ঢাকা , সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo আজ ৩০শে মার্চ লালপুরের ঐতিহাসিক ‘ময়না যুদ্ধ দিবস’ Logo ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু Logo সালথায় যুবদল নেতার উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo মাদক সেবীদের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিক পেটালেন যুবদল নেতা গেন্দা Logo সদরপুরে মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় আত্মহত্যা Logo দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদ-উল ফিতর ২০২৫ নামাজের জামাত উপলক্ষে ব্রিফিং Logo ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় কীটনাশক পান করে গৃহবধুর আত্মহত্যা Logo পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি নেতা শরীফ উদ্দিন Logo বোয়ালমারীতে ১০ গ্রামের বাসিন্দারা আজ উদযাপন করলেন ঈদুল ফিতর Logo মানবিক হাতিয়া সংগঠনের উদ্যোগে মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

দৌলতপুর স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য অর্থ কালেকশন

মোঃ জিয়াউর রহমানঃ

 

কুষ্টিয়ায় যথাযত মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হলেও ব্যতিক্রম ঘটেছে দৌলতপুর উপজেলায়। এখানে উপজেলা প্রশাসন দায়সারা ভাবে দিবসটি উদযাপন করেছে। এখানে ছিল না স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজ, শরীরচর্চা প্রদর্শন ও সালাম গ্রহণ। ছিল না খেলা-ধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

 

স্মৃতিসৌধেও কোন সংগঠনকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে দেখা যায়নি। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি সিংহভাগ বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান, সুধীজন ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটিও ছিল দায়সারা ও অগুছালো। উপস্থিতি ছিল মাত্র ৫০ থেকে ৬০ জনের মত। অথচ দৌলতপুরে প্রায় ১২ শত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার রয়েছেন।

 

এদিকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসকে ঘিরে উপজেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ কালেকশন বা চাঁদাবাজি করেছে। চাঁদাবাজির হাত থেকে বাদ পড়েনি নিষিদ্ধ ইটভাঁটির মালিকরা, অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, শিল্প কলকারখানা, বিড়ি কারাখানা, তামাক ক্রয় কেন্দ্র, স-মিল, লেদ কারখানা, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সার ও বীজের ডিলার, এমনকি বাদ পড়েনি ব্রেড ফ্যাক্টরী ও মুদি দোকানও। দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসের বদলি হওয়া অফিস সহকারী শিশির কুমার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে বিগত সময়ের ন্যায় এ বছরও অর্থ কালেকশন বা চাঁদাবাজির অর্থ সংগ্রহ করেছেন।

 

দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে নিষিদ্ধ ইটভাঁটি মালিক, বিভিন্ন সংগঠন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কল কারখানার মালিক মহান বিজয় দিবসের ন্যায় এবারের স্বাধীনতা দিবসেও প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা অর্থ সহায়তা দিলেও দিবসটি পালনে ছিল দায়সারা ও অবহেলিত। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হলেও সে খাবার ভ্যান ভর্তি হয়ে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় সরবরাহ হতে দেখা গেছে। আবার খাবার না পেয়ে ফিরেও গেছেন অনেকে।

 

উপজেলা বাজারে অবস্থান করা বীর মুক্তিযোদ্ধা কাওছার আলী বিশ্বাস ও আসমত আলী মাষ্টারের সাথে কথা হলে তারা জানান, বর্তমান ইউএনও স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস বা শহীদ দিবস কোন জাতীয় দিবসে আমাদের দাওয়াতপত্র দেন না বা আমন্ত্রণও জানান না। যা স্বাধীনতার ৫৫ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটেনি। এটা একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেদের কাছে লজ্জার ও অপমানের।

 

একই কথা জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, দৌলতপুরে এই ইউএনও যোগ দেওয়ার পর জাতীয় কোন অনুষ্ঠানে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয় না।

 

দৌলতপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রবীন সাংবাদিক এম মামুন রেজা ও সিনিয়র সাংবাদিক এম এ রাজ্জাক জানান, এবারের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে আমাদের বা দৌলতপুর প্রেসক্লাবকে আমন্ত্রণ পত্র দেওয়া হয়নি বা ফোন করেও জানানো হয়নি। অথচ উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন দৌলতপুর প্রেসক্লাব কার্যালয়। বর্তমান ইউএনও কাদের নিয়ে এবারের স্বাধীনতা দিবসের জাতীয় অনুষ্ঠান করলেন আমাদের জানা নেই।

 

দায়সারা ভাবে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, জনে জনে দাওয়াত দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না। দিবসকে ঘিরে সর্বোচ্চ অর্থ কালেকশনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অফিসে আসেন, বলে ফোন কেটে দেন। এমন দায়সারা ভাবে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালনে ক্ষোভ প্রকাশ করে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আজ ৩০শে মার্চ লালপুরের ঐতিহাসিক ‘ময়না যুদ্ধ দিবস’

error: Content is protected !!

