ঢাকা , সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo আজ ৩০শে মার্চ লালপুরের ঐতিহাসিক ‘ময়না যুদ্ধ দিবস’ Logo ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু Logo সালথায় যুবদল নেতার উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo মাদক সেবীদের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিক পেটালেন যুবদল নেতা গেন্দা Logo সদরপুরে মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় আত্মহত্যা Logo দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদ-উল ফিতর ২০২৫ নামাজের জামাত উপলক্ষে ব্রিফিং Logo ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় কীটনাশক পান করে গৃহবধুর আত্মহত্যা Logo পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি নেতা শরীফ উদ্দিন Logo বোয়ালমারীতে ১০ গ্রামের বাসিন্দারা আজ উদযাপন করলেন ঈদুল ফিতর Logo মানবিক হাতিয়া সংগঠনের উদ্যোগে মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

তানোরে আড়াই লাখ মেট্রিক টন আলু রাখার হিমাগার নেই

আলিফ হোসেনঃ

 

রাজশাহীর তানোরে হিমাগার সংকটে চলতি মৌসুমে আলু চাষিরা উৎপাদিত আলুর সিংহভাগ সংরক্ষন করতে পারছেন না। এতে আলু চাষিরা চরম বিপাকে পড়েছেন।সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে,তানোরে চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর।কিন্তু চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন।

.

জানা গেছে, তানোরে ৭টি হিমাগার রয়েছে, একেকটি হিমাগারে ২০ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন করে আলু সংরক্ষণ করা যাবে। সেই হিসেবে ৭টি হিমাগারে প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণ করা যাচ্ছে।কিন্ত্ত তানোরে প্রায় ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে। ফলে প্রায় দু’লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণ করতে পারছে না কৃষকের।

.

স্থানীয সুত্রে জানা গেছে,হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করতে না পেরে প্রান্তিক আলু চাষিরা এক রকম বাধ্য হয়ে পানির দামে আলু বিক্রি করেছে। তবে অবস্থা সম্পন্ন আলু চাষিরা নিজ নিজ বাড়িতে দেশীয় পদ্ধতিতে বাঁশের তৈরী গোলা(ঘর) ও মাচায় আলু সংরক্ষণ করছেন।

.

এদিকে বিভিন্ন রাস্তার পাশে, জমিতে, পড়ার টেবিলে, বিছানায়, খাটের নিচে, মেঝেতে, ঘরের আঁড়ায়, মাচায়, উঠানে–সবখানে আলু।তানোরে আলু হিমাগারে স্থানের অভাবে সংরক্ষণ করতে না পারায় এমন চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয় আলু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের অন্যতম বৃহৎ আলু উৎপাদনকারি উপজেলা তানোর। এ বছরও উপজেলায় আলু উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে হিমাগারে স্থানের অভাবে সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন আলু।

.

এসব আলু বিকল্প পদ্ধতিতে বাঁশের মাচার মধ্যে সংরক্ষণ করতে হচ্ছে কৃষককে। উত্তোলন শেষে কিছু আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা সম্ভব হলেও বাকি আলু বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখতে হচ্ছে।

.

উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের (ইউপি) নারায়নপুর, কামারগাঁ ইউপির ছাঐড়, মাদারিপুরসহ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে।কিন্ত্ত ভরা মৌসুমে বাজারে আলু বিক্রি করতে গেলে কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না। কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) ছাঐড় গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলী জানান, তাঁর ৪ বিঘা জমিতে উৎপাদিত আলু সংরক্ষণ করতে পারেন নি।

.

উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির কৃষ্ণপুর গ্রামের আলুচাষি রফিকুল ইসলাম জানান, ফেব্রুয়ারির শেষদিক থেকে আলু তোলা শুরু হয়েছে। প্রথম দিকে জমিতে আলুর কেজি ছিল ১২ থেকে ১৩ টাকা। এখন তা ৯ টাকাতে নেমে এসেছে। তার বিঘাপ্রতি জমিতে গড় ফলন হয়েছে ৫৫ বস্তা। সে হিসেবে এক বিঘায় আলুর ফলন প্রায় ৬৯ মণ। জমিতে আলু বিক্রি হচ্ছে ৯ টাকা কেজি দরে। এক বিঘা জমির আলু বিক্রি করলে পাওয়া যাবে ২৪ হাজার ৮৪০ টাকা। অথচ কৃষ্ণপুর এলাকায় তার প্রতিবিঘা জমি ইজারা নেওয়া আছে ২৭ হাজার টাকায়।

.

রফিকুল ইসলাম জানান, আলুচাষের জমি ইজারা নিতে হয় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা বিঘায়। এছাড়া প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয় আরও ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। এখন আলু বিক্রি করলে এই টাকার পুরোটিই লোকসানের খাতায় যোগ হবে। এ অবস্থায় কৃষকেরা হিমাগারে আলু সংরক্ষণের চেষ্টা করছেন, কিন্তু সেখানেও জায়গা হচ্ছে না। অনেক কৃষক আগাম বুকিং দেওয়ার পরও হিমাগারে তাদের আলু নেওয়া হচ্ছে না।

.

