বোরহানুজ্জামান আনিচঃ
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামে চাঁদাবাজি ও হত্যার হুমকির অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর গোলাম হায়দারকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। সোমবার (২জুন) দিবাগত গভীর রাতে তার নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
–
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জানান, মেজর হায়দারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফরহাদ হোসেনসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সাধারণ মানুষকে হয়রানির একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
–
স্থানীয় ইউপি সদস্য রাজু মোল্ল্যা অভিযোগ করে বলেন, ইউনিয়ন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন মেজর হায়দার। রাজু মোল্ল্যা এতে রাজি না হলে গত ১ জুন তাকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। পরে থানায় লিখিত অভিযোগ করলে ওই রাতেই যৌথ বাহিনী অভিযান চালায়।
–
অভিযানের সময় মসজিদের মাইক ব্যবহার করে ফরহাদ হোসেন ‘মেজরের বাড়িতে ডাকাত পড়েছে’ বলে গুজব ছড়ান। এতে আশপাশের এলাকা থেকে মানুষজন ঘটনাস্থলে জড়ো হন। পরে পুলিশ সাইরেন ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে জানায়—এটি একটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত গুজব, ডাকাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
–
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এলাকাবাসীর সহায়তায় ফরহাদসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মেজর হায়দারকেও নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
–
এর আগে উপজেলার ডাংগি ইউনিয়নে বৈষম্য বিরোধী এক নারী নেত্রীকে ঘিরে উত্তেজনার সময় স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ চলাকালে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে উগ্র আচরণ ও অশোভন মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েন মেজর হায়দার। সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করে।
–
গ্রেপ্তারের পর কোদালিয়া গ্রাম জুড়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন স্থানীয়রা। তারা বলেন, “তার প্রভাবের কারণে কেউ মুখ খুলতে পারত না। এখন মনে হচ্ছে প্রশাসন সাধারণ মানুষের পাশে আছে।”
–
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম আরও জানান, “রাজু মোল্লা নামে এক ব্যক্তি চাঁদাবাজির অভিযোগ দিলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে তাদের।”
প্রিন্ট