ফরিদপুরের নগরকান্দায় রামনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাইমুদ্দিন মন্ডলকে দইয়ের বাক্সে সাপ উপহার পাঠানোর ঘটনা ঘটেছে। সাপটি লম্বায় সাড়ে ৮ ফুট বলে জানা গেছে। তবে সাপটি মুত্যু অবস্থায় ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ বলছেন দাঁড়াশ সাপ। আবার অনেকেই বলেন গোখরা সাপ। সাপ দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়েন চেয়ারম্যানের এক কর্মচারী।
সোমবার (২৮ মার্চ) বিকাল পাঁচটার দিকে নগরকান্দা ও কোতয়ালী থানার সীমান্ত এলাকা গজারিয়া বাজারে চেয়ারম্যানের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে এ বাক্সটি পৌছিয়ে দেয় বয়স্ক এক ভ্যান চালক।
চেয়ারম্যানের ব্যাক্তিগত কর্মচারী শ্যামল কুমার বিশ্বাস গনমাধ্যমকর্মীদের জানান, বিকালের দিকে বয়স্ক একজন ভ্যানচালক কাগজের কার্টুনটি এনে বলেন, এটি চেয়ারম্যান সাহেবের উপহার আমার কাছে একজন পাঠিয়েছেন। আপনারা এটি রাখেন। উপহারের কার্টুনের উপরে লেখা ছিল দই। আমি ও আমার আরেক সহযোগী বাবুল শেখ মিলে কার্টুনটি খুলে সাপ দেখতে পাই। এসময় বাবুল সাপ দেখে চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুনঃ সালথায় তালাকের পরে তরুনীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ
তিনি আরও বলেন, তাৎক্ষণিক পাশেই ভ্যানষ্ট্যান্ডে ওই ভ্যান চালককে দেখতে পেয়ে তাকে জিজ্ঞেসাবাদ করা হয়। ভ্যান চালক জানান, রামনগর ইউনিয়নের গোপালপুর বাজারের কিটনাশকের একটি দোকান থেকে কার্টুনটি তাকে দেয়া হয়েছে চেয়ারম্যানকে দেয়ার জন্য। পরে চেয়ারম্যানের লোকজন ভ্যানচালকে সাথে নিয়ে গোপালপুর বাজারে গিয়ে ওই ব্যাক্তিকে খুঁজে পান। তার নাম জহুরউদ্দিন বেপারী। তিনি গোপালপুর গ্রামের আদেল উদ্দীনের ছেলে। পরে তাকে ধরে এনে গজারিয়া বাজারে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে, রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাইমুদ্দিন মন্ডল জানান, আমি দুপুরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিলাম। আমার কর্মচারী শ্যামল কুমার আমাকে মোবাইলে জানান, আপনার একটা উপহার এসেছে। বাক্সের উপর দই লেখা। আমি তখন তাকে খুলে দেখতে বলি। পরে জানতে পারি তার মধ্যে সাপ। ভ্যানওয়ালাকে নিয়ে পরে ওই লোকের সন্ধান পাওয়া যায়। তাকে ধরে আনা হয়। তবে কেন কি কারনে সে এমন কাজ করেছে স্বীকার করেননি। পরে খবর পেয়ে কোতয়ালী থানা পুলিশ এসে তাকে নিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, আমার তেমন কোন শত্রু নেই। কিন্তু কেন যে সে এমন কাজ করলো আমি বুঝে উঠতে পারছি না। অবশ্য জহুরউদ্দিন বেপারী একজন সামান্য বুদ্ধি প্রতিবন্ধী।
নগরকান্দা থানার ওসি হাবিল হোসেন বলেন, আমরা ঘটনা শুনেছি। সাপটা নাকি মৃত্যু। চেয়ারম্যান সাহেবকে লিখিত অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। চেয়ারম্যান সাহেব এ ব্যাপারে কোন লিখিত অভিযোগ করেননি।
এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এম এ জলিল, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা খবর পাই জহুরউদ্দিন বেপারী নামে একজনকে জনতা আটক করে রেখেছে। জনগনের রোষানল থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। চেয়ারম্যান অভিযোগ না করায় চেয়ারম্যানের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেতী প্রু বলেন, ঘটনাটি শুনেছেন। চেয়ারম্যানকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবেন বলে জানান তিনি।
প্রিন্ট