রাজধানীর খিলক্ষেতের কুড়িল ফ্লাইওভারে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইশার মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তাঁর সহপাঠীরা। মিছিল নিয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করলে বসুন্ধরা গেট এলাকায় তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। বাধা পেয়ে বসুন্ধরা গেটে বসেই মাইশা হত্যার বিচার দাবি করেন তাঁর সহপাঠীরা। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিল শেষ হয় বেলা ২টার দিকে।
বিক্ষোভ শেষ করার আগে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ চলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের যেখানে বিশ্বের দরিদ্র-অনুন্নত দেশগুলোতেও শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়ে তাদের জন্য বিশেষ পরিবহনের ব্যবস্থা রাখা হয়, সেখানে বাংলাদেশে নিয়মিত অপরিকল্পিত সড়ক অব্যবস্থাপনার কারণে এবং গণপরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহনের চাপায় শিক্ষার্থীদের প্রাণ যাচ্ছে। এ অবস্থায় নিরাপদ সড়কসহ অন্যান্য যানবাহনবিষয়ক টেকসই পরিকল্পনায় বারবার দাবি করার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সরকার বাস্তবায়ন করছে না। এভাবে চলতে থাকলে দেশে শিক্ষায়নের পরিবেশ কখনোই নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুনঃ অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটিতে নবীন বরণ ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ৮ দফা দাবি ঘোষণা করেন। তাঁদের দাবিগুলো হলোঃ ১) মাইশাকে চাপা দেওয়া কাভার্ড ভ্যানের চালককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, ২) নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরন দিতে হবে, ৩) সড়ক দুর্ঘটনা আইন সংশোধন করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান নিশ্চিত করতে হবে, ৪) বেপরোয়া ওভারটেকিং প্রতিরোধে সড়কে সিসিটিভি বসাতে হবে, ৫) হাফ পাসের ব্যাপারে সব বাধ্যবাধকতা তুলে দিতে হবে, ৬) শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা গণপরিবহন দিতে হবে, ৭) নারীদের জন্য আলাদা বাস দিতে হবে এবং ৮) প্রস্তাবিত বাসরুট র্যাশনালাইজেশন অতি দ্রুত বাস্তবায়িত করতে হবে।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঘোষিত দাবিগুলো বাস্তবায়নে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়ে জানিয়েছেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নিতে হবে। না হলে আমরা আবারও রাস্তায় নামব। আমাদের দাবিগুলো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সড়ক ও সেতু বিভাগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পাঠানো হবে। আমরা দ্রুত দাবিগুলো বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘মাইশা হত্যার ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। মাইশার পরিবারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা করার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে যদি কোনো সহযোগিতা চায় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’
প্রিন্ট