ঢাকা , শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo পাবনার চাটমোহরে ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন হার্ভেস্টার বিতরণ Logo বারান্দায় টিনের ছাউনির নিচে চলছে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা Logo বিদেশী পিস্তল ও ম্যাগাজিন সহ ০১ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ Logo চরভদ্রাসন জমে উঠেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, ভোট প্রার্থনায় ব্যাস্ত প্রার্থীরা Logo সালথায় বালু উত্তোলন ও বনাঞ্চল উজাড় করে মাটি বিক্রির দায়ে জরিমানা Logo তানোরে হিমাগারে রাখা আলুতে গাছ Logo জমি বাড়ি থেকেও আবাসন ঘর বাগিয়ে নিলেন খইমদ্দিন Logo নাগেশ্বরীতে ফার্নিচার শ্রমিক ইউনিয়নের মে দিবস পালিত Logo মুকসুদপুরে হিট স্ট্রোকে কৃষকের মৃত্যু Logo সুবর্ণচরে সংখ্যালঘুর উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বোয়ালমারীতে দেড় কোটি টাকায় নবনির্মিত রাস্তার বেহাল দশা

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা নির্মাণের এক সপ্তাহের মধ্যে ফাটল এবং এজিং ভেঙে গিয়ে হুমকির মুখে পড়েছে নির্মাণাধীন রাস্তা। রাস্তা সংস্কারের কাজ করেন ‘তাসা কনসট্রাকশন এন্টার প্রাইজ’ নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। বোয়ালমারী উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের সাতৈর বাজার থেকে ডোবরা পর্যন্ত ৪.৯৮ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৪৮ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।

রাস্তা সংস্কারের এক সপ্তাহের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে, স্থানে স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে, কোথাও কোথাও এজিং ভেঙে পুকুরে চলে গেছে। নিম্নমানের ইট, খোয়া, পাথর, বালি দেয়ার কারণে বিভিন্ন স্থানে রাস্তা উঁচু নিচু হয়ে দেবে গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাতৈর দিঘির পাড় এলাকায় রাস্তার এজিং ভেঙে দিঘিতে চলে গেছে। সোজা মোল্যার বাড়ির পাশে পিচ ফেটে গিয়ে রাস্তা দেবে গেছে। স্থানীয় লোকজন বলেন, এ রাস্তার কাজ যেভাবে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করা হয়েছে তা কত দিন ভালো থাকবে তা এখন ভাববার বিষয়।

রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান জনতা জুট মিল অবস্থিত ডোবরা এলাকায়। শত শত শ্রমিক এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। সাতৈর গ্রামের আলিম শেখ বলেন, এত খারাপ সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে যে রাস্তার উপরের পিচ সামান্য আঘাতেই উঠে যাওয়ার উপক্রম। হালকা গাড়ি চললেও বেশি দিন এ রাস্তা টিকবে না ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, রাস্তা নির্মাণের কয়েকদিন পর বিভিন্ন স্থানে গর্ত হয়ে দেবে গেছে। অনেক স্থান উঁচু নিচু হয়ে গেছে। রাস্তায় কাজ করার সময় ঠিকাদার নতুন ইট, বালু দেননি। রাস্তার পুরাতন ইট তুলে তার ওপরে পিচ ঢেলে রোলার টেনেছেন। যার ফলে রাস্তা নির্মাণ হতে না হতেই পিচ ফেটে গিয়ে উঠে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে এজিং থেকে ৪ ইঞ্চি ফাঁকা রেখে পিচ ঢালাই দেয়া হয়েছে। যেকোন সময় সম্পূর্ণ রাস্তার ক্ষতি হতে পারে। আগে রাস্তা দিয়ে দুইটা মাল গাড়ি অনায়াসে ক্রসিং করতে পারতো, রাস্তা ছোট করাতে তা এখন কষ্টকর।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। নিম্নমানের কাজ হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানানো হবে এবং এ কাজের সঠিক তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুনঃ আড়াই বছরের বেশি কারাভোগের পর ছাড়া পাচ্ছেন ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত সাবেক যুবলীগ নেতা

উপজেলা প্রকৌশলী রাশেদ ইকবাল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, কাজ নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছে। আসলে ওই স্থানের মাটি ও পরিবেশ অনেকটা খারাপ । রাস্তার পাশে অনেক পুকুর রয়েছে । যার ফলে রাস্তার সমস্যা হতে পাড়ে। আর রাস্তার ক্যাপাসিটি ১০ টন। কিন্তু রাস্তা দিয়ে ভারী যান চলাচল করার কারণে রাস্তা ভেঙে যেতে পাড়ে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সকল বিল দিয়ে দেয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিল পরিশোধ করা হয়েছে। তবে জামানত হিসাবে আমাদের কাছে ৫% টাকা জমা রয়েছে। ঠিকাদারের মোবাইল নাম্বার না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে সাব কন্ট্রাক্টার মো. আবু কালামের মুঠোফোনে (০১৯৩৪৮৬৮০৩৮) কল দিলে তাও বন্ধ পাওয়া যায়।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পাবনার চাটমোহরে ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন হার্ভেস্টার বিতরণ

error: Content is protected !!

