সেলিম সানোয়ার পলাশ:
রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানাধীন প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আলোচিত উপপরিদর্শক (এসআই) বরুন কুমার সরকারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগের অন্ত ছিল না। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জেলার পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম তাঁকে তদন্ত কেন্দ্র থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করেন।
ওই দিন রাতেই এসআই বরুন কুমার সরকার তদন্ত কেন্দ্র ছেড়ে পুলিশ লাইন্সে চলে যান। এর আগের দিন (৩০ জুলাই) অনলাইনে ‘প্রেমতলীতে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হুমকির অভিযোগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক এসএম মাকসুদুর রহমানের প্রশ্রয়ে এসআই বরুন কুমার বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন।
সংবাদ প্রকাশের পরপরই তদন্ত শুরু হয়। যেসব ভুক্তভোগীর বক্তব্য সংবাদটিতে উঠে আসে, পুলিশ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ সত্য বললে এসআই বরুনকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়।
উপজেলার বড়গাছি গ্রামের আজিবুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, মাটিকাটা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য উকিল আলীর ভাই নবাব আলী তাঁকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে মারধর করেন। তিনি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ করলে ইনচার্জ মাকসুদুর রহমান তা তদন্তের দায়িত্ব দেন এসআই বরুনকে। গত সোমবার দুপুরে বরুন সরকার তাঁকে ডেকে নিয়ে মীমাংসার জন্য চাপ দেন। এমনকি বরুনের ফোন থেকে কথা বলার সময় ইউপি সদস্য উকিল আলী তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন।
আজিবুল জানান, সংবাদ প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার বিকেলে সাদা পোশাকে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর সঙ্গে দেখা করে অভিযোগের সত্যতা জানতে চান। তিনি তাদের কাছে অভিযোগ সত্য বলে জানান এবং প্রমাণ হিসেবে বরুনের ফোন থেকে উকিল আলীর হুমকির ভিডিও প্রদান করেন।
স্থানীয়রা জানান, ইনচার্জ মাকসুদুর রহমান ও এসআই বরুন বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। অভিযোগ পেলেই তাঁরা পক্ষপাতিত্ব করতেন এবং মামলা ও গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করতেন। বরুনের প্রত্যাহারে এলাকাবাসী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা ইনচার্জ মাকসুদুর রহমানকেও প্রত্যাহারের দাবি জানান।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, “এসআই বরুন কুমার সরকারকে তদন্ত কেন্দ্র থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ইনচার্জ মাকসুদুর রহমান এখনও রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধেও যদি কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তাহলে তদন্ত হবে।”
প্রিন্ট