রংপুরে যত্রতত্র নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে উঠেছে বেকারী কারখানা। বিশেষ করে মিঠাপুকুর উপজেলা সহ আশেপাশের প্রতিটি ইউনিয়নে কম বেশী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রায় ২০-২৫ টি বেকারী কারখানা ।
নামে বেনামে কিছু বেকারী গড়ে উঠেছে তার মধ্যে অন্যতম বৈরাতীহাটের একটি বেকারীর পরিবেশ যে কেউ দেখলে চক্ষু কলাগাছে ওঠবে বলে ধারণা করা যায়। অধিকাংশ বেকারী গুলোতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেকারী পণ্য তৈরী হচ্ছে।
উৎপাদিত খাদ্যের মান প্রণয়ন এবং গুণগতমান ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণে খুব বেশী ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না। উৎপাদিত খাবারে দেশের মান নিয়ন্ত্রণকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) এর অনুমোদন এককালে থাকলেও নেই কারো কারো নবায়ন।
সচারচর দেখা মেলে না পরিবেশ অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।মিষ্টি বেকারী ও খাবার তৈরীর কারখানা স্থাপনায় পালনীয় ও সর্বসাধারণের অবগতির জন্য বিএসটিআই এর এক গাদা নির্দেশাবলি থাকলেও এর মধ্যে নূন্যতম বাস্তবায়ন দেখা মেলা ভার।কারখানা গুলো নিয়ম নীতি না মেনে স্যাঁতস্যাঁতে ভেজাল ও নিন্মমানের উপকরণ দিয়ে অবাধে তৈরী করছে বেকারী খাবার।
অভিযোগ রয়েছে বেকারী খাবার তৈরী করতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ, কেমিক্যাল ও নিন্মমানের পাম তেল ব্যবহার করা হচ্ছে। শ্রমিকরা বিশেষ পোশাক ছাড়া খালি পায়ে খাবার তৈরী করছেন। নোংরা ও অপরিস্কার কড়াইগুলোতে আটা ময়দা প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। ডালডা দিয়ে তৈরী করা ক্রিম রাখা পাত্রগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি ভন ভন করছে। উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ন তারিখ ছাড়াই বাহারি মোড়কে বনরুটি, পাউরুটি, কেক, বিস্কুটসহ বিভিন্ন ধরনের বেকারী ফাস্টফুড খাবার উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে।
অধিকাংশ বেকারি মালিকের বিরুদ্ধে বিকল্প বেকারি মোড়কে নিন্মমানের খাদ্য সামগ্রী উৎপাদন করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পণ্য বাজারজাত করার অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন চায়ের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, একাধিক পলি প্যাকে ঝুঁলছে পাউরুটি, ক্রীমরোল, কেক, পেটিস, সিঙ্গাড়াসহ অন্যান্য বেকারী খাবার। মোড়কের গায়ে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ লেখা থাকলেও কত তারিখে উৎপাদন হয়েছে বা মেয়াদ কবে শেষ হবে তার কোনো উল্লেখ নেই।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ভেজাল কেমিক্যাল ও নিন্মমানের উপকরণ দিয়ে তৈরী করা এসব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক ঝুঁকি।কয়েক জন বেকারী শ্রমিক জানান, দিনের বেলায় তারা কোনো পণ্য উৎপাদন করেন না। ফজরের আগেই পণ্য উৎপাদন শেষ হয়ে যায়। রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশের ঝাঁমেলা কম বলেই পণ্য উৎপাদন রাতেই শেষ করা হয়। বিএসটিআই আইন ২০১৮-এর খসড়া আইনে শাস্তি বাড়ানো হয়েছে।
নতুন আইনের ২৭,২০,২৬,৩১,৩২ ধারায় সকল শর্ত ভঙ্গের দেখা মেলতে পারে কোথাও কোথাও এজন্য চাই সঠিক মনিটরিং। গত ২৫.০৮.২০২১ অনুমোদনহীন ও নিম্নমানের খাদ্যপণ্য উৎপাদন বিক্রয় ও বিপণন প্রতিরোধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন মিঠাপুকুরের সহকারী কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধা। শিশু সহ সাধারণদের স্বাস্থ্য রক্ষার লক্ষ্যে ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবেন বলে নেটিজনরা আশা করেন।
প্রিন্ট