ঢাকা , শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বাঘায় খরিদমূলে ভোগদখলীয় সম্পত্তি জবরদখলসহ প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ

আব্দুল হামিদ মিঞাঃ

 

রাজশাহীর বাঘায় ৪৫ বছর আগে খরিদমূলে ভোগদখলে থাকা সম্পত্তিতে সাইন বোর্ড টানিয়ে জবরদখল করে জমির গাছপালা-ফসলাদি কেটে বিক্রি এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী আসলাম হোসেন। রোববার (১৫ জুন’২৫) সকাল সাড়ে ১১টায় বাঘা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের বাউসা পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আসলাম হোসেন।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে, জমির খতিয়ান, দাগ ও জমির পরিমাণ উল্লেখ করে আসলাম হোসেন বলেন, বাউসা মৌজায় তিনটি দাগে মোট ৯৮ শতাংশ জমি আমার নিজের ও আমার বাবার খরিদমূলে প্রাপ্ত সম্পত্তি, যা ৪৫ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছি। দেশের পট পরিবর্তনের পর, বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. রেজাউল করিমসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা খরিদকৃত সম্পত্তি আড়ানির জোতরঘু গ্রামের জামাল উদ্দীন জুমন গংদের ওয়ারিশ সত্ত্ব দাবি করে ২৭ শতাংশ জমির ১০টি আমগাছ কেটে বিক্রি করে এবং ৪৫ শতাংশ জমি জবরদখল করে আবাদ করা ভুট্টা কেটে নিয়ে যায়।

 

সর্বশেষ ১২ জুন ২৬ শতাংশের একটি জমিতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দখলে নেয়। সেই সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে, এই জমির মালিক মরিয়ম বেগম ও জাহিদুল ইসলাম (খালেক)। ১৩ জুন সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে বিএনপি নেতা রেজাউল করিমের নেতৃত্বে জুমন, জুয়েল, মিজান ও আরাফাতসহ ১০/১২ জন আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে লৌহার রড়, হাতুড়ি ও হাসুয়া নিয়ে বাড়ির গেট ভাংচুরের চেষ্টা করে। আমি মফস্বল দরজা দিয়ে পালিয়ে আত্মরক্ষা করি। পরে তারা বাড়ির পাশে একটি জমির ফসলাদি কেটে জমি দখলে নেয়। বাধা দিতে গেলে তারা রামদা নিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। আমি পালিয়ে বাড়িতে এসে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করি। পুলিশ থানায় অভিযোগ দিতে বলে। থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং স্ত্রী সকেনা বেগমের সাথে কথা বলে সাক্ষীর নাম চায়। কিন্তু রেজাউল করিমের ভয়ে কেউ সাক্ষী দিতে রাজি হয়নি।

 

সংবাদ সম্মেলনে আসলাম বলেন, খরিদকৃত .৪৫ শতাংশ ও .২৭ শতাংশ জমির শর্ত নিয়ে আমার পিতা আমির উদ্দীন বাদী হয়ে একরাম গংদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। সেই মামলায় বাদী ডিগ্রি পান।

 

তিনি আরও বলেন, দেশের পট পরিবর্তনের একমাস পর থেকে ক্ষমতার প্রভাবে খরিদকৃত সেইসব সম্পত্তি জবরদখল করে নিচ্ছেন রেজাউল করিম, যদিও তিনি কোনোভাবেই জমির মালিক নন। তিনি বিক্রেতাদের পক্ষে ওয়ারিশ সত্ত্ব দাবি করে জমি দখল করেছেন।

 

প্রাণনাশের হুমকিতে অসহায়ত্ববোধ করে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটছে বলে জানান আসলাম হোসেন। তিনি তার ক্রয়কৃত সম্পত্তি জবরদখল থেকে উদ্ধার করে নিজ দখলে নেওয়ার জন্য আইনি সহায়তা কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে আসলামের সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী সকেনা বেগম ও ছেলে জাহিদ হাসান।

 

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে রেজাউল করিমের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

 

বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ এ.এফ.এম আছাদুজ্জামান জানান, জমি-জমা জবরদখল ও ভয়ভীতির একটি অভিযোগ করেছেন আসলাম হোসেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

হরিপরে বিএসএফ এর গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত

error: Content is protected !!

