ঝিনাইদহে চলতি ইট পোড়ানো মৌসুমেও অবৈধ ভাবে আইন অমান্য করে ইট পোড়ানোর কাজ পুরোদমে চলছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে এসব ইট ভাটা। অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা এসব ইটভাটা গুলোর বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর বিভিন্ন সময়ে নাম মাত্র কয়েকটি ভাটায় অভিযান চালিয়ে ভাটা উচ্ছেদ ও জরিমানা আদায় করলেও জেলার ৬ টি উপজেলায় প্রায় ১২৬ টি ভাটা রয়েছে। নাম মাত্র কয়েকটিতে অভিযান করলেও বাকি গুলো হরহামেশাই অবৈধভাবে চলছে। আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ভাটা মালিকরা বেপরোয়া ভাবে ইট পোড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে ভাটায় কাঠ পোড়ানোর ব্যাপারে ভাটা মালিকরা জানান,ভাটা মালিক সমিতির অনুমতি ক্রমে তারা প্রতিদিন হাজার হাজার মণ কাঠ পোড়াচ্ছে। তারা আরো জানায়,ভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তরসহ যেকোনো মোবাইল কোর্ট পরিচালনা হলে দায়ভার ভাটা মালিক সমিতি বুঝবে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে,পরিবেশ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত/২০১০) ও ইট প্রস্তত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রন) আইন ২০১৩ এর কোন বিধি মানছে না এসব ভাটা গুলো । বেপরোয়া ভাবেই পরিবেশ দূষন করে প্রতিদিন হাজার হাজার মন কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। বছরের পর বছর এভাবে চলে আসছে এসব ইটভাটার ব্যবসা। কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার। মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মহেশপুর পৌর এলাকাসহ ২১টি ইট ভাটা রয়েছে। অবৈধভাবে গড়ে তোলা এসব ভাটা গুলোতে কয়লার পরিবর্তে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ । আবার কোন কোন ভাটায় কিছু কয়লা রাখা হলেও পাশাপাশি কাঠ এনে কাঠ দিয়েই পোড়ানো হচ্ছে ইট। এভাবে ইটভাটায় সৃষ্টদূষন পরিবেশ বির্পযয় ও জনস্বাস্থ্যর মারাত্মক ক্ষতিসাধন করছে।
গত ৩০ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর জেলা র্কাযালয়ের উদ্যোগে এক অভিযান পরিচালনা করে। সেসময় পরিবেশ অধিদপ্তররে ছাড়পত্র ছাড়া ,কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে এই উপজেলায় ৩টি ইট ভাটা উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া ৫টি ইটভাটার মালককে মোট ১২ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করে। এর মধ্যে পদ্মপুকুর এলাকায় রাফি ব্রিকস তিন লাখ টাকা,শ্যামকুড় সীমান্ত ব্রিকস দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা,কাজিরবেড় এলাকার রুমা ব্রিকস কে দুই লাখ টাকা, নেপা মোড়ে সোলেমানপুরে ভাই-ভাই ব্রিকসকে তিন লাখ টাকা সহ মোট ১২ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
পাশাপাশি এসব ভাটাকে র্শত মেনে ভাটা পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অথচ অভিযানের পরের দিন থেকে আবার আগের মতই পরিবেশ দূষণ করে ইট পোড়াচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর’র উদ্যোগে পরিচালিত এই ভ্রাম্যমান আদালতে সদর দপ্তরের এনর্ফোসমেন্ট এক্সকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট সাঈদা পারভিন নেতৃত্ব দেন। এসময় যশোর জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোঃ হারুন অর রশিদ, পরিদর্শক মোঃ জাহিদ হাসান,পুলিশ ও আনসার বাহীনির বিশেষ টিম ও অন্যান্যরা উপস্থতি ছিলেন। এছাড়া গত মৌসুমে শৈলকুপা উপজেলার পৌর এলাকার ইটভাটাগুলোতে উচ্ছেদ অভিযান হলেও আবাইপুর ইউনিয়নের হাটফাজিলপুর এলাকায় অবস্থিত মোল্যা ব্রিকস, থ্রী স্টার ব্রিকস ও সাইফুল এর ইটভাটায় কোনো কালেও কোনো অভিযান পরিচালনা হয় না।
এছাড়া উমেদপুর ইউনিয়নের ষষ্ঠীবর এলাকায় টুটুল ব্রিকস ৬০ ফিট ড্রামচিমনি ব্যবহার করে ইটভাটা পরিচালনা করছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের যশোর জেলা র্কাযালয়ের অধীনে থাকা যশোর, নড়াইল,ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালিত হচ্ছে বলে সহকারি পরিচালক হারুনুর রশিদ জানান। তিনি আরো জানান, পর্যায়ক্রমে সকল ইটভাটায় অভিযান করা হবে। অবৈধ সকল ভাটা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
প্রিন্ট