, চৌকা ও ভাঁইর এর কদরও বেরেছে। হাট বাজার গুলোতেও পরেছে বিক্রির ধুম।
প্রিন্ট