কুষ্টিয়ায় জমজ পাঁচ নবজাতকের মধ্যে একএক করে ৪ জনের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে প্রথমবারের মতো নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে এক সাথে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন গৃহবধূ সাদিয়া খাতুন (২৪)। পাঁচ নবজাতকের মধ্যে একটি ছেলে, বাকি চার জন কন্যা সন্তান ছিল।
কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আশরাফুল আলম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাঁচজনের মধ্যে ৩ নভেম্বর, বুধবার তিন নবজাতকের মৃত্যু এবং আজ ৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মারা যায় আরো ১জন মোট ৪জনের মৃত্যুও বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, মারা যাওয়া ৪টি শিশুর ওজন অনেক কম ছিল।
হাসপাতাল সূত্র জানা গেছে, গর্ভধারণের পাঁচ মাসের মাথায় সদ্য জন্ম নেয়া শিশুদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল। বাচ্চাদের ওজন ৪৩০ গ্রাম থেকে ৬৫০গ্রামের মধ্যে।
পাঁচ নবজাতকের মা সাদিয়া খাতুন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পান্টি গ্রামের কলেজপাড়া এলাকার চা বিক্রেতা সোহেল রানার স্ত্রী। সোহেল রানা একই এলাকার সামাদ আলীর ছেলে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন জানান, শিশুগুলোর ওজন কম হওয়ায় চিকিৎসকরা তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু আর্থিক অসঙ্গতির কারণে পরিবার শিশুদের ঢাকায় নিয়ে যেতে ব্যর্থ হন। জন্মের পর থেকে শিশুগুলোকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে শিশু ওয়ার্ডে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। কিন্তু পাঁচ নবজাতকের মধ্যে ৪জনকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। বাকি ১ জনের অবস্থায়ও সংকটাপন্ন। দ্রুত উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা করা না গেলে তারও প্রাণ সংশয় রয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে সদ্য জন্ম নেয়া পাঁচ সন্তানের বাবা সোহেল রানা জানান, সন্তান জন্মের পরপরই চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তার মত একজন সামান্য চায়ের দোকানির পক্ষে এত ব্যয়বহুল চিকিৎসা করা সম্ভব নয় বলে তিনি জানিয়েছেন। এ অবস্থায় তিনি বাকি আর ১জন সন্তানকে জীবন বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা কামনা করেছেন।
প্রিন্ট