এদিকে পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) চিমনা গ্রামের এক আলুচাষি জানান, তার ৪০ একর জমি থেকে প্রায় ৭ হাজার বস্তা আলু উৎপাদন হয়েছে। তানোরের আড়াদীঘি এলাকায় অবস্থিত রহমান কোল্ড স্টোরেজের ইউনিট-২ এ আলু রাখার জন্য আগাম বুকিং দেওয়া ছিল। এখন অর্ধেক আলু নেওয়ার পর হিমাগারটি আর আলু নিচ্ছে না। পাঁচদিন আগে আলু তোলার পর এখন জমিতেই বস্তা করে ফেলে রাখা হয়েছে। ওই কৃষকের অভিযোগ, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে একটি সিন্ডিকেট বুকিং ছাড়াই জোর করে আলু হিমাগারে দিচ্ছে। আলু রাখার সুযোগ করে দেওয়ার বিপরীতে সিন্ডিকেটটি কৃষকের কাছ থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। নিজের আলু রাখা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় ওই কৃষক নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।

.

তানোর পৌরসভার ঠাকুর পুকুর মহল্লার আলু চাষি আলহাজ্ব সালাউদ্দিন সরদার বলেন,কালীগঞ্জ হাট তামান্না কোল্ড স্টোরেজে তিনি আগাম ৫ হাজার বস্তা বুকিং দিয়েছিলেন।কিন্ত্ত এক হাজার বস্তা আলু নেয়ার পর বাকি ৪ হাজার বস্তা আলু কোল্ড স্টোর নিচ্ছেন না।একাধিক কৃষক জানিয়েছেন, তাদের উৎপাদিত হাজার হাজার টন আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করার জায়গা পাচ্ছেন না। তাই জমিতে স্তূপাকারে আলু ফেলে রেখেছেন। কেউ আলু ঘরের উঠানে মাচায় সংরক্ষণ করছেন। এরপরও অনেক আলু ঘরে-বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখতে হচ্ছে।

.

এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, এ উপজেলায় ৭টি হিমাগারে যে পরিমাণ আলু সংরক্ষণের ধারণক্ষমতা রয়েছে তার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি আলু উৎপাদন হয়েছে। এ কারণে তারা সবসময় কৃষককে বলে থাকেন তারা যেনো দেশীয় পদ্ধতিতে আলুগুলো মজুত করে রাখেন। এতে তারা বেশি দামেও আলু বিক্রি করতে পারবেন এবং তাদের বাড়তি খরচও হবে না। তিনি আরো বলেন, উপজেলায় চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর। কিন্তু চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আজ ৩০শে মার্চ লালপুরের ঐতিহাসিক ‘ময়না যুদ্ধ দিবস’

error: Content is protected !!

তানোরে আড়াই লাখ মেট্রিক টন আলু রাখার হিমাগার নেই

আপডেট টাইম : ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

আলিফ হোসেনঃ

 

রাজশাহীর তানোরে হিমাগার সংকটে চলতি মৌসুমে আলু চাষিরা উৎপাদিত আলুর সিংহভাগ সংরক্ষন করতে পারছেন না। এতে আলু চাষিরা চরম বিপাকে পড়েছেন।সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে,তানোরে চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর।কিন্তু চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন।

.

জানা গেছে, তানোরে ৭টি হিমাগার রয়েছে, একেকটি হিমাগারে ২০ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন করে আলু সংরক্ষণ করা যাবে। সেই হিসেবে ৭টি হিমাগারে প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণ করা যাচ্ছে।কিন্ত্ত তানোরে প্রায় ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে। ফলে প্রায় দু’লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণ করতে পারছে না কৃষকের।

.

স্থানীয সুত্রে জানা গেছে,হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করতে না পেরে প্রান্তিক আলু চাষিরা এক রকম বাধ্য হয়ে পানির দামে আলু বিক্রি করেছে। তবে অবস্থা সম্পন্ন আলু চাষিরা নিজ নিজ বাড়িতে দেশীয় পদ্ধতিতে বাঁশের তৈরী গোলা(ঘর) ও মাচায় আলু সংরক্ষণ করছেন।

.

এদিকে বিভিন্ন রাস্তার পাশে, জমিতে, পড়ার টেবিলে, বিছানায়, খাটের নিচে, মেঝেতে, ঘরের আঁড়ায়, মাচায়, উঠানে–সবখানে আলু।তানোরে আলু হিমাগারে স্থানের অভাবে সংরক্ষণ করতে না পারায় এমন চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয় আলু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের অন্যতম বৃহৎ আলু উৎপাদনকারি উপজেলা তানোর। এ বছরও উপজেলায় আলু উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে হিমাগারে স্থানের অভাবে সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন আলু।

.

