ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কোটচাঁদপুরে ছোট ভাইকে মামলা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে বড় দুই ভাই জেলহাজতে!

ছোট ভাইকে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেছেন বড় দুই ভাই। এরা হলেন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সলেমানপুর বাজারপাড়ার বাসিন্দা এটিএম মুসা ছেলে, উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহবায়ক কোটচাঁদপুর ওয়াকফ ষ্ট্রেটের সাবেক মোতোয়াল্লী মাসুদ রানা পলাশ (৫৪) আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল রানা (৫২) তাদের ছোট ভাই হচ্ছেন পারভেজ রানা বাবু (৪০) বড় দুই ভাই ছোট ভাই পারভেজ রানার বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির মামলা করেন। আদালতের বিচার শেষে সেই মামলা মিথ্যা প্রমান হয়। আর মিথ্যা মামলা করে ছোট ভাইকে হয়রানী অভিযোগে আদালতের নির্দেশে বড় দুই ভায়ের নামে পৃথক দুইটি মামলা রুজু করা হয়েছে। যে মামলায় তারা দুইভাই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

ছোট ভাই পারভেজ রানা বাবু জানান, তারা তিন ভাই আর দুই বোন। বড় ভাই মাসুদ রানা ব্যবসার প্রয়োজনে তার নিকট থেকে ২০১৬ সালে ১৭ লাখ টাকা ধার হিসেবে গ্রহন করেন। পাশাপাশি বড় ভায়ের কোনো ব্যাংক একাউন্ট না থাকায় ব্যবসা পরিচালনার স্বার্থে দুইটি একাউন্টের টি চেকের পাতা নেন। শুধুমাত্র ব্যবসার প্রয়োজনে এই চেকের পাতা তিনি ব্যবহার করার কথা ছিল ২০১৬ সালের জুন তাদের মধ্যে সংক্রান্ত একটি ব্যবসায়ীক চুক্তিও হয়।

তিনি আরো জানান, তাদের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল সেখানে উল্লেখ ছিল এই চেকের পাতা বড় ভাই ব্যবসায়ীক কাজে ব্যবহার করবেন, ব্যাবহার না হলে ফেরত দিবেন। আর ধারের টাকা দেড় বছর পর ফেরত দিবেন।

আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে জসীম পল্লী মেলা শুরু

পারভেজ রানা জানান, তাদের দুই ভায়ের মধ্যে এই চুক্তি থাকার পরও বড় ভাই মাসুদ রানা ধারের ১৭ লাখ টাকা না দেওয়ার জন্য নানা ফন্দি আটতে শুরু করেন। প্রথমে টাকা ফেরত দেবেন না বলে নানা স্থানে প্রচার দেন। পরে ২০১৮ সালের ৩১ মে বড় ভাই মাসুদ রানা নিজে একটি চেকের পাতা ব্যবহার করে লাখ ১৫ হাজার টাকা পাওনা দেখিয়ে মেঝো ভাই সোহেল রানাকে দিয়ে আরেকটি চেকের পাতায় লাখ টাকা মোট ১৭ লাখ ১৫ হাজার টাকা পাওনা দেখিয়ে ঝিনাইদহ আদালতে দুইটি মামলা করেন।

পারভেজ রানা বিরুদ্ধে করা দুইটি মামলা চলাকালে বাদিপক্ষ আদালতে মিথ্যা সাক্ষি দেন এবং কিছু জাল কাগজপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে বিচার শেষে মামলা দুইটি মিথ্যা প্রমানিত হয়। ঝিনাইদহ যুগ্ম দায়রা জজ এর বিচারক মোঃ মাসুদ আলী ¤প্রতি মামলার রায় ঘোষনা করেন। রায়ে মিথ্যা সাক্ষি দেওয়া জাল কাগজপত্র আদালতে দাখিলের অপরাধে আদালত বাদি হয়ে দুই ভায়ের বিরুদ্ধে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেন। যে মামলা দুটিতে বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন।

এছাড়া আদালত ছোট ভাই পারভেজ রানা দায়েরকরা মামলায় বড় ভাই মাসুদ রানা বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।

পারভেজ রানা জানান, তাকে ফাঁসাতে গিয়ে বড় দুই ভাই নিজেরাই ফেঁসে গেছেন। এখন কারাগারে বসে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকী দিচ্ছেন। তিনি ভাইদের হয়রানী করতে চাননি, তাদের হয়রানীর হাত থেকে বাঁচতে মামলা দায়ের করেছিলেন। সেই মামলায় বড় ভায়ের সাজা হয়েছে। কিন্তু তারা ছোট ভাইকে ফাঁসাতে যে মামলা করেছিল সেই মামলায় তিনি খালাস পেয়েছেন। তাদের জালিয়াতির কারনে আদালত নিজেই বাদি হয়ে দুই ভায়ের নামে দুইটি মামলা করেছেন


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

কোটচাঁদপুরে ছোট ভাইকে মামলা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে বড় দুই ভাই জেলহাজতে!

