রাশিদুল ইসলাম রাশেদঃ
নাটোরের লালপুরে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে জমজমাট হয়ে উঠেছে কোরবানির পশু কেনাবেচার হাট। ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বেড়েছে গরু ও অন্যান্য গবাদিপশুর আমদানি। সেই সাথে ক্রেতা ও বিক্রেতার পদচারণা ও হাঁকডাকে মুখরিত হয়েছে হাট প্রাঙ্গণ। পাশাপাশি কোরবানির পশুর পর্যাপ্ত সরবরাহ, বাজার মনিটরিং, ভারতীয় গরুর অনুপস্থিতি ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম কমায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন ক্রেতা, বিক্রেতা ও খামারিরা। গত তিনদিন উপজেলার পশু হাটগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে ছোট, বড় ও মাঝারি আকারের গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া বিক্রয়ের জন্য হাটে এসেছেন ব্যবসায়ী ও খামারিরা।
–
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, হাটে মাঝারি আকারের গরু ও ছাগলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। মাঝারি আকারের প্রতিটি গরু ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও ছাগল ২০ – ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বড় গরু বিক্রি হচ্ছে দুই লাখ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকায় ও ছোট গরুর দাম ধরা হচ্ছে ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যে। উপজেলার সালামপুর গ্রামের ব্যবসায়ী সাজদার রহমান বলেন, গতবারের তুলনায় এবছর বেচাকেনা ভালো। দাম কিছুটা কম হলেও লোকসান হচ্ছেনা। এবার হাটে ভারতীয় গরু না থাকা ও ন্যায্য দাম পাওয়ায় খুশি খামারীরা। গোপালপুর পৌর এলাকার খামারি হুমায়ুন কবির বলেন, আমার তিনটি ষাড় ২ লাখ টাকা করে বিক্রি করেছি। আর একটি ষাড় বিক্রয়ের অপেক্ষায় আছি। আশা করছি এটাও ভালো দাম পাবো।
–
উপজেলার সবচেয়ে বড় মধুবাড়ি পশু হাটে মো: শামসুল আলম (৪৫) নামের এক ক্রেতা বলেন, হাটে পর্যাপ্ত গরু এসেছে। মধ্যস্বত্বভোগী না থাকায় দাম তুলনামূলক কম। তিনি ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় একটি মাঝারি আকারের একটি গরু কিনেছেন বলে জানান। তবে এবার উপজেলার কোরবানি গরুর মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছে পৌর এলাকার স্টেডিয়াম পাড়ার খামারি রনির খামারে থাকা ১৫ মণ ওজনের ‘সম্বল’। রনি জানান, তার খামারে ৯টি গরু আছে। এরমধ্যে সম্বলকে চার বছর ধরে লালন পালন করেছেন। এখন সম্বলের ওজন ১৫ মন। তার পেছনে খরচ হয়েছে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা। অনেকেই গরুটি দেখতে আসছেন তবে এখনো প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় বিক্রি করেননি। ভালো দামে গরুটি বিক্রির আশায় রয়েছেন তিনি।
–
উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ আব্দুল্লাহ বলেন, উপজেলার পশু হাটগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। প্রতিটি হাটে ভেটেনারি মেডিকেল টিম পশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ করছেন। কোন পশু অসুস্থ হলে কিংবা স্বাস্থ্যগত সমস্যা শনাক্ত হলে সেটি ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
–
প্রসঙ্গত এ বছর উপজেলায় ৪১ হাজার ১৩৫টি কোরবানি পশুর চাহিদার বিপরীতে ৭৬ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত করা হয়েছে। কোরবানির জন্য উদ্বৃত্ত ৩৫ হাজার গবাদিপশু দেশের বিভিন্ন জেলা হাটে সরবরাহ করা হচ্ছে।
ক্যাপশন:
লালপুরের গোপালপুর পশু হাটের ছবি। (ছবি – সময়ের প্রত্যাশা)
প্রিন্ট