ঢাকা , শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

হাতিয়ায় যৌতুকের জন্য যে কাণ্ড করল স্বামী

হানিফ উদ্দিন সাকিবঃ

 

নোয়াখালী হাতিয়ায় যৌতুকের জন্য স্ত্রীর যৌনাঙ্গে মরিচের গুড়া দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী ছালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে।

শনিবার (২১ জুন) বিকেলে অসুস্থ গৃহ বধুকে পুলিশের সহযোগিতায় স্বজনরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এর আগে শুক্রবার রাতে উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মাইজচরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, রাতে অভিযুক্ত স্বামী শশুর বাড়ী থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য তার স্ত্রীকে চাপ দেয়। এতে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী তার পিতা মাতা সহ সবাইকে ঘর থেকে বের করে দেয়। রুমের মধ্যে খাটের পায়ার সাথে স্ত্রীর হাত পা বাঁধেন। এরপর বেধম প্রহার করে তার যৌনাঙ্গে মরিচের গুড়ি দিয়ে দেয়। এতে স্ত্রীর চিৎকারে প্রতিবেশিরা এসে তাকে উদ্ধার করেন। সকালে সংবাদ পেয়ে মহিলার বাবা মা গিয়ে হাসপাতালে আনার চেষ্টা করলে তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়। পরে পুলিশের সহায়তায় তারা আহত মহিলাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করেন।

অভিযুক্ত স্বামী সালেহউদ্দিন (৪৫) সোনাদিয়া মাইজচরার ২নং ওয়ার্ডের নুরুল হকের ছেলে। সে পেশায় একজন ইট ভাটার শ্রমিক সর্দার।

জানা যায়, দীর্ঘ দশ বছর পূর্বে আহত নারীর সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের দুইটি ছেলে মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে শ্বশুর পক্ষ থেকে আর্থিক সুবিধা নিতেন। গত দু-তিন দিন থেকে সে টাকার জন্য তার স্ত্রীকে নানা ভাবে চাপ দিতে থাকে। টাকা না পেয়ে তাকে নানাভাবে নির্যাতন করা হয়।

নির্যাতিতা মহিলার বাবা আবদুল খালেক বলেন , দীর্ঘ দিন থেকে তার মেয়েকে নির্যাতন করে আসছে তার স্বামী। বিভিন্ন ধাপে তাকে প্রায় লক্ষাধিক টাকা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে একাধিকবার গ্রাম্য শালিশ বৈঠকও হয়েছে। গতকাল তারা আবারো তার মেয়ের উপর এ অমানুষিক নির্যাতন করে।

হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ ইউসুফ সোহাগ বলেন, সিঃ নার্স দিয়ে আহত মহিলার শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে তার গোপনাঙ্গ সহ বিভিন্ন অংশে আঘাতে চিহ্ন পাওয়া গেছে।

জাহাজমারা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনিসুর রহমান জানান, এক মহিলাকে তার শশুরবাড়ীতে নির্যাতন করে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এ সংবাদ পেয়ে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়ে নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

 


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

হরিপরে বিএসএফ এর গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত

error: Content is protected !!

হাতিয়ায় যৌতুকের জন্য যে কাণ্ড করল স্বামী

আপডেট টাইম : ০৯:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
হানিফ উদ্দিন সাকিব, হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :

হানিফ উদ্দিন সাকিবঃ

 

নোয়াখালী হাতিয়ায় যৌতুকের জন্য স্ত্রীর যৌনাঙ্গে মরিচের গুড়া দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী ছালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে।

শনিবার (২১ জুন) বিকেলে অসুস্থ গৃহ বধুকে পুলিশের সহযোগিতায় স্বজনরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এর আগে শুক্রবার রাতে উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মাইজচরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, রাতে অভিযুক্ত স্বামী শশুর বাড়ী থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য তার স্ত্রীকে চাপ দেয়। এতে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী তার পিতা মাতা সহ সবাইকে ঘর থেকে বের করে দেয়। রুমের মধ্যে খাটের পায়ার সাথে স্ত্রীর হাত পা বাঁধেন। এরপর বেধম প্রহার করে তার যৌনাঙ্গে মরিচের গুড়ি দিয়ে দেয়। এতে স্ত্রীর চিৎকারে প্রতিবেশিরা এসে তাকে উদ্ধার করেন। সকালে সংবাদ পেয়ে মহিলার বাবা মা গিয়ে হাসপাতালে আনার চেষ্টা করলে তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়। পরে পুলিশের সহায়তায় তারা আহত মহিলাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করেন।

অভিযুক্ত স্বামী সালেহউদ্দিন (৪৫) সোনাদিয়া মাইজচরার ২নং ওয়ার্ডের নুরুল হকের ছেলে। সে পেশায় একজন ইট ভাটার শ্রমিক সর্দার।

জানা যায়, দীর্ঘ দশ বছর পূর্বে আহত নারীর সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের দুইটি ছেলে মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে শ্বশুর পক্ষ থেকে আর্থিক সুবিধা নিতেন। গত দু-তিন দিন থেকে সে টাকার জন্য তার স্ত্রীকে নানা ভাবে চাপ দিতে থাকে। টাকা না পেয়ে তাকে নানাভাবে নির্যাতন করা হয়।

নির্যাতিতা মহিলার বাবা আবদুল খালেক বলেন , দীর্ঘ দিন থেকে তার মেয়েকে নির্যাতন করে আসছে তার স্বামী। বিভিন্ন ধাপে তাকে প্রায় লক্ষাধিক টাকা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে একাধিকবার গ্রাম্য শালিশ বৈঠকও হয়েছে। গতকাল তারা আবারো তার মেয়ের উপর এ অমানুষিক নির্যাতন করে।

হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ ইউসুফ সোহাগ বলেন, সিঃ নার্স দিয়ে আহত মহিলার শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে তার গোপনাঙ্গ সহ বিভিন্ন অংশে আঘাতে চিহ্ন পাওয়া গেছে।

জাহাজমারা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনিসুর রহমান জানান, এক মহিলাকে তার শশুরবাড়ীতে নির্যাতন করে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এ সংবাদ পেয়ে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়ে নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

 


প্রিন্ট