বাঘায় খরিদমূলে ভোগদখলীয় সম্পত্তি জবরদখলসহ প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ

আপডেট টাইম : ০৪:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫
আব্দুল হামিদ মিঞা, বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

আব্দুল হামিদ মিঞাঃ

 

রাজশাহীর বাঘায় ৪৫ বছর আগে খরিদমূলে ভোগদখলে থাকা সম্পত্তিতে সাইন বোর্ড টানিয়ে জবরদখল করে জমির গাছপালা-ফসলাদি কেটে বিক্রি এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী আসলাম হোসেন। রোববার (১৫ জুন’২৫) সকাল সাড়ে ১১টায় বাঘা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের বাউসা পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আসলাম হোসেন।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে, জমির খতিয়ান, দাগ ও জমির পরিমাণ উল্লেখ করে আসলাম হোসেন বলেন, বাউসা মৌজায় তিনটি দাগে মোট ৯৮ শতাংশ জমি আমার নিজের ও আমার বাবার খরিদমূলে প্রাপ্ত সম্পত্তি, যা ৪৫ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছি। দেশের পট পরিবর্তনের পর, বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. রেজাউল করিমসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা খরিদকৃত সম্পত্তি আড়ানির জোতরঘু গ্রামের জামাল উদ্দীন জুমন গংদের ওয়ারিশ সত্ত্ব দাবি করে ২৭ শতাংশ জমির ১০টি আমগাছ কেটে বিক্রি করে এবং ৪৫ শতাংশ জমি জবরদখল করে আবাদ করা ভুট্টা কেটে নিয়ে যায়।

 

সর্বশেষ ১২ জুন ২৬ শতাংশের একটি জমিতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দখলে নেয়। সেই সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে, এই জমির মালিক মরিয়ম বেগম ও জাহিদুল ইসলাম (খালেক)। ১৩ জুন সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে বিএনপি নেতা রেজাউল করিমের নেতৃত্বে জুমন, জুয়েল, মিজান ও আরাফাতসহ ১০/১২ জন আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে লৌহার রড়, হাতুড়ি ও হাসুয়া নিয়ে বাড়ির গেট ভাংচুরের চেষ্টা করে। আমি মফস্বল দরজা দিয়ে পালিয়ে আত্মরক্ষা করি। পরে তারা বাড়ির পাশে একটি জমির ফসলাদি কেটে জমি দখলে নেয়। বাধা দিতে গেলে তারা রামদা নিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। আমি পালিয়ে বাড়িতে এসে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করি। পুলিশ থানায় অভিযোগ দিতে বলে। থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং স্ত্রী সকেনা বেগমের সাথে কথা বলে সাক্ষীর নাম চায়। কিন্তু রেজাউল করিমের ভয়ে কেউ সাক্ষী দিতে রাজি হয়নি।

 

সংবাদ সম্মেলনে আসলাম বলেন, খরিদকৃত .৪৫ শতাংশ ও .২৭ শতাংশ জমির শর্ত নিয়ে আমার পিতা আমির উদ্দীন বাদী হয়ে একরাম গংদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। সেই মামলায় বাদী ডিগ্রি পান।

 

তিনি আরও বলেন, দেশের পট পরিবর্তনের একমাস পর থেকে ক্ষমতার প্রভাবে খরিদকৃত সেইসব সম্পত্তি জবরদখল করে নিচ্ছেন রেজাউল করিম, যদিও তিনি কোনোভাবেই জমির মালিক নন। তিনি বিক্রেতাদের পক্ষে ওয়ারিশ সত্ত্ব দাবি করে জমি দখল করেছেন।

 

প্রাণনাশের হুমকিতে অসহায়ত্ববোধ করে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটছে বলে জানান আসলাম হোসেন। তিনি তার ক্রয়কৃত সম্পত্তি জবরদখল থেকে উদ্ধার করে নিজ দখলে নেওয়ার জন্য আইনি সহায়তা কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে আসলামের সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী সকেনা বেগম ও ছেলে জাহিদ হাসান।

 

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে রেজাউল করিমের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

 

বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ এ.এফ.এম আছাদুজ্জামান জানান, জমি-জমা জবরদখল ও ভয়ভীতির একটি অভিযোগ করেছেন আসলাম হোসেন।


প্রিন্ট