মোঃ আলম মৃধাঃ
নরসিংদীর মনোহরদীতে লেবুতলা ইউনিয়নের সুইচ গেট সড়কের পাকা রাস্তা থেকে ক্লুলেস ডাকাতির মামলার রহস্য উদঘাটন, নগদ টাকা, মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে মনোহরদী থানা পুলিশ। এ ছাড়া মনোহরদীতে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে সুমন মিয়া (৪২), নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে গত দুই মাসে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে হারানো ২৪০টি মোবাইল ফোন জিডি মূলে উদ্ধার করে মোবাইল মালিকদের কাছে হস্তান্তর করেছে নরসিংদী জেলা পুলিশ। আজ (২৭ মার্চ) বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নরসিংদী জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল হান্নান।
পৃথক তিনটি ঘটনার বিবরণ দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল হান্নান জানান, মনোহরদীর লেবুতলা ইউনিয়নের সুইচ গেইট সড়কের পাকা রাস্তা থেকে ক্লুলেস ডাকাতির মামলার মূল রহস্য উদঘাটন, নগদ টাকা, মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে মনোহরদী থানা পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলো, মের্সাস অয়ন ট্রেডিং লেসলে বাংলাদেশ পিএলসি কোম্পানি ডেলিভারি ম্যান, গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলা খিরাটি গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে কিরণ হোসেন, একই উপজেলা ঐই গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে মেহেদী মৃদুল ও অয়ন ট্রেডিং নেসলে বাংলাদেশ পিএলসি,কোম্পানির ড্রাইভার, মনোহরদী উপজেলার লাখপুর চন্দনবাড়ী গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে মোঃ পলাশ মিয়া।
তারা নিজেরাই ডাকাতির ঘটনার নাটক সাজিয়ে মনোহরদী থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করে। অভিযোগে তারা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ডাকাতি হয় বলে উল্লেখ করে। এই ঘটনায় মনোহরদী থানায় একটি ডাকাতি মামলা নেয় পুলিশ। যাহার মামলা নং- ২১/২৫ইং। ওই সময় দ্রুত তদন্তে নামে মনোহরদী থানা পুলিশ। ক্লুলেস ডাকাতি মামলার তদন্তে নেমে মনোহরদী থানা পুলিশ নগদ ২ লাখ ৩৬ হাজার ষাট টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন উপরোক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকেই উদ্ধার করে পুলিশ।
অপরদিকে পুলিশ সুপার জানান, গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকার মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী পরিবারের অগোচরে গত ৯ মার্চ বাড়ি হতে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। ওই ঘটনায় গত ১২ মার্চ শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার পরিবার লোকজন। গত ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় মনোহরদী থানার উত্তর চরমান্দালিয়া গ্রামের জনৈক আব্দুল আলীর ভুট্টা ক্ষেতে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে ধর্ষণ করে ওই গ্রামের সুমন মিয়া।
ওই সময় স্থানীয়রা ঘটনাটি টের পেয়ে থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ নির্যাতিত ওই নারীকে উদ্ধার করে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। খবর পেয়ে নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বোন এই ঘটনায় মনোহরদী থানায় অভিযুক্ত সুমন মিয়াকে আসামী করে মামলা করে। পুলিশ বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে আসামি সুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পরে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আরো বলেন, জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে গত দুই মাসে হারানো জিডি মূলে ২৪০টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে মোবাইল মালিকদের কাছে হস্তান্তর করেছে নরসিংদী জেলা পুলিশ।
এই সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ), মোঃ কলিমুল্লাহ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) সুজন চন্দ্র সরকার, সহকারী পুলিশ সুপার শিবপুর সার্কেল, মোঃ রায়হান সরকারসহ প্রশাসনের আরো অনেক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রিন্ট