আপডেট টাইম : ০৭:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০২২
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধিঃ :

ছোট ভাইকে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেছেন বড় দুই ভাই। এরা হলেন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সলেমানপুর বাজারপাড়ার বাসিন্দা এটিএম মুসা ছেলে, উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহবায়ক কোটচাঁদপুর ওয়াকফ ষ্ট্রেটের সাবেক মোতোয়াল্লী মাসুদ রানা পলাশ (৫৪) আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল রানা (৫২) তাদের ছোট ভাই হচ্ছেন পারভেজ রানা বাবু (৪০) বড় দুই ভাই ছোট ভাই পারভেজ রানার বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির মামলা করেন। আদালতের বিচার শেষে সেই মামলা মিথ্যা প্রমান হয়। আর মিথ্যা মামলা করে ছোট ভাইকে হয়রানী অভিযোগে আদালতের নির্দেশে বড় দুই ভায়ের নামে পৃথক দুইটি মামলা রুজু করা হয়েছে। যে মামলায় তারা দুইভাই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

ছোট ভাই পারভেজ রানা বাবু জানান, তারা তিন ভাই আর দুই বোন। বড় ভাই মাসুদ রানা ব্যবসার প্রয়োজনে তার নিকট থেকে ২০১৬ সালে ১৭ লাখ টাকা ধার হিসেবে গ্রহন করেন। পাশাপাশি বড় ভায়ের কোনো ব্যাংক একাউন্ট না থাকায় ব্যবসা পরিচালনার স্বার্থে দুইটি একাউন্টের টি চেকের পাতা নেন। শুধুমাত্র ব্যবসার প্রয়োজনে এই চেকের পাতা তিনি ব্যবহার করার কথা ছিল ২০১৬ সালের জুন তাদের মধ্যে সংক্রান্ত একটি ব্যবসায়ীক চুক্তিও হয়।

তিনি আরো জানান, তাদের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল সেখানে উল্লেখ ছিল এই চেকের পাতা বড় ভাই ব্যবসায়ীক কাজে ব্যবহার করবেন, ব্যাবহার না হলে ফেরত দিবেন। আর ধারের টাকা দেড় বছর পর ফেরত দিবেন।

আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে জসীম পল্লী মেলা শুরু

পারভেজ রানা জানান, তাদের দুই ভায়ের মধ্যে এই চুক্তি থাকার পরও বড় ভাই মাসুদ রানা ধারের ১৭ লাখ টাকা না দেওয়ার জন্য নানা ফন্দি আটতে শুরু করেন। প্রথমে টাকা ফেরত দেবেন না বলে নানা স্থানে প্রচার দেন। পরে ২০১৮ সালের ৩১ মে বড় ভাই মাসুদ রানা নিজে একটি চেকের পাতা ব্যবহার করে লাখ ১৫ হাজার টাকা পাওনা দেখিয়ে মেঝো ভাই সোহেল রানাকে দিয়ে আরেকটি চেকের পাতায় লাখ টাকা মোট ১৭ লাখ ১৫ হাজার টাকা পাওনা দেখিয়ে ঝিনাইদহ আদালতে দুইটি মামলা করেন।

পারভেজ রানা বিরুদ্ধে করা দুইটি মামলা চলাকালে বাদিপক্ষ আদালতে মিথ্যা সাক্ষি দেন এবং কিছু জাল কাগজপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে বিচার শেষে মামলা দুইটি মিথ্যা প্রমানিত হয়। ঝিনাইদহ যুগ্ম দায়রা জজ এর বিচারক মোঃ মাসুদ আলী ¤প্রতি মামলার রায় ঘোষনা করেন। রায়ে মিথ্যা সাক্ষি দেওয়া জাল কাগজপত্র আদালতে দাখিলের অপরাধে আদালত বাদি হয়ে দুই ভায়ের বিরুদ্ধে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেন। যে মামলা দুটিতে বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন।

এছাড়া আদালত ছোট ভাই পারভেজ রানা দায়েরকরা মামলায় বড় ভাই মাসুদ রানা বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।

পারভেজ রানা জানান, তাকে ফাঁসাতে গিয়ে বড় দুই ভাই নিজেরাই ফেঁসে গেছেন। এখন কারাগারে বসে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকী দিচ্ছেন। তিনি ভাইদের হয়রানী করতে চাননি, তাদের হয়রানীর হাত থেকে বাঁচতে মামলা দায়ের করেছিলেন। সেই মামলায় বড় ভায়ের সাজা হয়েছে। কিন্তু তারা ছোট ভাইকে ফাঁসাতে যে মামলা করেছিল সেই মামলায় তিনি খালাস পেয়েছেন। তাদের জালিয়াতির কারনে আদালত নিজেই বাদি হয়ে দুই ভায়ের নামে দুইটি মামলা করেছেন


প্রিন্ট