মোঃ নূর ই আলম (কাজী নূর)
অপহরণের ১ মাস ৪ দিন পর যশোর শহরের শংকরপুর ইসহাক সড়কের ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলামের লাশ উদ্ধার করেছে কোতয়ালি থানা পুলিশ। রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিকাল ৪টার দিকে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার দক্ষিন একসরা গ্রামের একটি বাগান থেকে মাটিতে পুঁতে রাখা লাশটি উদ্ধার করা হয়। পরে কোতোয়ালি পুলিশের একটি টিম লাশ নিয়ে যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে।
.
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আসামি সবুজ ও রিপন যশোর শহরে ব্যবসায়ী রেজাউলকে হত্যা করে। পরে তার লাশ বস্তাবন্দি করে ইজিবাইকে কিছু দূর নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে ও পরবর্তীতে বাসে করে সাতক্ষীরায় নিয়ে যায়। এরপর সবুজ লাশটি তার শ্বশুরবাড়ির পাশে একটি বাগানে পুঁতে রাখে। কয়েকদিন পর বিষয়টি জানতে পারে সবুজের শ্বশুর খোকন মোল্লা। তিনি লাশটি উত্তোলন করে পাশের আরেকটি বাগানে পুনরায় পুঁতে রাখে। পুলিশের অভিযানে আজ দুপুরে ওই বাগান থেকেই রেজাউলের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সবুজের শ্বশুর খোকন মোল্লাকেও আটক করা হয়েছে।
.
অপর একটি সূত্রে জানা যায়, যশোর শহরের শংকরপুর ইসহাক সড়কের বাসিন্দা ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম নিজ এলাকাতেই কাপড় ও টেইলার্সের ব্যবসা করতেন এবং দোকানের পাশেই কামরুল ইসলামের বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। এখানে তার পাশের ঘরে বসবাস করতেন একই এলাকার মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে রিপন হাওলাদার ও সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার তালতলা বাজার এলাকার হবি গাজীর ছেলে সবুজ ওরফে রবিউল। একই বাড়িতে ভাড়া থাকার সুবাদে তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে রেজাউল পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া বাড়িসহ দুই শতক জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। এরপর সবুজ ও রিপনের সহায়তায় জমিসহ বাড়িটি ২১ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। ওই টাকা হস্তান্তরের কথা বলে গত ২২ মার্চ রাত সাড়ে ১২টার দিকে রেজাউলকে মোবাইলে ডেকে নেয় সবুজ ও রিপন। এরপর থেকে রেজাউল ইসলাম আর বাড়ি ফেরেনি। এ ঘটনায় তার পরিবার থানায় একটি সাধারন ডায়েরী (জিডি) করেন।
স্বামী নিখোঁজ হওয়ার একমাস পর কুলকিনারা না পেয়ে শনিবার কোতয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নিহত রেজাউলের স্ত্রী মমতাজ বেগম। মামলায় অভিযুক্ত করা হয় সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার তালতলা বাজার কুড়ি কাওনিয়া গ্রামের হবি গাজীর ছেলে সবুজ ওরফে রবিউল এবং যশোর শহরের শংকরপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে রিপন হাওলাদারসহ অজ্ঞাত ২/৩ জনকে। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম থেকে সবুজ ও রিপনকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা রেজাউলকে অপহরণ ও হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে এবং সেখান থেকেই বেরিয়ে আসে ঘটনার মূল রহস্য।
.
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসনাত জানান, পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারীদের সনাক্ত করে। পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনাটি নিয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ব্রিফ করবেন। তিনি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে।
প্রিন্ট