ঢাকা , রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির অভিযোগে দুই ওসির ক্লোজড

মোঃ আলম মৃধাঃ

 

নরসিংদীতে পুলিশের হাতে উদ্ধার হওয়া ৯৬ কেজি গাঁজা প্রায় ১৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে নরসিংদী গোয়েন্দা শাখা ডিবির ওসি মোঃ কামরুজ্জামান ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানির পর প্রাশাসনিক কারণ দেখিয়ে ডিবির ওসি মোঃ কামরুজ্জামান ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ঢাকার রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

 

গত (১৫ মার্চ) শনিবার পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআই জি এ কে এম আওলাদ হোসেনের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপণে নরসিংদীর দুই পুলিশ পরিদর্শককে ঢাকা রেঞ্জ অফিসে সংযুক্তি বিজ্ঞপ্তিটি জারি করেন।

 

জানা যায়, গত চার ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিঘর এলাকায় মনির হোসেনের লটকন বাগান থেকে ৯৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন তৎকালীন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফার। তিনি গাঁজা উদ্ধার করে নরসিংদী ডিবি অফিসে নিয়ে আসেন এবং ওসি কামরুজ্জামানকে বিষয়টি জানান। তবে বর্তমানে ২৫ হাজার টাকা কেজি দরে ৯৬ কেজি গাঁজার মূল্য ২৪ লক্ষ টাকা। আইন অসুসারে জব্দকৃত মালামাল জিডি মূলে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। ওই সময় আদালতের বিচারক জব্দকৃত ৯৬ কেজি গাঁজা পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ প্রদান করেন।

 

কিন্তু নরসিংদী ডিবির ওসি মোঃ কামরুজ্জামান নরসিংদী কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে ম্যানেজ করে ৯৬ কেজি গাঁজা মাধবদী আলগী এলাকায় এক মাদক ব্যবসায়ী মায়া প্রধানের কাছে বিক্রি করে দেয়। প্রতি কেজি গাঁজার বাজার মূল্য ২৫ হাজার টাকা হলেও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মায়ার কাছে ১৫ হাজার টাকা কেজি দরে ১৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে ওসি কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। পরে সেই টাকা ডিবির ওসি ও কোর্টের ওসি ভাগ-বণ্টন করে নিয়ে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে নরসিংদী পুলিশ সুপারের নিকট মৌখিক অভিযোগ করেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য। তবে আদালতের নথিতে দেখা যায় উদ্ধার হওয়া ৯৬ কেজি গাঁজা ধ্বংস করা হয়েছে?

 

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, আমাদের অফিসার অলামত জব্দ করেছে এবং তা জব্দ তালিকা করে কোর্টে পাঠিয়েছে। কোর্ট রিসিভও করেছে। এই অর্ডারও আমার অফিসে আছে। এখন কোর্ট ধ্বংস করেছে বা করে নাই সেটা তো কোর্টের ব্যাপার। এখানে আমার কি লাইভেলিটি আছে? এখানে আমারতো কোন জবাব নেই। তাছাড়া এই আলামত ধ্বংস করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের।

 

৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, এটা ভিত্তিহীন একটি অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। কি ষড়যন্ত্রের শিকার তা যাচাই করে দেখেন। তিনি আরো বলেন, আমি বিক্রি করলে কোর্ট কি ধ্বংস করলো?

 

নরসিংদী পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল হান্নান বলেন, ওসি ডিবি’র বিরুদ্ধে উদ্ধার হওয়া মাদক ধ্বংস না করে বিক্রির একটি মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে অফিসিয়ালি তদন্ত চলছে। তাই কোন মন্তব্য করতে চাই না। প্রথমে সত্য মিথ্যে যাচাই হোক। তদন্ত শেষে এর বিস্তারিত বলা যাবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির অভিযোগে দুই ওসির ক্লোজড

আপডেট টাইম : ২ ঘন্টা আগে
মোঃ আলম মৃধা, নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি :

মোঃ আলম মৃধাঃ

 

নরসিংদীতে পুলিশের হাতে উদ্ধার হওয়া ৯৬ কেজি গাঁজা প্রায় ১৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে নরসিংদী গোয়েন্দা শাখা ডিবির ওসি মোঃ কামরুজ্জামান ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানির পর প্রাশাসনিক কারণ দেখিয়ে ডিবির ওসি মোঃ কামরুজ্জামান ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ঢাকার রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

 

গত (১৫ মার্চ) শনিবার পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআই জি এ কে এম আওলাদ হোসেনের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপণে নরসিংদীর দুই পুলিশ পরিদর্শককে ঢাকা রেঞ্জ অফিসে সংযুক্তি বিজ্ঞপ্তিটি জারি করেন।

 

জানা যায়, গত চার ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিঘর এলাকায় মনির হোসেনের লটকন বাগান থেকে ৯৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন তৎকালীন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফার। তিনি গাঁজা উদ্ধার করে নরসিংদী ডিবি অফিসে নিয়ে আসেন এবং ওসি কামরুজ্জামানকে বিষয়টি জানান। তবে বর্তমানে ২৫ হাজার টাকা কেজি দরে ৯৬ কেজি গাঁজার মূল্য ২৪ লক্ষ টাকা। আইন অসুসারে জব্দকৃত মালামাল জিডি মূলে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। ওই সময় আদালতের বিচারক জব্দকৃত ৯৬ কেজি গাঁজা পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ প্রদান করেন।

 

কিন্তু নরসিংদী ডিবির ওসি মোঃ কামরুজ্জামান নরসিংদী কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে ম্যানেজ করে ৯৬ কেজি গাঁজা মাধবদী আলগী এলাকায় এক মাদক ব্যবসায়ী মায়া প্রধানের কাছে বিক্রি করে দেয়। প্রতি কেজি গাঁজার বাজার মূল্য ২৫ হাজার টাকা হলেও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মায়ার কাছে ১৫ হাজার টাকা কেজি দরে ১৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে ওসি কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। পরে সেই টাকা ডিবির ওসি ও কোর্টের ওসি ভাগ-বণ্টন করে নিয়ে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে নরসিংদী পুলিশ সুপারের নিকট মৌখিক অভিযোগ করেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য। তবে আদালতের নথিতে দেখা যায় উদ্ধার হওয়া ৯৬ কেজি গাঁজা ধ্বংস করা হয়েছে?

 

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, আমাদের অফিসার অলামত জব্দ করেছে এবং তা জব্দ তালিকা করে কোর্টে পাঠিয়েছে। কোর্ট রিসিভও করেছে। এই অর্ডারও আমার অফিসে আছে। এখন কোর্ট ধ্বংস করেছে বা করে নাই সেটা তো কোর্টের ব্যাপার। এখানে আমার কি লাইভেলিটি আছে? এখানে আমারতো কোন জবাব নেই। তাছাড়া এই আলামত ধ্বংস করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের।

 

৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, এটা ভিত্তিহীন একটি অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। কি ষড়যন্ত্রের শিকার তা যাচাই করে দেখেন। তিনি আরো বলেন, আমি বিক্রি করলে কোর্ট কি ধ্বংস করলো?

 

নরসিংদী পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল হান্নান বলেন, ওসি ডিবি’র বিরুদ্ধে উদ্ধার হওয়া মাদক ধ্বংস না করে বিক্রির একটি মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে অফিসিয়ালি তদন্ত চলছে। তাই কোন মন্তব্য করতে চাই না। প্রথমে সত্য মিথ্যে যাচাই হোক। তদন্ত শেষে এর বিস্তারিত বলা যাবে।


প্রিন্ট