মুরাদ হোসেনঃ
মাগুরা জেলার মহম্মদপুর-শালিখা উপজেলা ও জেলা সদরের চার ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মাগুরা-২ আসন। এই আসনটি এক সময় আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। আওয়ামী লীগের এমপি মোঃ আছাদুজ্জামান এর মৃত্যুর পর ১৯৯৪ সালের উপ-নির্বাচনে বিএেনপি’র মনোনিত প্রার্থী কাজী সালিমুল হক কামাল বিপুল ভোটের ব্যবধানে মাগুরা-২ আসনটি দখল করে নেন। দীর্ঘদিন এ আসনটিতে রাজত্ব করেছে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি। এবারের প্রেক্ষাপট আলাদা।
ক্ষমতাচ্যুত সৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসন ও দলের নেতাদের অপকর্মের কারণে সেই চিত্র পাল্টে গেছে। ভোটও বিভক্ত হয়ে যাবে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামপন্থি-এ দুই ধারায়। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এ আসনে বইছে নির্বাচনি হাওয়া। ইতোমধ্যে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ভোটের মাঠে গণসংযোগ শুরু করেছেন। এ আসন পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপি এবং আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন জামায়াতসহ ইসলামপন্থিরা।
সেই মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী এ্যাড. নিতাই রায় চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক সংরক্ষিত মহিলা এমপি এ্যাড. নেওয়াজ হালিমা আরলি এবং মানবিক মানুষ হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব মো. রবিউল ইসলাম নয়ন। মনোনয়ন পেতে দলের থেকে যে তিনটি ক্যাটাগরি দেয়া হয়েছে, তার তিনটিতেই এগিয়ে রয়েছেন তিনি। তবে মাগুরা-২ আসনে বিএনপির রাজনীতি নিতাই রায় ও কাজী কামাল এই দুই ধারায় বিভক্ত। কাজী কামালের পরিবর্তে তার গ্রুপ থেকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে রবিউল ইসলাম নয়ন মনোনয়ন পেতে পারেন বলে বিএনপির একাংশসহ জনসাধারণের প্রত্যাশা।
বিএনপিতে একাধিক নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও স্বস্তিতে আছে জামায়াত। আগেই মনোনয়ন পাওয়া জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক এম.বি বাকের আছেন ফুরফুরে মেজাজে। একক প্রার্থী হিসেবে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মন জয় করতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তিনি।
অপরদিকে মাগুরা-২ আসনের নির্বাচনী এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সামজিক ও মানবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষি বিজ্ঞানী ড. আলী আফজাল। কৃষিবিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আলী আফজালও প্রার্থী হতে পারেন বলে এলাকায় চাওড় হচ্ছে। অন্যদিকে কমিটি দিতে পারেনি তরুণ শিক্ষার্থীদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এরপরও ভোটের মাঠে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছেন তাদের অনুসারীরা। আবার প্রার্থী ঘোষনা না দিলেও মিছিল সমাবেশ নিয়ে মাঠে আছেন গণ-অধিকার পরিষদের নেতা কর্মীরা।
তবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-২ আসন পুনরুদ্ধারে মরিয়া বিএনপি, আর নতুন করে আধিপত্য বিস্তার করতে চায় জামায়াতসহ ইসলামপন্থিরা। তীব্র লড়াই হতে পারে এ দু’ধারার প্রার্থীদের মধ্যে বলে সচেতন মহলের ধারণা।
প্রিন্ট