আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সরগরম হয়ে উঠছে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ১০ ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চলের জনপদ। সেই সাথে চায়ের দোকানগুলিতে চলছে নির্বাচনী আলাপ চারিতা। ইতিমধ্যেই দলীয় মনোনয়ন ফর্ম বিতরণ ও জমা নেওয়ার কাজ শেষ করেছে ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামী লীগ।
১০ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ৭০ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী ফর্ম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন। ৭০জনের মধ্য থেকে দলে ৪জন অনুপ্রবেশকারী আখ্যা পাওয়ায় তাদের নাম বাদ দিয়ে ৬৬জনের নামের একটি তালিকা গতকাল শনিবার কেন্দ্রে পাঠিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। তবে দলীয় প্রার্থী বেড়ে যাওয়া এবং বিভিন্ন যায়গায় প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হামলা সংঘর্ষের কারণে নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকা না দেওয়ার জন্য প্রার্থী তালিকার সাথে একটি রেজুলেশনও জমা দিয়েছেন বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগ। তফসীল ঘোষণা অনুযায়ী এসব ইউনিয়নের আগামী ২৩ ডিসেম্বর নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
জানা যায়, ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে গত ২৫ অক্টোবর উপজেলা আওয়ামী লীগের এক বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ গত ৩১ অক্টোবর থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু করেন। ফরম পূরণ শেষে ২ নভেম্বর পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মীরদাহ পিকুলের নিকট মনোনয়ন ফরম জমা দেন। দশ ইউনিয়নে ৭০জন দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ফরম সংগ্রহ করে ৭০জনই ফরম পূরণ করে জমা দেন।
এসব ইউনিয়নের মধ্যে ঘোষপুরে ৯জন, সাতৈরে ৬জন, দাদপুরে ৯জন, ময়নায় ৯জন, বোয়ালমারী সদরে ৫জন, গুনবহায় ৬জন, চতুলে ৪জন, পরমেশ্বরদীতে ৮জন, রূপাপাতে ১০জন ও শেখর ইউনিয়ন থেকে ৪জন মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এদের মধ্য থেকে ৬৬জনের নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। ৬৬জনের মধ্য থেকে দশ ইউনিয়নে দশজন প্রার্থীর নাম চুড়ান্ত করে দিবেন স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড।
তবে প্রত্যেকটি ইউনিয়নে প্রার্থী বেশি হওয়া এবং প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় হামলা সংঘর্ষের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতীক না দিয়ে উন্মুক্ত নির্বাচনের জোর দাবী জানিয়েছেন তৃনমূল। এ জন্য উন্মুক্ত নির্বাচনের বিষয়টি বিবেচনার জন্য একটি রেজুলেশন প্রার্থী তালিকার সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডে জমা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল শনিবার বিকেলে বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মীরদাহ পিকুল বলেন, চলতি বছরের ২৫ অক্টোবরের দলের বিশেষ বর্ধিত সভায় অনেক নেতাকর্মী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক না দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা একটি রেজুলেশন তৈরি করেছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য ও সাবেক সাংসদ মো. আব্দুর রহমান এবং বর্তমান সাংসদ মনজুর হোসেনের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাঁরা দুজনই উন্মুক্ত নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন। সে হিসেবে দলীয় প্রতীক নৌকা বাদ দিয়ে প্রার্থীতা উন্মুক্ত করে দেওয়া হতে পারে। সেটা যদি না হয় স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড যাকে মনোনয়ন দেবেন তিনিই দলের প্রার্থী হবেন।
২০১৬ সালে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যারা দলের বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন তাদের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা ৬৬জনের যে তালিকা পাঠিয়েছি সেখানে প্রার্থীদের (মনোনয়ন প্রত্যাশী) নামের পাশে মন্তব্য কলামে বিষয়টি উল্লেখ করেছি।
প্রিন্ট