বোয়ালমারীতে দেড় কোটি টাকায় নবনির্মিত রাস্তার বেহাল দশা

আপডেট টাইম : ১০:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ মে ২০২২

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা নির্মাণের এক সপ্তাহের মধ্যে ফাটল এবং এজিং ভেঙে গিয়ে হুমকির মুখে পড়েছে নির্মাণাধীন রাস্তা। রাস্তা সংস্কারের কাজ করেন ‘তাসা কনসট্রাকশন এন্টার প্রাইজ’ নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। বোয়ালমারী উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের সাতৈর বাজার থেকে ডোবরা পর্যন্ত ৪.৯৮ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৪৮ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।

রাস্তা সংস্কারের এক সপ্তাহের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে, স্থানে স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে, কোথাও কোথাও এজিং ভেঙে পুকুরে চলে গেছে। নিম্নমানের ইট, খোয়া, পাথর, বালি দেয়ার কারণে বিভিন্ন স্থানে রাস্তা উঁচু নিচু হয়ে দেবে গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাতৈর দিঘির পাড় এলাকায় রাস্তার এজিং ভেঙে দিঘিতে চলে গেছে। সোজা মোল্যার বাড়ির পাশে পিচ ফেটে গিয়ে রাস্তা দেবে গেছে। স্থানীয় লোকজন বলেন, এ রাস্তার কাজ যেভাবে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করা হয়েছে তা কত দিন ভালো থাকবে তা এখন ভাববার বিষয়।

রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান জনতা জুট মিল অবস্থিত ডোবরা এলাকায়। শত শত শ্রমিক এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। সাতৈর গ্রামের আলিম শেখ বলেন, এত খারাপ সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে যে রাস্তার উপরের পিচ সামান্য আঘাতেই উঠে যাওয়ার উপক্রম। হালকা গাড়ি চললেও বেশি দিন এ রাস্তা টিকবে না ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, রাস্তা নির্মাণের কয়েকদিন পর বিভিন্ন স্থানে গর্ত হয়ে দেবে গেছে। অনেক স্থান উঁচু নিচু হয়ে গেছে। রাস্তায় কাজ করার সময় ঠিকাদার নতুন ইট, বালু দেননি। রাস্তার পুরাতন ইট তুলে তার ওপরে পিচ ঢেলে রোলার টেনেছেন। যার ফলে রাস্তা নির্মাণ হতে না হতেই পিচ ফেটে গিয়ে উঠে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে এজিং থেকে ৪ ইঞ্চি ফাঁকা রেখে পিচ ঢালাই দেয়া হয়েছে। যেকোন সময় সম্পূর্ণ রাস্তার ক্ষতি হতে পারে। আগে রাস্তা দিয়ে দুইটা মাল গাড়ি অনায়াসে ক্রসিং করতে পারতো, রাস্তা ছোট করাতে তা এখন কষ্টকর।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। নিম্নমানের কাজ হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানানো হবে এবং এ কাজের সঠিক তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুনঃ আড়াই বছরের বেশি কারাভোগের পর ছাড়া পাচ্ছেন ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত সাবেক যুবলীগ নেতা

উপজেলা প্রকৌশলী রাশেদ ইকবাল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, কাজ নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছে। আসলে ওই স্থানের মাটি ও পরিবেশ অনেকটা খারাপ । রাস্তার পাশে অনেক পুকুর রয়েছে । যার ফলে রাস্তার সমস্যা হতে পাড়ে। আর রাস্তার ক্যাপাসিটি ১০ টন। কিন্তু রাস্তা দিয়ে ভারী যান চলাচল করার কারণে রাস্তা ভেঙে যেতে পাড়ে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সকল বিল দিয়ে দেয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিল পরিশোধ করা হয়েছে। তবে জামানত হিসাবে আমাদের কাছে ৫% টাকা জমা রয়েছে। ঠিকাদারের মোবাইল নাম্বার না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে সাব কন্ট্রাক্টার মো. আবু কালামের মুঠোফোনে (০১৯৩৪৮৬৮০৩৮) কল দিলে তাও বন্ধ পাওয়া যায়।