ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo তুচ্ছ ঘটনায় মা-বাবা হারা কলেজ ছাত্রের গলায় ফাঁস Logo ইবি উপাচার্যকে ১০ লাখ টাকা ঘুষের প্রস্তাব, থানায় জিডি Logo কুষ্টিয়ায় হাসপাতাল কর্মচারীর বিরুদ্ধে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ Logo সাবেক ছাত্রদল অর্গানাইজেশন পর্তুগালের আয়োজনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ও ইফতার অনুষ্ঠিত Logo রমজানে পণ্য মূল্য সহনীয় রাখতে চরভদ্রাসনে বাজার মনিটরিং Logo বোয়ালমারীতে ১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেল শান্তা Logo গোমস্তাপুরে মেসার্স নজরুল অটো রাইস মিলের উদ্যোগে ইফতার অনুষ্ঠিত Logo নোয়াখালীতে পুকুরে মিলল ১০ কেজি ইলিশ Logo হাতিয়ায় আর্থিক স্বাক্ষরতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo রাস্তায় ঘুরে ঘুরে নিম্ন আয়ের লোকেদের ইফতার সামগ্রী দিচ্ছেন সুমন রাফি
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগঃ

এক ঠিকাদারের নামেই ক্ষুদ্র সড়ক মেরামতের সব কাজ!

ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ পিএমপি ক্ষুদ্র সড়ক মেরামত কাজে ১২ গ্রুপে প্রায় ৬ কোটি টাকার দরপত্র আহবান করা হয়েছে। যার সবগুলোই পেয়েছেন একজন ঠিকাদার। আমিনুল হক নামের ওই ঠিকাদার খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় একই প্রকল্পে প্রায় এক’শ গ্রুপে কাজের বেশির ভাগ পেয়েছেন। স্থানীয় ঠিকাদারদের অভিযোগ, শুধু খুলনা বিভাগ নয় গোটা দেশের ৬৪ টি জেলাতেই এই প্রকল্পের বেশির ভাগ কাজ আমিনুল হকের লাইসেন্সে দেওয়া হয়েছে।

ঠিকাদারদের দাবি আমিনুল হক প্রাইভেট লিমিটেড নামের এই প্রতিষ্ঠান বর্তমানে গোটা দেশে প্রায় ২ হাজার ৫ শত কোটি টাকার কাজ করছেন। সওজের কর্মকর্তারা বলছেন, সড়ক বিভাগের বেঁধে দেওয়া ম্যাট্রিক্স পদ্ধতির কারনে যোগ্যতার মাপকাটি তার পক্ষে থাকায় পিএমপি (পিরিয়ডিক মেইন্টেন্যান্স প্রোগ্রাম) সড়ক ও মহাসড়ক এর মাইনর কাজগুলোর বেশির ভাগ তিনিই পাচ্ছেন। দেশের সব এলাকাতেই তার লাইসেন্সে কাজ চলছে। যে কাজগুলো তিনি ছোট ছোট ঠিকাদার দিয়ে সম্পন্ন করাচ্ছেন।

অবশ্য আমিনুল হক দাবি করেছেন তার লাইসেন্স অনেকে ব্যবহার করে কাজ করছেন। এটা সম্পর্কের কারনে দিয়েছেন। তিনি বলেন আমই যে একা কাজগুলো পাচ্ছি তা কিন্তু নয়, অন্যরাও কিছু কিছু পাচ্ছেন। সাধারণ ঠিকাদারদের বক্তব্য যেগ্যতা যাচাইয়ের এই পদ্ধতি বাস্তবতার সঙ্গে অমিল। একজন ঠিকাদারকে দেশের ৬৪ টি জেলায় কাজ দেওয়া হচ্ছে। যা বিক্রির মাধ্যমে ছোট ছোট ঠিকাদারদের হাতে চলে যাচ্ছে। ফলে ছোট ঠিকাদাররা কাজ না পেয়ে বেকার হয়ে পড়ছেন, পাশাপাশি নতুন ঠিকাদার তৈরী হচ্ছে না।

