ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌর শহরের কামারগ্রামে অবস্থিত কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজ বিএনপি-জামায়াতের ইন্ধনে বারবার অস্থিতিশীল হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কলেজটির অধ্যক্ষ। শনিবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফরিদ আহমেদ এই অভিযোগ করেন।
জানা যায়, কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফরিদ আহমেদ কর্তৃক ওই কলেজের সমাজকর্ম বিষয়ের শিক্ষক রনজিৎ কুমার মণ্ডল সম্প্রতি মানসিক নিপীড়নের শিকার হন। এ ঘটনায় শিক্ষক রনজিৎ কুমার মণ্ডল মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে শিক্ষক মিলনায়তনেই স্ট্রোক করেন।
এই ঘটনার জেরে শনিবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ওই কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, সারা দেশের ন্যায় বোয়ালমারীর এই কলেজটিতেও বিএনপি-জামাতের ইন্ধনে বারবার অরাজকতা ঘটানোর চেষ্টা চলছে। আর এই সাথে কলেজের কিছু শিক্ষকও জড়িত। তিনি আরো বলেন, বিএনপি-জামাতের ওই চক্রটি কলেজে বিশৃঙ্খলা ঘটিয়ে সারা দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চায়। তারা চায় লাশের রাজনীতি।
অধ্যক্ষ আরো বলেন, শিক্ষক রনজিৎ কুমার মণ্ডল সামান্য অসুস্থ ছিলেন। তিনি স্ট্রোক করেননি। কিন্তু কলেজের শিক্ষক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন তার ফেসবুকে আইডিতে মিথ্যা স্ট্যাটাস দিয়ে কলেজের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত করেছেন। এতে কলেজের সুনাম চরমভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে।
এদিকে বিএনপি-জামাত চক্র এই ঘটনায় ফায়দা লুটছে বলে অভিযোগ করার পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলনে পাঠ করা লিখিত বক্তব্যে শিক্ষক আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধেও অধ্যক্ষ অভিযোগ তোলায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। শিক্ষক আলমগীর হোসেন মুক্তিযুদ্ধ সেক্টর কমান্ডার ফোরাম এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের বোয়ালমারী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক।
শিক্ষক রনজিৎ কুমার মণ্ডল স্ট্রোক করার পর তিনি কোন খোঁজ খবর নিয়েছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, তার বাড়ি আর আমার কোয়ার্টার পাশাপাশি। আমার বাড়ি থেকে তার বাড়ি সব সময় দেখা যায়।
গত ২৫ এপ্রিল কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে কলেজে কর্মরত শিক্ষকদের এক সভায় কলেজের ৩৫-৪০ জন শিক্ষক উপস্থিত হয়ে রনজিৎ কুমার মন্ডলের প্রতি অধ্যক্ষের আচরণের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানানোর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অধ্যক্ষ বলেন, সভায় শিক্ষকেরা আমার বিরুদ্ধে মনগড়া কথা বলেছেন। এসবের কোনো সত্যতা নেই।
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধাচারণকারীদের তিনি মানসিক টর্চার সেলে নিয়ে নিপীড়ন করেন এবং এর আগেও তিন জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনা সত্য নয়। এদিকে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেয়ার সময় বারবার তিনি সেকশন অফিসার কামরুল ইসলামকে ডাকছিলেন এবং বিভিন্ন ঘটনায় সাক্ষী মানছিলেন।
প্রিন্ট