প্রতিবারের মতো এ বছরও গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি অনুযায়ী বছরের প্রথম দিন থেকে পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্ট ও ভারতের ফারাক্কা পয়েন্টে পানি পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে যৌথ নদী কমিশনের সদস্যরা।
পদ্মা (গঙ্গা) নদীর পানিবণ্টন চুক্তির দীর্ঘদিন পর এ বছরে এবার পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশীতে অবস্থিত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মায় সর্বোচ্চ পরিমাণ পানির দেখা মিলেছে। বিগত ২৬ বছরে এবারে পানির পরিমাণ সর্বোচ্চ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে পানি পরিমাপক সংস্থা পাবনা হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রইচ উদ্দিন বলেন, পদ্মার পানি পর্যবেক্ষণের জন্য ভারত থেকে আসা ভারতের কেন্দ্রীয় পানি কমিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপঙ্কর দাস ও কমিশনের সহকারী পরিচালক প্রকাশ এস এর নেতৃত্বে দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল আজ শনিবার সকাল থেকে পদ্মা নদীর আড়াই হাজার ফুট উজানে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পয়েন্টে পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে।
যৌথ নদী কমিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী টি এম রাশিদুল কবিরের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলও ফারাক্কার ভাটিতে গঙ্গার পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে বলে জানান তিনি।
চুক্তি অনুযায়ী, যৌথ নদী কমিশনের সদস্যরা ১০ দিন পর পর পানি প্রবাহের রেকর্ড প্রকাশ করবে। ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি অনুসারে শুষ্ক মৌসুমে পানির ন্যয্য হিস্যা অনুযায়ী পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত হচ্ছে কিনা পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত দুই দেশের প্রতিনিধিদল গঙ্গা ও পদ্মার পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করে থাকে।
পানি বণ্টন চুক্তির আওতায় প্রতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত দশ দিনওয়ারি ভিত্তিতে ফারাক্কায় গঙ্গা নদীর পানির প্রবাহ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বণ্টন করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ১০ দিনে ফারাক্কায় ৭০ হাজার কিউসেক বা তার কম পানির প্রবাহ থাকলে বাংলাদেশ ও ভারত উভয়েই ৫০ শতাংশ করে পানি পাবে।
দ্বিতীয় ১০ দিনে ফারাক্কা পয়েন্টে ৭০ হাজার কিউসেক থেকে ৭৫ হাজার কিউসেক প্রবাহ থাকলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি পাবে এবং অবশিষ্ট পানি পাবে ভারত। তৃতীয় ১০ দিন ফারাক্কা পয়েন্টে ৭৫ হাজার কিউসেক বা তার বেশি পানি প্রবাহ থাকলে ভারত পাবে ৪০ হাজার কিউসেক পানি বাকিটা পাবে বাংলাদেশ।
তবে চুক্তি অনুযায়ী, ১১ মার্চ থেকে ১০ মে সময়কালে বাংলাদেশ, ভারত উভয়ই ১০ দিন পর পর নিশ্চিতভাবে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি পাবে।
এ বছর পানি পর্যবেক্ষণের শুরু থেকেই পানির প্রবাহ ভালো পাওয়ায় বছরজুড়ে পদ্মায় পানির প্রবাহ পর্যাপ্ত পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তিনি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই দেশের প্রতিনিধিদলের পানি পর্যবেক্ষণের রিপোর্ট পাওয়ার পর পানি প্রবাহের প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
প্রিন্ট