আর যারা অধিক টাকা দিয়ে কাজ কিনে করছেন তারা কাজের মান ধরে রাখতে পারছেন না। সড়ক বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বললে তারা নাম প্রকাশ না করে জানান, অন্য সব দপ্তরগুলো উন্নয়ন কাজে দরপত্র গ্রহনের ক্ষেত্রে একাধিক পদ্ধতি গ্রহন করলেও সওজ এলটিএম পদ্ধতি গ্রহন করেন না। কাজের গুনগত মান ধরে রাখতে ঠিকাদার নির্বাচনে তারা কিছু নিয়ম মেনে চলেন। তারা ক্ষুদ্র মেরামতের ক্ষেত্রে ওটিএম (অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ঠিকাদারের অংশ গ্রহন) পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন। এই ক্ষেত্রে ঠিকাদারের পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতা, কত বেশি টাকার কাজ করেছেন এবং কত বেশি কাজ চলমান আছে এ সকল দিক বিবেচনা করে থাকেন।

আর এ সব কারনে গত তিনটি অর্থ বছর এই বিভাগ থেকে আহবানকৃত টেন্ডার একজন করে ঠিকাদারই বেশি পেয়ে যাচ্ছেন। এদিকে ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগে কাজ করেন এমন এক ঠিকাদার জানান, এ বছর ঝিনাইদহ জেলায় প্রায় ৬ কোটি টাকার ১২ গ্রুপে দরপত্র আহবান করা হয়েছে। কাজগুলো সবই পেয়েছেন নওগা’র ঠিকাদার আমিনুল হক। তিনি কাজগুলো ছোট ছোট ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দিচেছন। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা মুকুল জ্যোতি বসু জানান, এই পদ্ধতি সড়কের প্রধান কার্যালয়ের সিদ্ধান্তে বাস্তবায়িত হচ্ছে। তারা কেন্দ্রিয় নিয়ম মেনেই দরপত্র আহবান করে থাকেন।

খুলনা জোন এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ জর্জিস হোসেন জানান, সড়ক বিভাগের বর্তমান নিয়মের কারনেই একজন ঠিকাদার দেশের সব অঞ্চলের কাজগুলো পেয়ে যাচ্ছেন। তবে এটা থেকে কিভাবে বের হওয়া যায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা তা নিয়ে ভাবছেন।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

তুচ্ছ ঘটনায় মা-বাবা হারা কলেজ ছাত্রের গলায় ফাঁস

error: Content is protected !!

ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগঃ

এক ঠিকাদারের নামেই ক্ষুদ্র সড়ক মেরামতের সব কাজ!

আপডেট টাইম : ০৬:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২০

ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ পিএমপি ক্ষুদ্র সড়ক মেরামত কাজে ১২ গ্রুপে প্রায় ৬ কোটি টাকার দরপত্র আহবান করা হয়েছে। যার সবগুলোই পেয়েছেন একজন ঠিকাদার। আমিনুল হক নামের ওই ঠিকাদার খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় একই প্রকল্পে প্রায় এক’শ গ্রুপে কাজের বেশির ভাগ পেয়েছেন। স্থানীয় ঠিকাদারদের অভিযোগ, শুধু খুলনা বিভাগ নয় গোটা দেশের ৬৪ টি জেলাতেই এই প্রকল্পের বেশির ভাগ কাজ আমিনুল হকের লাইসেন্সে দেওয়া হয়েছে।