দৌলতপুর স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য অর্থ কালেকশন

আপডেট টাইম : ১০:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫
মোঃ জিয়াউর রহমান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি :

মোঃ জিয়াউর রহমানঃ

 

কুষ্টিয়ায় যথাযত মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হলেও ব্যতিক্রম ঘটেছে দৌলতপুর উপজেলায়। এখানে উপজেলা প্রশাসন দায়সারা ভাবে দিবসটি উদযাপন করেছে। এখানে ছিল না স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজ, শরীরচর্চা প্রদর্শন ও সালাম গ্রহণ। ছিল না খেলা-ধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

 

স্মৃতিসৌধেও কোন সংগঠনকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে দেখা যায়নি। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি সিংহভাগ বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান, সুধীজন ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটিও ছিল দায়সারা ও অগুছালো। উপস্থিতি ছিল মাত্র ৫০ থেকে ৬০ জনের মত। অথচ দৌলতপুরে প্রায় ১২ শত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার রয়েছেন।

 

এদিকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসকে ঘিরে উপজেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ কালেকশন বা চাঁদাবাজি করেছে। চাঁদাবাজির হাত থেকে বাদ পড়েনি নিষিদ্ধ ইটভাঁটির মালিকরা, অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, শিল্প কলকারখানা, বিড়ি কারাখানা, তামাক ক্রয় কেন্দ্র, স-মিল, লেদ কারখানা, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সার ও বীজের ডিলার, এমনকি বাদ পড়েনি ব্রেড ফ্যাক্টরী ও মুদি দোকানও। দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসের বদলি হওয়া অফিস সহকারী শিশির কুমার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে বিগত সময়ের ন্যায় এ বছরও অর্থ কালেকশন বা চাঁদাবাজির অর্থ সংগ্রহ করেছেন।

 

দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে নিষিদ্ধ ইটভাঁটি মালিক, বিভিন্ন সংগঠন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কল কারখানার মালিক মহান বিজয় দিবসের ন্যায় এবারের স্বাধীনতা দিবসেও প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা অর্থ সহায়তা দিলেও দিবসটি পালনে ছিল দায়সারা ও অবহেলিত। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হলেও সে খাবার ভ্যান ভর্তি হয়ে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় সরবরাহ হতে দেখা গেছে। আবার খাবার না পেয়ে ফিরেও গেছেন অনেকে।

 

উপজেলা বাজারে অবস্থান করা বীর মুক্তিযোদ্ধা কাওছার আলী বিশ্বাস ও আসমত আলী মাষ্টারের সাথে কথা হলে তারা জানান, বর্তমান ইউএনও স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস বা শহীদ দিবস কোন জাতীয় দিবসে আমাদের দাওয়াতপত্র দেন না বা আমন্ত্রণও জানান না। যা স্বাধীনতার ৫৫ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটেনি। এটা একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেদের কাছে লজ্জার ও অপমানের।

 

একই কথা জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, দৌলতপুরে এই ইউএনও যোগ দেওয়ার পর জাতীয় কোন অনুষ্ঠানে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয় না।

 

দৌলতপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রবীন সাংবাদিক এম মামুন রেজা ও সিনিয়র সাংবাদিক এম এ রাজ্জাক জানান, এবারের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে আমাদের বা দৌলতপুর প্রেসক্লাবকে আমন্ত্রণ পত্র দেওয়া হয়নি বা ফোন করেও জানানো হয়নি। অথচ উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন দৌলতপুর প্রেসক্লাব কার্যালয়। বর্তমান ইউএনও কাদের নিয়ে এবারের স্বাধীনতা দিবসের জাতীয় অনুষ্ঠান করলেন আমাদের জানা নেই।

 

দায়সারা ভাবে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, জনে জনে দাওয়াত দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না। দিবসকে ঘিরে সর্বোচ্চ অর্থ কালেকশনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অফিসে আসেন, বলে ফোন কেটে দেন। এমন দায়সারা ভাবে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালনে ক্ষোভ প্রকাশ করে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ।


প্রিন্ট