এসব আলু বিকল্প পদ্ধতিতে বাঁশের মাচার মধ্যে সংরক্ষণ করতে হচ্ছে কৃষককে। উত্তোলন শেষে কিছু আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা সম্ভব হলেও বাকি আলু বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখতে হচ্ছে।

.

উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের (ইউপি) নারায়নপুর, কামারগাঁ ইউপির ছাঐড়, মাদারিপুরসহ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে।কিন্ত্ত ভরা মৌসুমে বাজারে আলু বিক্রি করতে গেলে কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না। কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) ছাঐড় গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলী জানান, তাঁর ৪ বিঘা জমিতে উৎপাদিত আলু সংরক্ষণ করতে পারেন নি।

.

উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির কৃষ্ণপুর গ্রামের আলুচাষি রফিকুল ইসলাম জানান, ফেব্রুয়ারির শেষদিক থেকে আলু তোলা শুরু হয়েছে। প্রথম দিকে জমিতে আলুর কেজি ছিল ১২ থেকে ১৩ টাকা। এখন তা ৯ টাকাতে নেমে এসেছে। তার বিঘাপ্রতি জমিতে গড় ফলন হয়েছে ৫৫ বস্তা। সে হিসেবে এক বিঘায় আলুর ফলন প্রায় ৬৯ মণ। জমিতে আলু বিক্রি হচ্ছে ৯ টাকা কেজি দরে। এক বিঘা জমির আলু বিক্রি করলে পাওয়া যাবে ২৪ হাজার ৮৪০ টাকা। অথচ কৃষ্ণপুর এলাকায় তার প্রতিবিঘা জমি ইজারা নেওয়া আছে ২৭ হাজার টাকায়।

.

রফিকুল ইসলাম জানান, আলুচাষের জমি ইজারা নিতে হয় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা বিঘায়। এছাড়া প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয় আরও ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। এখন আলু বিক্রি করলে এই টাকার পুরোটিই লোকসানের খাতায় যোগ হবে। এ অবস্থায় কৃষকেরা হিমাগারে আলু সংরক্ষণের চেষ্টা করছেন, কিন্তু সেখানেও জায়গা হচ্ছে না। অনেক কৃষক আগাম বুকিং দেওয়ার পরও হিমাগারে তাদের আলু নেওয়া হচ্ছে না।

.

এদিকে পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) চিমনা গ্রামের এক আলুচাষি জানান, তার ৪০ একর জমি থেকে প্রায় ৭ হাজার বস্তা আলু উৎপাদন হয়েছে। তানোরের আড়াদীঘি এলাকায় অবস্থিত রহমান কোল্ড স্টোরেজের ইউনিট-২ এ আলু রাখার জন্য আগাম বুকিং দেওয়া ছিল। এখন অর্ধেক আলু নেওয়ার পর হিমাগারটি আর আলু নিচ্ছে না। পাঁচদিন আগে আলু তোলার পর এখন জমিতেই বস্তা করে ফেলে রাখা হয়েছে। ওই কৃষকের অভিযোগ, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে একটি সিন্ডিকেট বুকিং ছাড়াই জোর করে আলু হিমাগারে দিচ্ছে। আলু রাখার সুযোগ করে দেওয়ার বিপরীতে সিন্ডিকেটটি কৃষকের কাছ থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। নিজের আলু রাখা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় ওই কৃষক নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।

.

তানোর পৌরসভার ঠাকুর পুকুর মহল্লার আলু চাষি আলহাজ্ব সালাউদ্দিন সরদার বলেন,কালীগঞ্জ হাট তামান্না কোল্ড স্টোরেজে তিনি আগাম ৫ হাজার বস্তা বুকিং দিয়েছিলেন।কিন্ত্ত এক হাজার বস্তা আলু নেয়ার পর বাকি ৪ হাজার বস্তা আলু কোল্ড স্টোর নিচ্ছেন না।একাধিক কৃষক জানিয়েছেন, তাদের উৎপাদিত হাজার হাজার টন আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করার জায়গা পাচ্ছেন না। তাই জমিতে স্তূপাকারে আলু ফেলে রেখেছেন। কেউ আলু ঘরের উঠানে মাচায় সংরক্ষণ করছেন। এরপরও অনেক আলু ঘরে-বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখতে হচ্ছে।

.

এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, এ উপজেলায় ৭টি হিমাগারে যে পরিমাণ আলু সংরক্ষণের ধারণক্ষমতা রয়েছে তার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি আলু উৎপাদন হয়েছে। এ কারণে তারা সবসময় কৃষককে বলে থাকেন তারা যেনো দেশীয় পদ্ধতিতে আলুগুলো মজুত করে রাখেন। এতে তারা বেশি দামেও আলু বিক্রি করতে পারবেন এবং তাদের বাড়তি খরচও হবে না। তিনি আরো বলেন, উপজেলায় চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর। কিন্তু চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন।


প্রিন্ট