ঠিকাদারদের দাবি আমিনুল হক প্রাইভেট লিমিটেড নামের এই প্রতিষ্ঠান বর্তমানে গোটা দেশে প্রায় ২ হাজার ৫ শত কোটি টাকার কাজ করছেন। সওজের কর্মকর্তারা বলছেন, সড়ক বিভাগের বেঁধে দেওয়া ম্যাট্রিক্স পদ্ধতির কারনে যোগ্যতার মাপকাটি তার পক্ষে থাকায় পিএমপি (পিরিয়ডিক মেইন্টেন্যান্স প্রোগ্রাম) সড়ক ও মহাসড়ক এর মাইনর কাজগুলোর বেশির ভাগ তিনিই পাচ্ছেন। দেশের সব এলাকাতেই তার লাইসেন্সে কাজ চলছে। যে কাজগুলো তিনি ছোট ছোট ঠিকাদার দিয়ে সম্পন্ন করাচ্ছেন।

অবশ্য আমিনুল হক দাবি করেছেন তার লাইসেন্স অনেকে ব্যবহার করে কাজ করছেন। এটা সম্পর্কের কারনে দিয়েছেন। তিনি বলেন আমই যে একা কাজগুলো পাচ্ছি তা কিন্তু নয়, অন্যরাও কিছু কিছু পাচ্ছেন। সাধারণ ঠিকাদারদের বক্তব্য যেগ্যতা যাচাইয়ের এই পদ্ধতি বাস্তবতার সঙ্গে অমিল। একজন ঠিকাদারকে দেশের ৬৪ টি জেলায় কাজ দেওয়া হচ্ছে। যা বিক্রির মাধ্যমে ছোট ছোট ঠিকাদারদের হাতে চলে যাচ্ছে। ফলে ছোট ঠিকাদাররা কাজ না পেয়ে বেকার হয়ে পড়ছেন, পাশাপাশি নতুন ঠিকাদার তৈরী হচ্ছে না।

আর যারা অধিক টাকা দিয়ে কাজ কিনে করছেন তারা কাজের মান ধরে রাখতে পারছেন না। সড়ক বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বললে তারা নাম প্রকাশ না করে জানান, অন্য সব দপ্তরগুলো উন্নয়ন কাজে দরপত্র গ্রহনের ক্ষেত্রে একাধিক পদ্ধতি গ্রহন করলেও সওজ এলটিএম পদ্ধতি গ্রহন করেন না। কাজের গুনগত মান ধরে রাখতে ঠিকাদার নির্বাচনে তারা কিছু নিয়ম মেনে চলেন। তারা ক্ষুদ্র মেরামতের ক্ষেত্রে ওটিএম (অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ঠিকাদারের অংশ গ্রহন) পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন। এই ক্ষেত্রে ঠিকাদারের পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতা, কত বেশি টাকার কাজ করেছেন এবং কত বেশি কাজ চলমান আছে এ সকল দিক বিবেচনা করে থাকেন।

আর এ সব কারনে গত তিনটি অর্থ বছর এই বিভাগ থেকে আহবানকৃত টেন্ডার একজন করে ঠিকাদারই বেশি পেয়ে যাচ্ছেন। এদিকে ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগে কাজ করেন এমন এক ঠিকাদার জানান, এ বছর ঝিনাইদহ জেলায় প্রায় ৬ কোটি টাকার ১২ গ্রুপে দরপত্র আহবান করা হয়েছে। কাজগুলো সবই পেয়েছেন নওগা’র ঠিকাদার আমিনুল হক। তিনি কাজগুলো ছোট ছোট ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দিচেছন। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা মুকুল জ্যোতি বসু জানান, এই পদ্ধতি সড়কের প্রধান কার্যালয়ের সিদ্ধান্তে বাস্তবায়িত হচ্ছে। তারা কেন্দ্রিয় নিয়ম মেনেই দরপত্র আহবান করে থাকেন।

খুলনা জোন এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ জর্জিস হোসেন জানান, সড়ক বিভাগের বর্তমান নিয়মের কারনেই একজন ঠিকাদার দেশের সব অঞ্চলের কাজগুলো পেয়ে যাচ্ছেন। তবে এটা থেকে কিভাবে বের হওয়া যায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা তা নিয়ে ভাবছেন।