আবুল হোসেনঃ
পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের একাধিক ধারা লঙ্ঘন, কৃষি জমি দখল করে খামার স্থাপন এবং কোনো ধরনের অনুমোদন না থাকার অভিযোগে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ভিক্টর ভিলেজ হ্যাচারী লিঃ এর ফার্মকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৪ মে ২০২৫) দুপুরে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে এ জরিমানা আদায় করা হয়।
এর আগে ওই হ্যাচারীর অসংখ্য মরা মুরগী, পঁচা ডিম ও বিষ্ঠার দুর্গন্ধে মারাত্মক দূষণের শিকার কয়েকশত ভুক্তভোগী এলাকাবাসী প্রতিকার চেয়ে গত ৭ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
হ্যাচারির মালিক রুহুল আমিনের দাপটে এতদিন স্থানীয়রা মুখ খুলতে পারেনি বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।
অভিযান পরিচালনা করেন রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ আহমেদ। অভিযান পরিচালনায় সহায়তা করেন গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জামান, রাজবাড়ী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. হারুন-অর-রশিদসহ রাজবাড়ী পুলিশ লাইন ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের একটি দল।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে হ্যাচারিটি পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ও জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি তোয়াক্কা না করে উপজেলার পশ্চিম উজানচর মইজউদ্দিন মন্ডল পাড়া এলাকায় বৃহৎ পরিসরে হ্যাচারী ও খামার পরিচালনা করে আসছিল। খামারটির কারণে এলাকার শত শত বিঘা আবাদি জমি নষ্ট হয়ে গেছে। কোনো সীমানা প্রাচীর না থাকায় খামারের বর্জ্য, মরা মুরগি, ডিম ও বিষ্ঠা সহজেই শেয়াল, কুকুর, কাকে আশপাশ এলাকায় ছড়িয়ে দেয়।
অভিযোগ পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত সরেজমিনে দেখতে পায়, হ্যাচারী ফার্মটি সঠিকভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ছাড়াই কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যার ফলে আশপাশের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া নির্ধারিত অনুমোদন ছাড়াই পরিবেশ সংবেদনশীল এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনার প্রমাণও পাওয়া যায়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নাহিদ আহমেদ জানান, “ভিক্টর হ্যাচারিজ কর্তৃপক্ষকে আজকে জরিমানা করে সতর্ক করা হয়েছে। তারা অবস্থার উন্নতি না ঘটালে ভবিষ্যতে হ্যাচারিটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে। পরিবেশ সংরক্ষণে সরকারের কঠোর অবস্থানের অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
প্রিন্ট