মোঃ জিয়াউর রহমানঃ
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ৯ বাংলাদেশি নাগরিককে পুশ-ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষি বাহিনী বিএসএফ সদস্যরা। উপজেলার মহিষকুন্ডি এলাকা থেকে তাদের আটক করে প্রয়োজনীয় জিঞ্জাসাবাদ শেষে আজ (৩১ মে) শনিবার বিকেলে দৌলতপুর থানায় সৌপর্দ করেছে বিজিবি। তাদের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়।
–
চার বছর পূর্বে তারা কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী থানার বামনহাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। তাদের মধ্যে চার জন পুরুষ, দুই জন নারী, দুই জন কিশোর ও একজন শিশু রয়েছেন।
–
এ বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে শনিবার সকালে আনুষ্ঠানিক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। তবে বিএসএফ সদস্যরা পুশ-ইন করার বিষয়ে তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন।
–
বিজিবি জানায়, উপজেলার ভাগজত খেয়া ঘাট এলাকায় একটি নৌকা থেকে ৯ জন অপরিচিত মানুষকে নামতে দেখে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে তারা বিষয়টি পার্শ্ববর্তী আশ্রায়ন বিজিবি কোম্পানীকে খবর দেন। খবর পেয়ে বিজিবির নিয়মিত একটি টহল দল তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে বিজিবি হেফাজতে নেয়।
–
এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে বিজিবিকে তারা জানায়, ৪ বছর পূর্বে কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী থানার বামনহাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে তারা ভারতে প্রবেশ করেন। দীর্ঘদিন ধরে ভারতের উত্তর-পশ্চিম দিল্লির রামপুরা থানার অধীনস্থ একটি ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে তারা কর্মরত ছিলেন।
–
সম্প্রতি ভারতের অভ্যন্তরে অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ধরপাকড়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এবং আত্মসমর্পণকারীদের বিরুদ্ধে কোনো হয়রানি না করার সরকারি ঘোষণায় উৎসাহিত হয়ে নিজেরাই ভারতীয় পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরাতে চান। পরে সেখান থেকে এনে গত শুক্রবার (৩০ মে) তাদেরকে ভারতের জলঙ্গি থানার নিকটবর্তী একটি বিএসএফ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। বিএসএফ কর্তৃক কাঁটাতারবিহীন চরাঞ্চলীয় সীমান্ত দিয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়।
–
এদিকে, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধিনস্থ চরচিলমারী কোম্পানি কমান্ডার ও ভারতের ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের জলঙ্গি কোম্পানি কমান্ডারের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
–
প্রচলিত আইনানুগ প্রক্রিয়ায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে হস্তান্তর না করে পুশ-ইন করার বিষয়ে বিজিবি পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হলে বিএসএফ এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে। তবে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হস্তান্তর করা হবে বলে বিএসএফর পক্ষ থেকে বিজিবিকে জানানো হয়।
–
কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, এ বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফকে কড়া প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে।
–
আটকৃতদের পরবর্তি আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য পুশ-ইনকৃত সবাইকে পরবর্তি আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য শনিবার বিকেলে দৌলতপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রিন্ট