ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের পোয়াইল গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী কৃষক আকমল হত্যা মামলার বাদী ও নিহতের ছেলে মো. ইব্রাহিম শেখকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হত্যাচেষ্টাসহ তাকে মারপিট ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগে সোমবার (০৮.১১.২১) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাদী মো. ইব্রাহিম শেখ। এ বিষয়ে সে বোয়ালমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইব্রাহিম শেখ অভিযোগ করেন, সোমবার রাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য চতুল ইউনিয়নের বাইখীর চৌরাস্তা পাশে গেলে আকমল হত্যা মামলার ১নং আসামি চতুল ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটুর ভাই বাবলু শরীফ, ওই মামলার আসামি পোয়াইল গ্রামের জামাল মাতুব্বর, ইখলাছ মোল্যা, জাবের মোল্যা, ইলিয়াস মোল্যা, রাজিব খান, তাজমুল শেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০-১২ জনের একটি গ্রুপ তাকে (ইব্রাহিম) শার্টের কলার ধরে টেনে হিচড়ে নিয়ে আটকে রাখে।
বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও রেকর্ডিং বক্তব্য নেয় এবং সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার চেষ্টা করে। তাকে দিয়ে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, পোয়াইল গ্রামের গাজী শুভ ও নাজিম উদ্দিন মেম্বারের নাম বলায়। বাবলু শরীফ তার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আকমল হত্যা মামলা তুলে নিতে বলে। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৭টার দিকে বোয়ালমারী থানার এসআই আব্দুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে ইব্রাহিমকে উদ্ধার করে।
ইব্রাহিম আরও অভিযোগ করেন, আগামী ইউপি নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এবং তাদের নীলনকশা বাস্তবায়নে আরও নৃশংস কোনো ঘটনা ঘটাতে পারে। ইব্রাহিমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গাজী ফকরুজ্জামান শুভ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চতুল ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন, জাকির শেখ, সামচু শেখ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন উপলক্ষে আলোচনা সভার পরে নৈশ ভোজ শেষে কৃষক আকমল শেখকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে। নিহত আকমল শেখের ছেলে ইব্রাহিম শেখ বাদী হয়ে চতুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটুকে ১নং আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ ব্যাপারে বাবলু শরীফ বলেন, ইব্রাহিম বাইখীর চৌরাস্তা এলাকায় এসে আকমল হত্যা মামলার আসামিদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়।
এ সময় চেয়ারম্যান শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটুর কর্মী-সমর্থকরা তার উপর চড়াও হয়ে তাকে আটক করে। আমি সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানাপুলিশের নিকট হস্তান্তর করি। বোয়ালমারী থানার এসআই আব্দুর রহমান বলেন, আকমল হত্যা মামলার আসামীকে আটকে রেখেছে, এমন খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়।
প্রিন্ট