এস. এম রবিউল ইসলাম রুবেলঃ
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে শ্যালকের বিয়েতে যোগ দিতে এসে শ্বশুরবাড়িতে গৃহবন্দী হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন এক জামাই। পরে তার বোন জামাই এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
–
ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (১৫ জুন) সকালে, উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের লংকারচর গ্রামের কামারপাড়ায়।
–
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লংকারচর গ্রামের রঞ্জন মন্ডলের মেয়ে মিতা মন্ডলের সঙ্গে ৮ মাস আগে বিয়ে হয় মাগুরা জেলার কছুন্দী ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা বিধান মন্ডলের ছেলে দেবু মন্ডলের।
–
গত বৃহস্পতিবার দেবু তার স্ত্রী মিতাকে নিয়ে শ্যালকের বিয়েতে অংশ নিতে শ্বশুরবাড়িতে আসেন। অনুষ্ঠান শেষে রোববার সকালে নিজ বাড়িতে ফেরার সময় তাকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
–
দেবুর ভাগনে বিষয়টি তার বোন ও জামাই বাবুকে জানালে, তারা লোকজন নিয়ে এসে দেবুকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।
–
এর আগে শনিবার রাতে দেবু তার স্ত্রীকে নিয়ে এলাকার এক আত্মীয় (বোন জামাই) বাড়িতে রাতযাপন করেন। সেখানেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুচ্ছ একটি বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। দেবুর দাবি, স্ত্রী অশালীন ভাষা ব্যবহার করায় তাকে একটি থাপ্পড় দেন। এরপরই স্ত্রী মিতা রাগ করে বাবার বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি জানালে, তার বাবা-মা ও ভাই মিলে দেবুকে ঘরে আটকে রাখেন।
–
দেবু মন্ডল অভিযোগ করেন, “রোববার সকালে বাড়ি ফেরার সময় আমাকে ঘরে আটকে লাইট ও ফ্যানের সুইচ বন্ধ করে মারধর করা হয়। আমার কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। ভাগনে খবর না দিলে ওরা হয়তো আমাকে মেরে ফেলত।”
–
তিনি আরও বলেন, “আমার ছোট শ্যালক ও আরও দুইজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাকে মারতে আসে। আমি কোনোরকমে পালিয়ে বাঁচি।”
–
তবে দেবুর শ্বাশুড়ি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার মেয়েকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করে আসছে। তাই জামাইকে আমরা ঘরে বসিয়ে বুঝাচ্ছিলাম। কিন্তু ওদের লোকজন ভ্যান ভর্তি করে এসে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে জামাইকে জোর করে নিয়ে যায়। আমরা কেউ তাকে মারধর করিনি।”
–
এ বিষয়ে মিতা মন্ডল বলেন, “বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। তুচ্ছ বিষয় নিয়েও আমাকে মারধর করে, অপমানজনক কথা বলে। এমনকি যৌতুকের জন্য চাপ দেয়।”
–
এ বিষয়ে ঘোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইমরান হোসেন নবাব বলেন, ‘গণেশ নামে এক ব্যক্তি এ বিষয়টা ফোন করে আমাকে জানান। ঘটনা সত্য হলে আমরা বসে শোনা মেলা করে বিষয়টা সমাধান করার চেষ্টা করবো। যাতে করে একটি সংসার না ভেঙ্গে যায়।’
প্রিন্ট