মহামারি করোনার দীর্ঘ সময় পরে বৃহত্তর কলেবরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা। আর এই সভাকে কেন্দ্র করে জেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যে ব্যাপক তোরজোড় শুরু হয়েছে। কেউ কেউ নিজের ছবি সম্বলিত কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি দিয়ে ব্যানার, বিলবোর্ড তৈরী করে শহরের আনাচে কানাচে স্থাপন করেছে। আবার কেউ কেউ নিজেকে সভাপতি কিংবা সাধারন সম্পাদক পদ প্রত্যাশী উল্রেখ্য করে বিলবোর্ড টানিয়েছেন।
শনিবার ( ১৬ এপ্রিল) দুপুরে শহরের গোয়ালচামট হোটেল রাফেলস ইন হোটেলে এই বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হওয়ার কথা রয়েছে আওয়ামীলীগের হেভিওয়েট কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ নেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ১২ মে (সম্ভাব্য) ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে সামনে রেখে জেলা আওয়ামী লীগের এই বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ।
জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড. সবুল চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকছেন আরেক প্রেসিডিয়াম কর্নেল ফারুক খান এমপি। অন্যদের মধ্যে আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আজম এমপি, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সদস্য ইকবাল হোসেন অপু এমপি প্রমুখ।
এরই মধ্যে বর্ধিত সভার সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাসুদ হোসেন জানিয়েছেন। দুপুর দুইটার পরে এই সভা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২২ মার্চ জেলার আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে তৎকালিন কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জেলা সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের নাম ঘোষনা করেন । পরে ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর পূনাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে ফরিদপুর আওয়ামী লীগের রাজনীতির পট পরিবর্তনের (ফরিদপুর সদর আসনের এমপি খন্দকার মোশাররফের যুগের অবসান) পরে বহুদিনের কাঙ্ক্ষিত এই সম্মেলন নিয়ে গত দুই বছর ধরে গ্রুপিং, লবিং ও দৌড়-ঝাপ শুরু হয়েছে। বাকি ছিল তারিখ নির্ধারণ।
সাবেক মন্ত্রী, ফরিদপুর সদরের এমপি খন্দকার মোশাররফ হোসেনের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের পতনের পর থেকেই ফরিদপুরে আওয়ামী রাজনীতির একাধিক ধারায় বিভক্ত হয়ে পদে, বর্তমানে সেই বিভক্ত এখন দুইটি অংশে প্রকাশ ও অপ্রাশ্য ধারায় চলচে। এর একটি হলো আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদ্স্য কাজী জাফর উল্লাহ সমর্থিক অংশ এবং অপরটিতে রয়েছে অপর আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি সমর্থিত অংশ ।
আরও পড়ুনঃ সদরপুর এক মহিলা পকেট মার জনতার হাতে গণধোলাই
সম্মেলনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টিতে আসার জন্য জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রাপ্তির আশায় শহরের আনাচে-কানাচে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থী ও তার সমর্তকেরা।
ফরিদপুরে বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএম মোশাররফ হোসেন মনে করেন, এই সম্মেলনে তৃনমূলের নেতাকর্মিদের সঙ্গে যোগা যোগ রয়েছে এমন দীর্ঘদিনের পরিক্ষিত নেতাদের দিয়েই কমিটি করতে হবে, তবেই দল উকৃত হবে। শক্তিশালী হবে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত।
বর্ধিত সভার প্রসঙ্গে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাসুদ হোসেন বলেন, একটি বড় দলের সামান্য গ্রুপিং থাকতেই পারে, তবে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে কেউ সেটা প্রমাণ করা দুসাহস দেখাবে না এমটি প্রত্যাশা করি।
তিনি বলেন, এই সভায় জেলা ও উপজেলার শীর্ষ নেতারা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দলের সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরতে পারবেন, এমনকি দল চালাতে যে কোন গঠন মূলক পরামর্শ দিতে পারবেন।
এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, সভানেত্রী নির্দেশে কেন্দ্রীয় নেতারা আগামী সম্মেলনের তারিখ ঘোষনা করবেন এবং সম্মেলন সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করতে করনীয় বিষয়ে আমাদের নির্দেশ দিবেন।
প্রিন্ট